ঢাকা ০৮:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হুন্ডি ও সোনা চোরাচালান নিয়ে বিরোধ:

ঝিনাইদহ সীমান্তে একজনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা

 

হুন্ডি ও সোনা চোরাচালান নিয়ে বিরোধের জের ধরে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে মতিয়ার রহমান মতি (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। তিনি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও তার হাটুতে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ মতিয়ার রহমান মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা পশ্চিমপাড়ার আজিজুর রহমানের ছেলে।

মঙ্গলবার ভোর সকালে উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের কামারবাড়ি মোড়ে দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালায়। আহত মতিয়ার রহমানকে মহেশপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না বিশ্বাস মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

গুলিবিদ্ধ মতিয়ার রহমান জানান, তিনি মঙ্গলবার ভোর বেলা ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষ তরিকুল ইসলাম, আকাশ, ইব্রাহীম ও ইস্রাফিল হোসেন তাকে ঘিরে ধরে এবং গুলি চালায়। এতে তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মসজিদে নামাজরত মুসল্লীরা ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। মুসল্লীরা তাকে উদ্ধার করে মহেশপুর হাসপাতালে নিয়ে আসে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলাম ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, ভোর ৫টার দিকে মতিয়ারের উপর হামলা করা হয়। মতি হামলাকারীদের চিনেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ২০২৪ সালের ১৭ জানুয়ারি বাঘাডাঙ্গা গ্রামে মন্টু ও তার ভাতিজা শামিমকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। ওই মামলায় হামলাকারীরা আসামী আছেন।

সীমান্তের সুত্রগুলো জানান, ডাবল হত্যা মামলার প্রধান আসামী তরিকুল ইসলাম আকালের সঙ্গে অনেক আগে থেকে মতিয়ারের হুন্ডি ও সোনা চোরাচালানের অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে তার উপর হামলা করা হয়েছে। হামলার আগে তরিকুল ইসলাম আকালে একাধিকবার মতিকে মোবাইলে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় মতি আতংকিত হয়ে বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের একটি সুত্র জানায়, বাঘাডাঙ্গা গ্রামে মন্টু ও তার ভাতিজা শামিমকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হত্যার পর আকালে ভারতে পালিয়ে যায়। ঝিনাইদহ সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় ভারতের রানাঘাট এলাকার হাসখালী থেকে আকালেকে গ্রেফতার করে হাসখালী থানার গারোগা অপুর্ব মুখার্জী। এ ঘটনায় ভারতের হাসখালী থানায় ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল একটি মামলা হয়, যার নাং ৩৩৯/২৪। দুই মাস আগে ডাবল হত্যা মামলায় জামিন পেয়ে আকালে রাজশাহী বর্ডার দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। গোপনে মহেশপুর প্রবেশ করে এলাকায় প্রভাব বিস্তারসহ আবারো অস্ত্র, মাদক, হুন্ডি ও সোনা চোরাচালান শুরু করেছে। তার সঙ্গে বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আজাদের ছেলে আকাশ, টেনার ছেলে ইব্রাহীম ও ঝড়ু মোল্লার ছেলে ইস্রাফিল হোসেন রয়েছে বলে সুত্র জানায়।

সীমান্তে গুলিবিদ্ধ’র ঘটনায় ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ বিপিএম জানান, পুরানো বিরোধের জের ধরে সীমান্তের বাঘাডাঙ্গা গ্রামে একজনকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মহেশপুর থানায় নিয়মিত একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে।

সবুজদেশ/এসএএস

জনপ্রিয়

হুন্ডি ও সোনা চোরাচালান নিয়ে বিরোধ:

ঝিনাইদহ সীমান্তে একজনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা

Update Time : ০৩:৩২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

 

হুন্ডি ও সোনা চোরাচালান নিয়ে বিরোধের জের ধরে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে মতিয়ার রহমান মতি (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। তিনি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও তার হাটুতে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ মতিয়ার রহমান মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা পশ্চিমপাড়ার আজিজুর রহমানের ছেলে।

মঙ্গলবার ভোর সকালে উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের কামারবাড়ি মোড়ে দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালায়। আহত মতিয়ার রহমানকে মহেশপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না বিশ্বাস মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

গুলিবিদ্ধ মতিয়ার রহমান জানান, তিনি মঙ্গলবার ভোর বেলা ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষ তরিকুল ইসলাম, আকাশ, ইব্রাহীম ও ইস্রাফিল হোসেন তাকে ঘিরে ধরে এবং গুলি চালায়। এতে তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মসজিদে নামাজরত মুসল্লীরা ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। মুসল্লীরা তাকে উদ্ধার করে মহেশপুর হাসপাতালে নিয়ে আসে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলাম ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, ভোর ৫টার দিকে মতিয়ারের উপর হামলা করা হয়। মতি হামলাকারীদের চিনেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ২০২৪ সালের ১৭ জানুয়ারি বাঘাডাঙ্গা গ্রামে মন্টু ও তার ভাতিজা শামিমকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। ওই মামলায় হামলাকারীরা আসামী আছেন।

সীমান্তের সুত্রগুলো জানান, ডাবল হত্যা মামলার প্রধান আসামী তরিকুল ইসলাম আকালের সঙ্গে অনেক আগে থেকে মতিয়ারের হুন্ডি ও সোনা চোরাচালানের অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে তার উপর হামলা করা হয়েছে। হামলার আগে তরিকুল ইসলাম আকালে একাধিকবার মতিকে মোবাইলে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় মতি আতংকিত হয়ে বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের একটি সুত্র জানায়, বাঘাডাঙ্গা গ্রামে মন্টু ও তার ভাতিজা শামিমকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হত্যার পর আকালে ভারতে পালিয়ে যায়। ঝিনাইদহ সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় ভারতের রানাঘাট এলাকার হাসখালী থেকে আকালেকে গ্রেফতার করে হাসখালী থানার গারোগা অপুর্ব মুখার্জী। এ ঘটনায় ভারতের হাসখালী থানায় ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল একটি মামলা হয়, যার নাং ৩৩৯/২৪। দুই মাস আগে ডাবল হত্যা মামলায় জামিন পেয়ে আকালে রাজশাহী বর্ডার দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। গোপনে মহেশপুর প্রবেশ করে এলাকায় প্রভাব বিস্তারসহ আবারো অস্ত্র, মাদক, হুন্ডি ও সোনা চোরাচালান শুরু করেছে। তার সঙ্গে বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আজাদের ছেলে আকাশ, টেনার ছেলে ইব্রাহীম ও ঝড়ু মোল্লার ছেলে ইস্রাফিল হোসেন রয়েছে বলে সুত্র জানায়।

সীমান্তে গুলিবিদ্ধ’র ঘটনায় ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ বিপিএম জানান, পুরানো বিরোধের জের ধরে সীমান্তের বাঘাডাঙ্গা গ্রামে একজনকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মহেশপুর থানায় নিয়মিত একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে।

সবুজদেশ/এসএএস