ঝিনাইদহে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সংখ্যালঘুর জমি দখল
ঝিনাইদহের মহেশপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে এক সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হলেও কোন কিছুর তোয়াক্কা করছে না ওই প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা।
জানা যায়, মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সংখ্যালঘু ভরত দাস ও তার ভাই সম্ভু দাস পৈতৃক সুত্রে পাওয়া গ্রামের হামিদপুর মৌজার ২৮৬১ খতিয়ানের ৪০৩৯ ও ৪০৪০ দাগের মোট ২০৭ শতক জমির আরএস রেকর্ডীয় মালিক। তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালিয়ে আসছিলো।
কিন্তু গত ৫ সেপ্টেস্বর ওই গ্রামের বিএনপি নেতা শামসুল গাজী ও তার ছেলে ইলিয়াস গাজী এবং যুবদল নেতা তবিবর রহমান লোকজন দিয়ে ওই জমি দখল করে নেয়। জমি থাকা ফসল, গাছপালা কেটে তছরূপ করে। এতে বাঁধা দিলে উল্টো পিটিয়ে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় তারা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ভরত দাস আদালতে মামলা দায়ের করলে ওই জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করে আদালত। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ১৫ অক্টোববর গোপালপুর গ্রামের শাকিল, আলমগীর, ইকরামুল, রঞ্জু, বিপুল, খালিদ এবং তুহিনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন প্রকাশ্যেই জমির মোটর ঘর ভেঙ্গে দেয়। এসময় জমির চারদিক ঘেরা বাঁশের বেড়া লুট করে নিয়ে যায় তারা। পরে জমিতে বপন করা সরিষাও চষে দেয় প্রভাবশালীরা।
সোমবার ভুক্তভোগী ভরত দাস সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, গেল দুই মাস ধরে একটি চক্র তার জমি দখল করে খেলার মাঠ বানানোর পায়তারা করছে। আমি মামলা করলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর মহেশপুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে বালিরগর্ত বাজারে চক্রটি দা, রড ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। বাজারের লোকজন ছুটে এসে আমাদের রক্ষা করে। এ ঘটনায় আমার প্রতিবেশী রিপন বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, আমি আমার পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত হচ্ছি। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে এর আগে জমি দখল ও ফসল নষ্টের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে অভিযোগ গঠন করেছে। ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন কমিশনের চেয়ারম্যান। একই সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও আদেশ দেয়া হয়। এরপরও জমি দখল, অত্যাচার, নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছে না ওই সংখ্যালঘু পরিবারটি।
এ ব্যাপারে মহেশপুর থানার এস আই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও যদি কেউ জমিতে যায় স্বেক্ষেত্রে আইনগত যা ব্যবস্থা হয় সেটা নেওয়া হবে।