বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) গত ৫ অগাস্টের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্সের জন্য মনোনীত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইডটকো বাংলাদেশ, টিএএসসি সামিট টাওয়ার, আইএসওএন টাওয়ার বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড ও এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেড।
বিটিআরসির বিশেষ সভায় কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স দিতে গত জানুয়ারি মাসে টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইন জারি এবং বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
১১ জুন পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে ৮টি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের জন্য কমিশনের কাছে আবেদন করে। এসব আবেদন মূল্যায়নে গঠিত ১৫ সদস্যের কমিটি মূল্যায়ন শেষে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে নম্বর দেয়।
টাওয়ার শেয়ারিংয়ের জন্য মনোনীত কোম্পানি
আট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯১ নম্বর পেয়ে যোগ্যতাক্রমে প্রথম হয় ইডটকো বাংলাদেশ (স্থানীয় অংশীদার গ্রিনকর টাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং বিদেশি অংশীদার ইডটকো গ্রুপ)। ইডটকো সরকার থেকে (এনওসি) অনুমতি নিয়ে বর্তমানে টাওয়ার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
আজিয়াটা বারহাদ গ্রুপের একক মালিকানাধীন টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবা প্রদানকারী সাবসিডিয়ারি কোম্পানি ইডটকো। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালন কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বাধীন। এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় টাওয়ার, জ্বালানি, ট্রান্সমিশন এবং পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ সব ধরনের অবকাঠামো সেবা দিয়ে থাকে।
৮৮ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে টিএএসসি সামিট টাওয়ার (স্থানীয় অংশীদার সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড এবং বিদেশি অংশীদার টিএএসসি টাওয়ার এবং গ্লোবাল হোল্ডিং কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড)।
৮৫ নম্বর পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আইএসওএন টাওয়ার বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড (কৃত্তনখোলা টাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড) ( স্থানীয় অংশীদার কনফিডেন্স টাওয়ার গোল্ডিং লিমিটেড ও বিদেশি অংশীদার ইসিপি টাওয়ার সিঙ্গাপুর লিমিটেড)।এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেড ৮২ নম্বর পেয়ে ৪র্থ হয় (স্থানীয় অংশীদার এডিএন টেলিকম, এবি হাইটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, জেডএন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, সেনার্জি লজিস্টিক লিমিটেড, অরেঞ্জ ডিজিটাল লিমিটেড এবং বিদেশি অংশীদার রয়েছে চায়না কমিউনিকেশন সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং চ্যাংসু ফেনগফ্যান পাওয়ার ইকুইপমেন্ট কো লিমিটেড)।
এছাড়া যমুনা টাওয়ার লিমিটেড পায় ৮০, এফটিএ বাংলাদেশ লিমিটেড ৭৫, বিডি টাওয়ার বিজনেস কো লিমিটেড ৬৯ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিকমিউকেশন কোম্পানি লিমিটেড কোন নম্বর না পেয়ে ( বিদেশি কোন অংশীদার না থাকায়) অষ্টম অবস্থানে যায়।
কমিটি নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম চারটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স ইস্যুর জন্য বিবেচনার সুপারিশ করে এবং এ সুপারিশ কমিশন গ্রহণ করে।
এ চারটি প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে লাইসেন্স প্রদানে সরকারের পূর্বানুমোদন নিতে কমিশনের সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকসহ ৪টি অপারেটরের মোবাইল ফোনের টাওয়ারের সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি। নীতিমালা অনুযায়ী, এগুলো আলাদা কোম্পানি হবে। অপারেটরদের টাওয়ার এদের কাছে লিজ বা বিক্রি করা হবে পারস্পরিক সমঝোতায়। অপারেটররা ইচ্ছা করলেই পারস্পরিক টাওয়ার শেয়ার করতে পারবে না, থার্ড পার্টি বা টাওয়ার কোম্পানি তা করবে।
৫০ কোটি টাকা দিয়ে এ লাইসেন্স নিতে হবে, বার্ষিক নবায়ন ফি থাকবে ৫ কোটি টাকা এবং সরকারের সাথে রাজস্ব ভাগাভাগি হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে।