ঢাকা ০৬:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে বিয়ে করতে বরের বাড়ি হাজির কনে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৩৪:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০২২
  • ১৭৮ বার পড়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশে বিয়ের যে প্রচলিত প্রথা সেটা ভেঙ্গে আলোচনার জন্ম দিয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকৃপা উপজেলার সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি। গতকাল বুধবার এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী বর তার আত্মীয়-স্বজনসহ অন্যান্য সহযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়ী যান বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে এবং সেখান থেকে কনেকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে আসেন।

কিন্তু ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকার ইউএনও”র গাড়ী চালক আব্দুল কাদেরের মেয়ে ইতি সেলিনা এক্ষেত্রে উল্টো কাজটি করেছেন। তিনি তার সহযাত্রীদের নিয়ে একই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের সামসুদ্দিন লস্করের পুত্র দীপ্ত টিভিতে কর্মরত এম এ মালেক শান্তর বাড়ীতে হাজির হন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে।

প্রথাগতভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশমুখে যেভাবে বরকে বরণ করা হয়, তেমনি এই বিয়েতেও কনেকে ফুলের মালা পরিয়ে, মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেন বরপক্ষের আত্মীয় স্বজন।এরপর বর কনে আসনে বসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। সব অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয় এবং কনে থেকে যান ছেলের বাড়ীতে।

ব্যতিক্রমধর্মী এই বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের কমতি ছিলনা । বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে বরের বাড়ীতে যেমন উৎসাহী জনতা ভিড় ছিল তেমনি কনের বাসাতেও অনেক মানুষ জড়ো হন ।এই প্রথার বাইরের বিয়ের প্রস্তাবটি আসে মূলত বর শান্তর পক্ষ থেকে। তারা চেয়েছেন এই বিয়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারী পুরুষের বৈষম্য দূর করার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।

এ ব্যাপারে কনে সেলিনা বলেন “ছেলেরা যদি পারে মেয়েদেরকে বিয়ে করে নিয়ে আসতে তাহলে মেয়েরা কেন পারবেনা। নতুন সিস্টেমে বিয়ে করতে পেরে আমি অনেক খুশি। প্রথমে ভেবেছিলাম এভাবে বিয়ে করবো, ঠিক হবে কিনা। কিন্তু পরে আমি রাজী হই। এমন আনকমনভাবে বিয়ে এর আগে আর কেউ করেনি। বিয়েতে এজন্য অনেক আনন্দ হয়েছে।”শুরুতে দুই পরিবারের আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশী আপত্তি জানালেও পরে তারা রাজী হন এবং সাদরেই এই প্রস্তাাবকে গ্রহণ করেন।

“পুরুষ শাসিত সমাজে নারী পুরুষের সমান অধিকারের বহিঃপ্রকাশে এই প্রথা ভেঙ্গে বিয়ে করার বিষয়টিকে প্রতীকী বলে জানিয়েছেন বর এম এ মালেক শান্ত।

শৈলকুপার ইউএনও কানিজ ফাতেমা লিজা জানান, ব্যতিক্রমী এ বিয়ের কনে ইতি সেলিনা তার গাড়িচালকের মেয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানে কনেযাত্রী হিসেবে তিনিও উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

ঝিনাইদহে বিয়ে করতে বরের বাড়ি হাজির কনে

Update Time : ০৭:৩৪:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশে বিয়ের যে প্রচলিত প্রথা সেটা ভেঙ্গে আলোচনার জন্ম দিয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকৃপা উপজেলার সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি। গতকাল বুধবার এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী বর তার আত্মীয়-স্বজনসহ অন্যান্য সহযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়ী যান বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে এবং সেখান থেকে কনেকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে আসেন।

কিন্তু ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকার ইউএনও”র গাড়ী চালক আব্দুল কাদেরের মেয়ে ইতি সেলিনা এক্ষেত্রে উল্টো কাজটি করেছেন। তিনি তার সহযাত্রীদের নিয়ে একই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের সামসুদ্দিন লস্করের পুত্র দীপ্ত টিভিতে কর্মরত এম এ মালেক শান্তর বাড়ীতে হাজির হন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে।

প্রথাগতভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশমুখে যেভাবে বরকে বরণ করা হয়, তেমনি এই বিয়েতেও কনেকে ফুলের মালা পরিয়ে, মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেন বরপক্ষের আত্মীয় স্বজন।এরপর বর কনে আসনে বসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। সব অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয় এবং কনে থেকে যান ছেলের বাড়ীতে।

ব্যতিক্রমধর্মী এই বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের কমতি ছিলনা । বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে বরের বাড়ীতে যেমন উৎসাহী জনতা ভিড় ছিল তেমনি কনের বাসাতেও অনেক মানুষ জড়ো হন ।এই প্রথার বাইরের বিয়ের প্রস্তাবটি আসে মূলত বর শান্তর পক্ষ থেকে। তারা চেয়েছেন এই বিয়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারী পুরুষের বৈষম্য দূর করার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।

এ ব্যাপারে কনে সেলিনা বলেন “ছেলেরা যদি পারে মেয়েদেরকে বিয়ে করে নিয়ে আসতে তাহলে মেয়েরা কেন পারবেনা। নতুন সিস্টেমে বিয়ে করতে পেরে আমি অনেক খুশি। প্রথমে ভেবেছিলাম এভাবে বিয়ে করবো, ঠিক হবে কিনা। কিন্তু পরে আমি রাজী হই। এমন আনকমনভাবে বিয়ে এর আগে আর কেউ করেনি। বিয়েতে এজন্য অনেক আনন্দ হয়েছে।”শুরুতে দুই পরিবারের আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশী আপত্তি জানালেও পরে তারা রাজী হন এবং সাদরেই এই প্রস্তাাবকে গ্রহণ করেন।

“পুরুষ শাসিত সমাজে নারী পুরুষের সমান অধিকারের বহিঃপ্রকাশে এই প্রথা ভেঙ্গে বিয়ে করার বিষয়টিকে প্রতীকী বলে জানিয়েছেন বর এম এ মালেক শান্ত।

শৈলকুপার ইউএনও কানিজ ফাতেমা লিজা জানান, ব্যতিক্রমী এ বিয়ের কনে ইতি সেলিনা তার গাড়িচালকের মেয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানে কনেযাত্রী হিসেবে তিনিও উপস্থিত ছিলেন।