ঢাকা ০৫:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ভাতা পাচ্ছে ২৪ রাজাকার!

Reporter Name

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় ২৪ রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লিখিয়ে নিয়মিত ভাতা পাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ডাঃ মেহের আলী খোদ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের দপ্তরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ভাবে এই অভিযোগ করেন। মন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ করার ৯ বছর পার হলেও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলীর অভিযোগের কোন সুরাহা হয়নি। রাজাকাররা সরকারী ভাতা উত্তোলন করে আয়েশি জীবন যাপন করছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মেহের আলী লিখিত অভিযোগের খবর নিশ্চিত করে বুধবার বিকালে মুঠোফোনে জানান, ২০১৪ সালের ২২ নভেম্বর তিনি ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার ২৪ রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে ভাতা প্রদানের অভিযোগ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী ওই বছরের ২৬ নভেম্বর বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের। কিন্তু ৯ বছরেও এই অভিযোগের সুরাহা করতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়। অভিযোগটি গুরুতর হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মেহের আলী তিন মাস আগে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে গিয়ে অভিযোগটি আবারো জমা দেন। জবাবে মন্ত্রী ‘ব্যবস্থা নেয়া হবে’ বলে তাকে আশ্বাস দেন বলে মেহের আলী জানান।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, একটি অশুভ মহল রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কপালে কলংকের তিলক লেপন করেছে। যারা এই তালিকায় যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।

তালিকায় রাজাকার ও অমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ আছে তারা হলেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাঁচটিকারী দেবতলা গ্রামের আবু তালেব, একই গ্রামের আব্দুল গণি, কালুহাটী গ্রামের আবুল কাসেম, কাঞ্চননগরের মোশাররফ হোসেন, কালীকাপুরের আব্দুর রাজ্জাক, শৈলকুপার বৃত্তিদেবী রাজনগর গ্রামের ফিরোজার রহমান, একই গ্রামের ফজলে ইলাহী মানিক, হারুনদিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার, শিতালী গ্রামের নুরুন্নবী খান, গোয়ালপাড়ার মকবুল হোসেন, সদরের পানামী গ্রামের গুলজার উদ্দীন, কালুহাটী গ্রামের তৈয়ব আলী, রাজধারপুর গ্রামের সাবদার আলী, একই গ্রামের আব্দুল ওহাব, খোর্দ্দ ঝিনাইদহের চৌধুরী আলী, মাগুরাপাড়ার জহুরুল হক, পানামী গ্রামের মতিয়ার রহমান, ব্যাপারীপাড়া ঢাকালে পট্ট্রির আবু বকর সিদ্দিক, আর্য্যনারায়নপুর গ্রামের আনসার উদ্দীন, কালীগঞ্জ শহরের মুজিরুচ্ছোবাহান, বাকুলিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, হরিণাকুন্ডু শ্রীপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান, মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ও কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষিপুর গ্রামের ফজলুল হক।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা দেশ স্বাধীনে বিরোধীতা করেছে আজ তারাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বিভিন্ন যাচাই বাছাইয়ের সময় রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম ওঠানো হয়েছে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:৫০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩
১৬০ Time View

ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ভাতা পাচ্ছে ২৪ রাজাকার!

আপডেট সময় : ০৬:৫০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় ২৪ রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লিখিয়ে নিয়মিত ভাতা পাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ডাঃ মেহের আলী খোদ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের দপ্তরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ভাবে এই অভিযোগ করেন। মন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ করার ৯ বছর পার হলেও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলীর অভিযোগের কোন সুরাহা হয়নি। রাজাকাররা সরকারী ভাতা উত্তোলন করে আয়েশি জীবন যাপন করছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মেহের আলী লিখিত অভিযোগের খবর নিশ্চিত করে বুধবার বিকালে মুঠোফোনে জানান, ২০১৪ সালের ২২ নভেম্বর তিনি ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার ২৪ রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে ভাতা প্রদানের অভিযোগ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী ওই বছরের ২৬ নভেম্বর বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের। কিন্তু ৯ বছরেও এই অভিযোগের সুরাহা করতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়। অভিযোগটি গুরুতর হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মেহের আলী তিন মাস আগে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে গিয়ে অভিযোগটি আবারো জমা দেন। জবাবে মন্ত্রী ‘ব্যবস্থা নেয়া হবে’ বলে তাকে আশ্বাস দেন বলে মেহের আলী জানান।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, একটি অশুভ মহল রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কপালে কলংকের তিলক লেপন করেছে। যারা এই তালিকায় যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।

তালিকায় রাজাকার ও অমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ আছে তারা হলেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাঁচটিকারী দেবতলা গ্রামের আবু তালেব, একই গ্রামের আব্দুল গণি, কালুহাটী গ্রামের আবুল কাসেম, কাঞ্চননগরের মোশাররফ হোসেন, কালীকাপুরের আব্দুর রাজ্জাক, শৈলকুপার বৃত্তিদেবী রাজনগর গ্রামের ফিরোজার রহমান, একই গ্রামের ফজলে ইলাহী মানিক, হারুনদিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার, শিতালী গ্রামের নুরুন্নবী খান, গোয়ালপাড়ার মকবুল হোসেন, সদরের পানামী গ্রামের গুলজার উদ্দীন, কালুহাটী গ্রামের তৈয়ব আলী, রাজধারপুর গ্রামের সাবদার আলী, একই গ্রামের আব্দুল ওহাব, খোর্দ্দ ঝিনাইদহের চৌধুরী আলী, মাগুরাপাড়ার জহুরুল হক, পানামী গ্রামের মতিয়ার রহমান, ব্যাপারীপাড়া ঢাকালে পট্ট্রির আবু বকর সিদ্দিক, আর্য্যনারায়নপুর গ্রামের আনসার উদ্দীন, কালীগঞ্জ শহরের মুজিরুচ্ছোবাহান, বাকুলিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, হরিণাকুন্ডু শ্রীপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান, মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ও কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষিপুর গ্রামের ফজলুল হক।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা দেশ স্বাধীনে বিরোধীতা করেছে আজ তারাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বিভিন্ন যাচাই বাছাইয়ের সময় রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম ওঠানো হয়েছে।