খেলার মাঠে ঝগড়ার জেরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামে আব্দুস সামাদ (১৬) নামে এক কিশোরকে গণপিটুনি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলা কৃষক দলের সদস্য ও ইউনিয়ন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জনের একটি গ্রুপ লাঠিশোঠা নিয়ে হামলা চালায়। হামলা ও গণপিটুনিতে গুরুতর আহত কিশোরকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের রাকু মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
গণপিটুনির শিকার কিশোর আব্দুস সামাদ (১৬) কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল মালেকের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকালে ফুটবল মাঠে তরুণ কিশোরদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেলেও সন্ধার ৭টার পরে কৃষকদল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে লাঠিশোঠা নিয়ে ২৫/৩০ জনের একটি গ্রুপ রাকু মোড়ে আব্দুল আলিমের দোকানে আসে। এসময় কিশোর আব্দুস সামাদ দোকানের ভিতরে আশ্রয় নিলে কৃষকদল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জনাব আলী ও ৩ নং ওয়ার্ড সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি লিটন মিয়া দোকানে হামলা চালায়। দোকানের মালামাল ভাংচুর করে কিশোর আব্দুস সামাদ কে দোকান থেকে টেনে হিচড়ে বের করে পেটাতে শুরু করে।
এসময় জাকির হোসেন, নাহিয়ান হোসেন, ইমরান হোসেন সহ ১৫/২০ জন কিশোর আব্দুস সামাদ কে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে শিশু আব্দুস সামাদকে গণপিটুনি দেয় হামলাকারীরা। এসময় আব্দুস সামাদ অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে তাকে ফেলে রেখে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন সামাদকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গণপিটুনির শিকার কিশোর আব্দুস সামাদের বাবা দিনমজুর আব্দুল মালেক বলেন, খেলার মাঠে ছেলেপেলেদের ঝগড়া হয়েছিল। সেটা মীমাংসাও হয়ে গেছে। কিন্তু সন্ধ্যার পরে লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ছেলেকে অমানবিক ভাবে মেরে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায় হামলাকারী জাহাঙ্গীর, লিটন, জাকির, ইমরান, রিন্টু। আমি এ ঘটনায় বিচার চাই। থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
অভিযুক্ত কৃষকদল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ওই ছেলেকে যেভাবে মারা হয়েছে, তা মারাত্মক কিছু না। আমি এ ঘটনায় নেতৃত্ব দেইনি।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কিশোর আব্দুস সামাদ কে ইমার্জেন্সি বিভাগে চিকিৎসা দেয়ার পরে হাসপাতালে ভর্তি করে নেয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের তত্বাবধানে তাকে রাখা হয়েছে। শনিবার রোগীর ব্যাপারে আপডেট জানানো হবে।
জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ বলেন, এধরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিএনপিতে কোনো ঠাঁই নেই। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হোসেনের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এরকম একটি ঘটনার খবর পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সবুজদেশ/এসএএস