ঢাকা ০১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে আ.লীগের সাবেক মেয়রসহ ১০ জনের নামে মামলা

 

ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগ নেতা ও মহেশপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুর রশিদ খানসহ ১০ জনের নামে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা মামলা হয়েছে। মহেশপুর পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজীবউদ্দৌলা নাসের বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

বুধবার (৪ জুন) ঝিনাইদহ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আসামীরা হলেন- মহেশপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ খান, যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, যশোর পাউবো’র শাখা কর্মকর্তা আসাফ-উদ-দৌলা, সাবেক মেয়র আব্দুর রশিদ খানের ভাই মনিরুল ইসলাম ও ওরফে মিন্টু খান, পিন্টু খান, মহেশপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুস সালাম, সাবেক কাউন্সিলর রুহুল আমিন মিন্টু, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান, ফতেপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ হোসেন এবং ঠিকাদার বাদল মিয়া (যশোর)।

মামলার এজাহারে সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২২ জুলাই থেকে মহেশপুর উপজেলার নিমতলা ফতেপুর মৌজার কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা। মহেশপুর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র আব্দুর রশিদ খান ও তার ভাই মনিরুল ইসলাম খান ওরফে মিন্টু খানের নেতৃত্বে অবৈধ বালু উত্তোলন শুরু হয়।

বালু উত্তোলনের ফলে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে ব্যাপক ধ্বসের সৃষ্টি হয়। এতে বিএনপি নেতা নজীবউদ্দৌলা নাসেরের মালিকানাধীন ও লিজ নেয়া প্রায় ৩ বিঘা আবাদি জমি কপোতাক্ষ নদে বিলীন হয়ে যায়। এতে মাল্টা, পেয়ারা সহ নানা প্রজাতির ফল-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ নিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার আবেদন করেন নজীবউদ্দৌলা নাসের।

বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ও মহেশপুর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র আব্দুর রশিদ খান ও অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জোরপূর্বক বালু উত্তোলন শুরু করে। নদী খননের নামে বিএনপি নেতা নজীবউদ্দৌলা নাসেরের মিশ্র ফল বাগানসহ অন্তত ১৫০টি মেহগনি গাছ কেটে দেয় আসামীরা।

ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত নজীবউদ্দৌলা নাসের তৎকালীন জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ভুমি মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাননি।

পরে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের আছে আবারও অভিযোগ করেন নজীবউদ্দৌলা নাসের। পরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশনায় গত বছরের ৭ নভেম্বর মহেশপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরেও দীর্ঘ ৬ মাসে আইনি প্রতিকার না পেয়ে ৪ জুন বুধবার বিএনপি নেতা নজীবউদ্দৌলা নাসের ঝিনাইদহের দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে ১০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর জেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

ঝিনাইদহে আ.লীগের সাবেক মেয়রসহ ১০ জনের নামে মামলা

Update Time : ১০:০১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

 

ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগ নেতা ও মহেশপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুর রশিদ খানসহ ১০ জনের নামে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা মামলা হয়েছে। মহেশপুর পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজীবউদ্দৌলা নাসের বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

বুধবার (৪ জুন) ঝিনাইদহ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আসামীরা হলেন- মহেশপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ খান, যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, যশোর পাউবো’র শাখা কর্মকর্তা আসাফ-উদ-দৌলা, সাবেক মেয়র আব্দুর রশিদ খানের ভাই মনিরুল ইসলাম ও ওরফে মিন্টু খান, পিন্টু খান, মহেশপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুস সালাম, সাবেক কাউন্সিলর রুহুল আমিন মিন্টু, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান, ফতেপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ হোসেন এবং ঠিকাদার বাদল মিয়া (যশোর)।

মামলার এজাহারে সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২২ জুলাই থেকে মহেশপুর উপজেলার নিমতলা ফতেপুর মৌজার কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা। মহেশপুর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র আব্দুর রশিদ খান ও তার ভাই মনিরুল ইসলাম খান ওরফে মিন্টু খানের নেতৃত্বে অবৈধ বালু উত্তোলন শুরু হয়।

বালু উত্তোলনের ফলে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে ব্যাপক ধ্বসের সৃষ্টি হয়। এতে বিএনপি নেতা নজীবউদ্দৌলা নাসেরের মালিকানাধীন ও লিজ নেয়া প্রায় ৩ বিঘা আবাদি জমি কপোতাক্ষ নদে বিলীন হয়ে যায়। এতে মাল্টা, পেয়ারা সহ নানা প্রজাতির ফল-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ নিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার আবেদন করেন নজীবউদ্দৌলা নাসের।

বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ও মহেশপুর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র আব্দুর রশিদ খান ও অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জোরপূর্বক বালু উত্তোলন শুরু করে। নদী খননের নামে বিএনপি নেতা নজীবউদ্দৌলা নাসেরের মিশ্র ফল বাগানসহ অন্তত ১৫০টি মেহগনি গাছ কেটে দেয় আসামীরা।

ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত নজীবউদ্দৌলা নাসের তৎকালীন জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ভুমি মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাননি।

পরে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের আছে আবারও অভিযোগ করেন নজীবউদ্দৌলা নাসের। পরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশনায় গত বছরের ৭ নভেম্বর মহেশপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরেও দীর্ঘ ৬ মাসে আইনি প্রতিকার না পেয়ে ৪ জুন বুধবার বিএনপি নেতা নজীবউদ্দৌলা নাসের ঝিনাইদহের দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে ১০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর জেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সবুজদেশ/এসএএস