ঝিনাইদহে খাটিয়া দিল না গ্রামবাসী, মাটিতে রেখেই জানাযা
শাহরিয়ার আলম সোহাগঃ
করোনা আক্রান্তের প্রায় সকল উপসর্গই ছিল ইসরাইল হোসেনের। শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে রোববার সকালে পরিবারের স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে।
জানা গেছে, মৃতদেহের দাফন ও কাফনের ব্যবস্থা করেন কালীগঞ্জ উপজেলার ৬ আলেম। হাসপাতাল থেকেই মরদেহের গোসল করানো হয়। এরপর তাদের মাধ্যমে এশটি সিএনজিতে মরদেহ নিয়ে যাওয়া মৃত ব্যক্তি ইসরাইল হোসেনের গ্রাম ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের খানজাপুর গ্রামে।
এসময়, জানাযা পড়ানোর জন্য আলেমদের পক্ষ থেকে গ্রামের মসজিদের খাটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীরা খাটিয়া দিতে রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মাটিতে রেখেই জানাযা সম্পন্ন করেন তারা। গ্রামবাসীরা সহযোগিতা না করলেও দূরে দাঁড়িয়ে আলেমদের দাফনের কাজ দেখছিল তারা।
মরদেহের দাফন-কাফনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেন, কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের ঈমাম ফারুক নোমানী, মাওলানা রুহুল আমিন, হাফেজ হেদায়াতুল্লাহ, মাওলানা ইয়াসিন, মাওলানা আতাউর রহমান ও হাফেজ শাহ জালাল।
ঈমাম ফারুক নোমানী জানান, জানাযার নামাজ পড়ানোর জন্য গ্রামবাসীর কাছে মসজিদের খাঁটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীরা সেটা দিতে অস্বীকার করে। পরে মরদেহ মাটিতে রেখেই জানাযা নামাজ সম্পন্ন করে লাশ দাফন করা হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শামীমা শিরিন মৃত ব্যক্তির সাথে থাকা স্বজনদের বরাত দিয়ে বলেন, চারদিন ধরে জ্বর ছিল। ঠান্ডা-কাশিও ছিল এবং তার গলাব্যাথাও ছিল। আমাদের সাথে আগে থেকে সে কোন প্রকার যোগাযোগ করে নাই। গত দুই দিন ধরে তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। শনিবার রাত ৯ টার দিকে হাসপাতালে আনার পথে সে রাস্তার মধ্যে মারা গেছে।
তিনি আরো জানান, হাসপাতাল থেকেই মারা যাওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে তার করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করি। নমুনা ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছি। এরপর পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে রোববার সকালে মৃত ব্যক্তির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। লাশ দাফন ও কাফনের জন্য ৬ জনের এশটি টিম কাজ করেছে।
আরো পড়ুনঃ কালীগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু (ভিডিও)
কালীগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু, দুটি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা