ঢাকা ১১:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ২ লাখ ২৭ হাজার চাষী ক্ষতিগ্রস্থ

Reporter Name

ঝিনাইদহঃ

ঝিনাইদহে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ঘুর্ণিঝড় আম্পান। রাত ১০ টা থেকে শুরু হয়েছে সকাল পর্যন্ত তান্ডব চালায় আম্পান। ভেঙ্গেছে গাছ-পালা, বাড়িঘর। ভেসে গেছে খামার-পুকুরের মাছ। সেই সাথে নষ্ট হয়েছে মাঠের পর মাঠের ফসল।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, জেলার ৬ উপজেলায় প্রায় ২ লাখ ২৭ হাজার কৃষক আম্পানের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলায় দেড় হাজার হেক্টর কলা, এক হাজার ২৫ হেক্টর শাক শবজি, ১ হাজার ৯’শ ৫০ হেক্টর মুগডাল, ২ হাজার ২০ হেক্টরের তিল, সাড়ে ৭’শ হেক্টর মরিচ, এক’শ হেক্টর বোরো ধান, দেড় হাজার হেক্টর পান বরজ, ২ হাজার ৮’শ ৭৫ হেক্টরের আম, ৪১৮ হেক্টরের লিচু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। টাকার অংকে ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৮৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক রাশেদুল ইসলাম জানান, ঘুর্ণিঝড় আম্পানে তার দেড় বিঘা জমির পান বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। বরজে প্রায় আড়াই লাখ টাকার পান ছিল। বিধ্বস্ত পান বরজ মেরামত করতে এখন প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হবে।

সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের কলাচাষী কাদের মিয়া বলেন, এ বছর তিনি আড়্ইা বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলেন। কয়েকদিন হলো অল্প কিছু কলা বিক্রি করতে পেরেছেন। কলা বিক্রি করে তিনি কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা আয় করতেন। আম্পানের কারণে তার ৩ বিঘা জমির কলাগাছ ভেঙ্গে পড়েছে।

মহেশপুর উপজেলার নাটিমা গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন বলেন, আম্পানের কারণে তার মাছের খামারগুলো ভেসে গেছে। এছাড়াও তার ১০ বিঘা জমির কলাক্ষেত নষ্ট হয়েছে। মুলধন হারিয়ে এখন পথে বসেছেন তিনি। এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিনুর রহমান বিপুল বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্পানের কারণে শৈলকুপা উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ফুলহরি ইউনিয়ন। শুধ এই ইউনিয়ন না। জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব কৃষকদের তালিকা করে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করলে কৃষকরা একটু হলেও বাঁচতে পারবে। তার সরকারের প্রতি আহŸান থাকবে, এসব কৃষকদের আর্থিক ভাবে সহযোগিতা যেন করা হয়।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। পানবরজ, কলাক্ষেত, আম, লিচুসহ অন্যান্য ফসল যা রয়েছে তা সংরক্ষণ ও বিপণণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের শান্তনা দেওয়া হচ্ছে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৪:২৭:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০
৪০৭ Time View

ঝিনাইদহে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ২ লাখ ২৭ হাজার চাষী ক্ষতিগ্রস্থ

আপডেট সময় : ০৪:২৭:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০

ঝিনাইদহঃ

ঝিনাইদহে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ঘুর্ণিঝড় আম্পান। রাত ১০ টা থেকে শুরু হয়েছে সকাল পর্যন্ত তান্ডব চালায় আম্পান। ভেঙ্গেছে গাছ-পালা, বাড়িঘর। ভেসে গেছে খামার-পুকুরের মাছ। সেই সাথে নষ্ট হয়েছে মাঠের পর মাঠের ফসল।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, জেলার ৬ উপজেলায় প্রায় ২ লাখ ২৭ হাজার কৃষক আম্পানের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলায় দেড় হাজার হেক্টর কলা, এক হাজার ২৫ হেক্টর শাক শবজি, ১ হাজার ৯’শ ৫০ হেক্টর মুগডাল, ২ হাজার ২০ হেক্টরের তিল, সাড়ে ৭’শ হেক্টর মরিচ, এক’শ হেক্টর বোরো ধান, দেড় হাজার হেক্টর পান বরজ, ২ হাজার ৮’শ ৭৫ হেক্টরের আম, ৪১৮ হেক্টরের লিচু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। টাকার অংকে ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৮৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক রাশেদুল ইসলাম জানান, ঘুর্ণিঝড় আম্পানে তার দেড় বিঘা জমির পান বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। বরজে প্রায় আড়াই লাখ টাকার পান ছিল। বিধ্বস্ত পান বরজ মেরামত করতে এখন প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হবে।

সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের কলাচাষী কাদের মিয়া বলেন, এ বছর তিনি আড়্ইা বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলেন। কয়েকদিন হলো অল্প কিছু কলা বিক্রি করতে পেরেছেন। কলা বিক্রি করে তিনি কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা আয় করতেন। আম্পানের কারণে তার ৩ বিঘা জমির কলাগাছ ভেঙ্গে পড়েছে।

মহেশপুর উপজেলার নাটিমা গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন বলেন, আম্পানের কারণে তার মাছের খামারগুলো ভেসে গেছে। এছাড়াও তার ১০ বিঘা জমির কলাক্ষেত নষ্ট হয়েছে। মুলধন হারিয়ে এখন পথে বসেছেন তিনি। এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিনুর রহমান বিপুল বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্পানের কারণে শৈলকুপা উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ফুলহরি ইউনিয়ন। শুধ এই ইউনিয়ন না। জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব কৃষকদের তালিকা করে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করলে কৃষকরা একটু হলেও বাঁচতে পারবে। তার সরকারের প্রতি আহŸান থাকবে, এসব কৃষকদের আর্থিক ভাবে সহযোগিতা যেন করা হয়।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। পানবরজ, কলাক্ষেত, আম, লিচুসহ অন্যান্য ফসল যা রয়েছে তা সংরক্ষণ ও বিপণণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের শান্তনা দেওয়া হচ্ছে।