ঢাকা ০৫:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে হতদরিদ্রদের লাগানো গাছ কেটে নিল এসআই

Reporter Name

ঝিনাইদহঃ

হতদরিদ্রদের লাগানো গাছকেটে নিলেন ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার সনাতনপুর পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত এসআই শামিম রেজা। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে গাছের কয়েকটি গুঁড়ি উদ্ধার করা হয়।

জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা খন্দকার গিয়াস উদ্দিন মুকুল জানান, এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামানের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সংশ্লিষ্ট শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম ও হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আসাদুজ্জামান। আর এরপরই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন ওই এসআই।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা বন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, উপজেলার দখলপুর যাত্রীছাউনি থেকে মৃগেবাথান পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ খালের উভয় পাড় বনায়ন করা হয়েছে।

স্থানীয় দখলপুর সমিতির মাধ্যমে সেখানে ২০০৩ ও ২০০৪ সালের দিকে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকশ’ গাছ লাগানো হয়। ওই খালের একটি মূল্যবান আকাশমনি গাছগুলো এখন পূর্ণতা লাভ করেছে। কিন্তু গাছকাটার অনুমতি এখনও পাওয়া যায়নি।

তিনি জানান, সোমবার সকালের দিকে একটি আকামমনি গাছকেটে লুকিয়ে রাখেন সনাতনপুর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি এসআই শামিম রেজা। গ্রামের লোকজন প্রত্যক্ষ করলেও পুলিশের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেননি।

পরে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সদর উপজেলার সাধুহাটি গ্রামের হায়দার আলীর পরিচালনাধীন শাপলা স’ মিল থেকে গাছের ৫টি গুঁড়ি উদ্ধার করা হয়।

দখলপুর বনায়ন সমিতির সভাপতি আলী হাসান জানান, ৪০ জন হতদরিদ্র সদস্য বন বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে গাছগুলো লাগানো হয়। কিছুদিন আগের ঝড়ে কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়ে। সোমবার বেলা অনুমান ১১টার দিকে একটি আকাশমনি গাছ কেটে নেন স্থানীয় সনাতনপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই শামিম রেজা।

মূল্যবান ওই আকাশমনি গাছ দিয়ে নিজের বাড়ির জন্য ফার্নিচার তৈরি করার জন্য স’ মিলে এসআই লুকিয়ে রেখেছেন বলে দাবি করেন আলী হাসান।

তিনি অভিযোগ করেন, গাছকাটার প্রতিবাদ করায় নানাভাবে ভয়-ভীতিসহ আরও গাছকাটার হুমকি দেয়া হয়। এর আগেও ক্যাম্পে জ্বালানির কথা বলে আরও ৩টি গাছ কেটে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তার।

অভিযুক্ত এসআই শামিম রেজা গাছকাটার কথা স্বীকার করে জানান, গাছগুলো মরা ছিল। তাই ক্যাম্পের জ্বালানি কাঠের জন্য গাছগুলো কাটা হয়েছে। সেগুলো ফাঁড়ার জন্য স’মিলে রাখা হয়েছিল।

জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা খন্দকার গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, হতদরিদ্রদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির অধীন লাগানো গাছকাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপার বরাবর চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেছেন, ব্যক্তির দায় পুলিশ নেবে না। বেআইনিভাবে গাছকাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:৩২:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মে ২০২০
৬৫০ Time View

ঝিনাইদহে হতদরিদ্রদের লাগানো গাছ কেটে নিল এসআই

আপডেট সময় : ০৯:৩২:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মে ২০২০

ঝিনাইদহঃ

হতদরিদ্রদের লাগানো গাছকেটে নিলেন ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার সনাতনপুর পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত এসআই শামিম রেজা। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে গাছের কয়েকটি গুঁড়ি উদ্ধার করা হয়।

জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা খন্দকার গিয়াস উদ্দিন মুকুল জানান, এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামানের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সংশ্লিষ্ট শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম ও হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আসাদুজ্জামান। আর এরপরই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন ওই এসআই।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা বন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, উপজেলার দখলপুর যাত্রীছাউনি থেকে মৃগেবাথান পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ খালের উভয় পাড় বনায়ন করা হয়েছে।

স্থানীয় দখলপুর সমিতির মাধ্যমে সেখানে ২০০৩ ও ২০০৪ সালের দিকে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকশ’ গাছ লাগানো হয়। ওই খালের একটি মূল্যবান আকাশমনি গাছগুলো এখন পূর্ণতা লাভ করেছে। কিন্তু গাছকাটার অনুমতি এখনও পাওয়া যায়নি।

তিনি জানান, সোমবার সকালের দিকে একটি আকামমনি গাছকেটে লুকিয়ে রাখেন সনাতনপুর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি এসআই শামিম রেজা। গ্রামের লোকজন প্রত্যক্ষ করলেও পুলিশের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেননি।

পরে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সদর উপজেলার সাধুহাটি গ্রামের হায়দার আলীর পরিচালনাধীন শাপলা স’ মিল থেকে গাছের ৫টি গুঁড়ি উদ্ধার করা হয়।

দখলপুর বনায়ন সমিতির সভাপতি আলী হাসান জানান, ৪০ জন হতদরিদ্র সদস্য বন বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে গাছগুলো লাগানো হয়। কিছুদিন আগের ঝড়ে কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়ে। সোমবার বেলা অনুমান ১১টার দিকে একটি আকাশমনি গাছ কেটে নেন স্থানীয় সনাতনপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই শামিম রেজা।

মূল্যবান ওই আকাশমনি গাছ দিয়ে নিজের বাড়ির জন্য ফার্নিচার তৈরি করার জন্য স’ মিলে এসআই লুকিয়ে রেখেছেন বলে দাবি করেন আলী হাসান।

তিনি অভিযোগ করেন, গাছকাটার প্রতিবাদ করায় নানাভাবে ভয়-ভীতিসহ আরও গাছকাটার হুমকি দেয়া হয়। এর আগেও ক্যাম্পে জ্বালানির কথা বলে আরও ৩টি গাছ কেটে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তার।

অভিযুক্ত এসআই শামিম রেজা গাছকাটার কথা স্বীকার করে জানান, গাছগুলো মরা ছিল। তাই ক্যাম্পের জ্বালানি কাঠের জন্য গাছগুলো কাটা হয়েছে। সেগুলো ফাঁড়ার জন্য স’মিলে রাখা হয়েছিল।

জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা খন্দকার গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, হতদরিদ্রদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির অধীন লাগানো গাছকাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপার বরাবর চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেছেন, ব্যক্তির দায় পুলিশ নেবে না। বেআইনিভাবে গাছকাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।