ঢাকা ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ভুল চিকিৎসায় গৃহবধুর মৃত্যু

 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় সাথী আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার বারাবাজারে জননী আছিয়া প্রাাইভেট হাসপাতালে সিজারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধরু মৃত্যু হয়। নিহত গৃহবধু সাথী বারোবাজার বাদেডিহি গ্রামের শরিফুল ইসলামের মেয়ে।

এ ঘটনায় পর নিহতের স্বজন ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালটি ঘেরাও করে মালিককে অবরুদ্ধ করে। এ খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীকে উদ্ধার করলেও রাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

নিহত গৃহবধুর পিতা শরিফুল ইসলাম জানায়, শুক্রবার দুপুরের পর তার মায়ের সাথে করে অন্তসত্ত্বা মেয়ে সাথী খাতুনের সিজারের জন্য বারবাজারের জননী আছিয়া প্রাইভেট হাসপাতালে পাঠায়। সন্ধ্যায় ডাঃ সালাহউদ্দিন তাকে সিজারের পর একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সাথীকে ওটি রুম থেকে বেডে স্থানান্তরের পর পরই প্রচন্ড স্বাস কষ্ট দেখা দেয়। মেয়ের এমন শাষকষ্ট দেখে পিতা শরিফুল বার বার হাসপাতাল মালিকদের কাছে গিয়ে উন্নত চিকৎসার জন্য মেয়েকে বাইরে পাঠানোর অনুরোধ করে। কিন্তু হাসপাতাল কর্র্তপক্ষ বলে বাইরে পাঠানো লাগবে না। কিছু সময়ের মধ্যেই রোগী সেরে উঠবে।

এদিকে সিজারিয়ার গৃহবধু সাথী খাতুনের শাসকষ্ট ক্রমেই বাড়তেই থাকে। এক পর্ষায়ে দেড় ঘন্টা পর সাথীর মৃত্যু হয়। পিতার ভার্ষ্য, হাসপাতালটির অবহেলায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সাথীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজন ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধ শত শত জনতা ওই হাসপাতালটি ঘেরাও করে। এ সময় মালিক জামাত আলী হাসপাতাটালটির মধ্যেই ছিল। পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে উঠলে খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম এসে জামাত আলীকে তুলে নিয়ে যায়। তবে রাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনায় শত শত জনতা হাসপাতালটির মালিককে সহ ঘেরাও করে রেখেছিল। পরিস্থিতি শান্ত ও দূর্ঘটনা এড়াতে তিনি তাৎক্ষনিক পুলিশ টিম পাঠিয়ে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীকে তুলে নিয়ে আসেন। তাকে কিছু জিঞ্জাসাবাদও করা হয়। সর্বশেষ ওই ঘটনায় লিখিত কোন অভিযোগ না থাকায় হাসপাতালের মালিককে নিরাপদে ছেড়ে দেয় বলে জানান তিনি।

এমন বিষয়টি বিস্তারিত জানতে শনিবার বিকালে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীর ০১৯৪২৭০৫৬৩২ নং মেবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে, গোপন একটি সুত্রে জানা গেছে, অপরিচ্ছন্ন হাসপাতালটিতে বৈধ কোন চিকিৎসক বা নার্স নেই। এটি দির্ঘদিন ধরেই অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনাটা কেউ আমাকে জানায়নি, আমি এখনই কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ফোন করছি এই ঘটনাটা তদন্তপূরক বারবাজারের ওই প্রাইভেট হাসপাতালটি বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। আর কালীগঞ্জের ও প্রাইভেট হাসপাতালগুলো ২০২০ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স নবায়ন করা আছে, ২০২০ সালের পর থেকে একটা প্রতিষ্ঠান ও নবায়ন করা নেই এ ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রয়োজনে যে সমস্ত সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করা নেই আমি সেগুলো সব বন্ধ করার ব্যবস্থা করবো।

সবুজদেশ/এসইউ

জনপ্রিয়

ঝিনাইদহে ভুল চিকিৎসায় গৃহবধুর মৃত্যু

Update Time : ০৮:২৮:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় সাথী আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার বারাবাজারে জননী আছিয়া প্রাাইভেট হাসপাতালে সিজারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধরু মৃত্যু হয়। নিহত গৃহবধু সাথী বারোবাজার বাদেডিহি গ্রামের শরিফুল ইসলামের মেয়ে।

এ ঘটনায় পর নিহতের স্বজন ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালটি ঘেরাও করে মালিককে অবরুদ্ধ করে। এ খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীকে উদ্ধার করলেও রাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

নিহত গৃহবধুর পিতা শরিফুল ইসলাম জানায়, শুক্রবার দুপুরের পর তার মায়ের সাথে করে অন্তসত্ত্বা মেয়ে সাথী খাতুনের সিজারের জন্য বারবাজারের জননী আছিয়া প্রাইভেট হাসপাতালে পাঠায়। সন্ধ্যায় ডাঃ সালাহউদ্দিন তাকে সিজারের পর একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সাথীকে ওটি রুম থেকে বেডে স্থানান্তরের পর পরই প্রচন্ড স্বাস কষ্ট দেখা দেয়। মেয়ের এমন শাষকষ্ট দেখে পিতা শরিফুল বার বার হাসপাতাল মালিকদের কাছে গিয়ে উন্নত চিকৎসার জন্য মেয়েকে বাইরে পাঠানোর অনুরোধ করে। কিন্তু হাসপাতাল কর্র্তপক্ষ বলে বাইরে পাঠানো লাগবে না। কিছু সময়ের মধ্যেই রোগী সেরে উঠবে।

এদিকে সিজারিয়ার গৃহবধু সাথী খাতুনের শাসকষ্ট ক্রমেই বাড়তেই থাকে। এক পর্ষায়ে দেড় ঘন্টা পর সাথীর মৃত্যু হয়। পিতার ভার্ষ্য, হাসপাতালটির অবহেলায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সাথীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজন ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধ শত শত জনতা ওই হাসপাতালটি ঘেরাও করে। এ সময় মালিক জামাত আলী হাসপাতাটালটির মধ্যেই ছিল। পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে উঠলে খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম এসে জামাত আলীকে তুলে নিয়ে যায়। তবে রাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনায় শত শত জনতা হাসপাতালটির মালিককে সহ ঘেরাও করে রেখেছিল। পরিস্থিতি শান্ত ও দূর্ঘটনা এড়াতে তিনি তাৎক্ষনিক পুলিশ টিম পাঠিয়ে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীকে তুলে নিয়ে আসেন। তাকে কিছু জিঞ্জাসাবাদও করা হয়। সর্বশেষ ওই ঘটনায় লিখিত কোন অভিযোগ না থাকায় হাসপাতালের মালিককে নিরাপদে ছেড়ে দেয় বলে জানান তিনি।

এমন বিষয়টি বিস্তারিত জানতে শনিবার বিকালে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীর ০১৯৪২৭০৫৬৩২ নং মেবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে, গোপন একটি সুত্রে জানা গেছে, অপরিচ্ছন্ন হাসপাতালটিতে বৈধ কোন চিকিৎসক বা নার্স নেই। এটি দির্ঘদিন ধরেই অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনাটা কেউ আমাকে জানায়নি, আমি এখনই কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ফোন করছি এই ঘটনাটা তদন্তপূরক বারবাজারের ওই প্রাইভেট হাসপাতালটি বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। আর কালীগঞ্জের ও প্রাইভেট হাসপাতালগুলো ২০২০ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স নবায়ন করা আছে, ২০২০ সালের পর থেকে একটা প্রতিষ্ঠান ও নবায়ন করা নেই এ ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রয়োজনে যে সমস্ত সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করা নেই আমি সেগুলো সব বন্ধ করার ব্যবস্থা করবো।

সবুজদেশ/এসইউ