ঝিনাইদহের চাঞ্চল্যকর তোয়াজ উদ্দীন (৫৩) হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামী তানভীর হাসান (১৮) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া আজ মঙ্গলবার দুপুরে জানান, তাকে গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা এলাকা থেকে থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হত্যাকারী পালিয়ে যাওয়ার সময় তোয়াজের ঘরের দেওয়ালে লিখে রেখে যায়, “তাকে মারার কারন সে মুহাম্মাদ (সঃ) কে গালি দিসে, তাঁর নামে খারাপ কথা বলেছে, আল্লাহু আকবার”।
গ্রেফতারকৃত তানভীর হাসান যশোর কতোয়ালি থানার কামারগন্যা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। খুন হওয়ার ২১দিন পর হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ ।
পুলিশ জানায়, ২০২২ সাল থেকে ব্যবসায়ী তোয়াজ উদ্দিনের সাথে তানভীরের পরিচয় হয়। স্ত্রী না থাকায় তোয়াজের সঙ্গে তার সমকামিতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুত্র ধরে তানভীর তোয়াজ উদ্দীনের ঢাকার বাসা ও গ্রামের বাড়িতে যাতায়াত করতো।
গত ১ সেপ্টম্বর তোয়াজ উদ্দিনের সাথে আসামী তানভীর হাসান ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে আসে। ঐ রাতে তোয়াজ উদ্দিন জোরপূর্বক আসামী তানভীর হাসানকে বলৎকার করে ঘুমিয়ে পড়েন। এতে ক্ষুব্ধ হয় তানভীর। ঘরের মধ্যে থাকা পাথর (শীল) দিয়ে ঘুমন্ত তোয়াজের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে তানভীর। হত্যার তিনদিন পর ৩ সেপ্টম্বর তোয়াজের ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে প্রতিবেশিরা পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে তানভীর জানায়, তোয়াজকে হত্যার পর তার পা বেঁধে তোয়াজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে তালাবদ্ধ করে চাবি পাশের পুকুরে ফেলে দেয় তানভীর। যাওয়ার সময় দেয়ালে একটি চিরকুট লিখে রেখে যায়। তাতে লেখা ছিল “তাকে মারার কারন সে মুহাম্মাদ (সঃ) কে গালি দিসে, তাঁর নামে খারাপ কথা বলেছে, আল্লাহু আকবার”।
এলাকার চেয়ারম্যান খুরশিদ মিঞা জানান, সে যে সমকামি ছিল তা এলাকার মানুষ মোটেও জানতেন না। তোয়াজ গ্রামের বাড়িতে আসলে মাদ্রাসার ছাত্ররা আসা যাওয়া করতো। গ্রামবাসি মনে করতো মাদ্রাসা ছাত্রদের সে আর্থিক সহায়তা করতো। তানভীর নামে ওই মাদ্রাসার ছাত্র গ্রেফতার পর তোয়াজ খুন হওয়ার বিষয়টি জানা গেলো।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান, হত্যার পর মোটিভ ও ক্লুলেস ছিল মামলাটি। এঘটনায় নিহত’র ভাই আক্কাচ আলী বাদী হয়ে মামলা করেন। ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল বিষয়টি সর্বক্ষন মনিটরিং করে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তি সনাক্ত ও পরে তাকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
সবুজদেশ/এসএএস