ঢাকা ০২:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ খাদ্যগুদামে ৩৩ মেট্রিক টন গম জব্দ, তদন্ত কমিটি গঠন

 

ঝিনাইদহ সদর খাদ্যগুদামে দুদকের অভিযানে ৩৩ মেট্রিক টন গম জব্দের ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যরা হলেন- সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নুর উন নবী, টেকনিক্যাল কর্মকর্তা (খাদ্য বিভাগ) যশোর মুক্তাদির হোসেন ও কারিগরি পরিদর্শক (ঝিনাইদহ-মাগুরা) মো. আনিসুর রহমান। একই সঙ্গে সিএসডি গোডাউন (খুলনা) থেকে পাঠানো গমের মান পরীক্ষার জন্য ল্যাবে (খাদ্য বিভাগের) পাঠানো হয়েছে।

নিম্নমানের গম গুদামে সংরক্ষণ করা হয়েছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহ ২২ জুলাই দিনভর ওই (সদর খাদ্যগুদামে) অভিযান পরিচালনা করে। ওই দিন (২২ জুলাই) ৬৪৬ বস্তা গম, ওজন অনুমান ৩৩ মেট্রিক টন জব্দ করে দুদক। ঘটনাটি তোলপাড় সৃষ্টি করে। নড়ে চড়ে বসে খাদ্য অধিদপ্তর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩০ জুন ওএমএস খাতে আটা বিক্রির জন্য জেলার (ঝিনাইদহ) ৪টি বেসরকারি ময়দা মিলের অনুকূলে ১৪২ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২ জুলাই এক আদেশে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রিয় কমল চাকমা হরিণাকুণ্ডু উপজেলার মেসার্স রায়হান ফুড বেভারেজ অ্যান্ড ফ্লাওয়ার মিলসের অনুকূলে ৯ মেট্রিক টন, সদর উপজেলার হাটগোপালপুরের মেসার্স তাফসীর এগ্রো ফুড লিমিটেড ৫৩ মেট্রিক টন, সদর উপজেলার বিষয়খালী বাজারের মেসার্স ঝিনাইদহ অটো ফ্লাওয়ার মিলের অনুকূলে ২৫ মেট্রিক টন এবং জেলা শহরের আরাপপুর পানতুলি অটো ফ্লাওয়ার মিলসের অনুকূলে ৫৫ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেন। বরাদ্দের ১৪২ মেট্রিক টন গমের মধ্যে খুলনা বিভাগীয় খাদ্যগুদাম (সিএসডি) থেকে ১৮ জুলাই ৬৬ মেট্রিক টন গম পাঠানো হয়। সেই গম মজুত করা হয় সদর খাদ্যগুদামে।

খবর জানাজানি হলে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) হঠাৎ করেই নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর ঝিনাইদহের সহকারী পরিচালক সাধন সরকার ও বিএসটিআই পরিদর্শক কুষ্টিয়া মো. রেজানুর রহমানসহ সদর খাদ্যগুদামে হানা দেয় দুদক। দিনভর চালানো অভিযানে ৬৪৬ বস্তা (ওজন ৩৩ মেট্রিক টন) নিম্নমানের গম জব্দ করা হয়।

এ বিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহের উপ-পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ জানান, ২২ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর খাদ্যগুদামে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নিম্নমানের গম পাওয়া গেছে এবং সেগুলো জব্দ করা হয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদন কমিশন অফিসে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নুর উন নবী ও সদর গুদামের ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গম স্থানীয়ভাবে ক্রয় করা হয়নি। সহকারী ব্যবস্থাপক খুলনা সিএসডি পূর্ণিমা মণ্ডলের স্বাক্ষরে ১৮ জুলাই (২০২৫) ৪টি চালানে ৪টি ট্রাকে করে ৬৬ মেট্রিক টন গম পাঠানো হয়। সদর খাদ্যগুদামের এফএস ১ নাম্বার গোডাউনে সংরক্ষণ করা হয়। বিদেশ থেকে আমদানি করা ওই গমের গুণগতমান যদি খারাপ হয় এর জন্য যারা সরবরাহ করেছেন তারা দায়ী থাকবেন। কিন্তু গম থেকে তৈরি করা আটার মান নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো মিলার বা ভোক্তা অভিযোগ করেননি বলে দাবি করেন এই দুই কর্মকর্তা।

ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রিয় কমল চাকমা বৃহস্পতিবার বিকালে জানান, দুদকের অভিযানের পরে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জব্দ করা গমের নমুনা খুলনা বিভাগীয় ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

ঝিনাইদহে প্রবাসী বাবার ইচ্ছা পূরণে হেলিকপ্টারে ছেলের বিয়ে

ঝিনাইদহ খাদ্যগুদামে ৩৩ মেট্রিক টন গম জব্দ, তদন্ত কমিটি গঠন

Update Time : ০৭:৪৮:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

 

ঝিনাইদহ সদর খাদ্যগুদামে দুদকের অভিযানে ৩৩ মেট্রিক টন গম জব্দের ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যরা হলেন- সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নুর উন নবী, টেকনিক্যাল কর্মকর্তা (খাদ্য বিভাগ) যশোর মুক্তাদির হোসেন ও কারিগরি পরিদর্শক (ঝিনাইদহ-মাগুরা) মো. আনিসুর রহমান। একই সঙ্গে সিএসডি গোডাউন (খুলনা) থেকে পাঠানো গমের মান পরীক্ষার জন্য ল্যাবে (খাদ্য বিভাগের) পাঠানো হয়েছে।

নিম্নমানের গম গুদামে সংরক্ষণ করা হয়েছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহ ২২ জুলাই দিনভর ওই (সদর খাদ্যগুদামে) অভিযান পরিচালনা করে। ওই দিন (২২ জুলাই) ৬৪৬ বস্তা গম, ওজন অনুমান ৩৩ মেট্রিক টন জব্দ করে দুদক। ঘটনাটি তোলপাড় সৃষ্টি করে। নড়ে চড়ে বসে খাদ্য অধিদপ্তর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩০ জুন ওএমএস খাতে আটা বিক্রির জন্য জেলার (ঝিনাইদহ) ৪টি বেসরকারি ময়দা মিলের অনুকূলে ১৪২ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২ জুলাই এক আদেশে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রিয় কমল চাকমা হরিণাকুণ্ডু উপজেলার মেসার্স রায়হান ফুড বেভারেজ অ্যান্ড ফ্লাওয়ার মিলসের অনুকূলে ৯ মেট্রিক টন, সদর উপজেলার হাটগোপালপুরের মেসার্স তাফসীর এগ্রো ফুড লিমিটেড ৫৩ মেট্রিক টন, সদর উপজেলার বিষয়খালী বাজারের মেসার্স ঝিনাইদহ অটো ফ্লাওয়ার মিলের অনুকূলে ২৫ মেট্রিক টন এবং জেলা শহরের আরাপপুর পানতুলি অটো ফ্লাওয়ার মিলসের অনুকূলে ৫৫ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেন। বরাদ্দের ১৪২ মেট্রিক টন গমের মধ্যে খুলনা বিভাগীয় খাদ্যগুদাম (সিএসডি) থেকে ১৮ জুলাই ৬৬ মেট্রিক টন গম পাঠানো হয়। সেই গম মজুত করা হয় সদর খাদ্যগুদামে।

খবর জানাজানি হলে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) হঠাৎ করেই নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর ঝিনাইদহের সহকারী পরিচালক সাধন সরকার ও বিএসটিআই পরিদর্শক কুষ্টিয়া মো. রেজানুর রহমানসহ সদর খাদ্যগুদামে হানা দেয় দুদক। দিনভর চালানো অভিযানে ৬৪৬ বস্তা (ওজন ৩৩ মেট্রিক টন) নিম্নমানের গম জব্দ করা হয়।

এ বিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহের উপ-পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ জানান, ২২ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর খাদ্যগুদামে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নিম্নমানের গম পাওয়া গেছে এবং সেগুলো জব্দ করা হয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদন কমিশন অফিসে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নুর উন নবী ও সদর গুদামের ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গম স্থানীয়ভাবে ক্রয় করা হয়নি। সহকারী ব্যবস্থাপক খুলনা সিএসডি পূর্ণিমা মণ্ডলের স্বাক্ষরে ১৮ জুলাই (২০২৫) ৪টি চালানে ৪টি ট্রাকে করে ৬৬ মেট্রিক টন গম পাঠানো হয়। সদর খাদ্যগুদামের এফএস ১ নাম্বার গোডাউনে সংরক্ষণ করা হয়। বিদেশ থেকে আমদানি করা ওই গমের গুণগতমান যদি খারাপ হয় এর জন্য যারা সরবরাহ করেছেন তারা দায়ী থাকবেন। কিন্তু গম থেকে তৈরি করা আটার মান নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো মিলার বা ভোক্তা অভিযোগ করেননি বলে দাবি করেন এই দুই কর্মকর্তা।

ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রিয় কমল চাকমা বৃহস্পতিবার বিকালে জানান, দুদকের অভিযানের পরে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জব্দ করা গমের নমুনা খুলনা বিভাগীয় ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

সবুজদেশ/এসএএস