তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল এখন পাকিস্তানে। আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ম্যাচটি শুরু হবে।
শুরুতে দুই দলের পাঁচ টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বর্তমান নিরাপত্তা ইসু্যতে ক্রিকেটাররা ম্যাচ কমিয়ে আনার শর্ত দেয়। এরপর দুই টি-টোয়েন্টি কমানো হয়েছে। সঙ্গে তিন টি-টোয়েন্টি পাঁচদিনের মধ্যে আয়োজনের কথাও বলেছেন। সেভাবেই হয়েছে সূচি। ৩০ মে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি এবং পহেলা জুন সবশেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
দুই দল এখন পর্যন্ত ১৯ ম্যাচ খেলেছে। যেখানে বাংলাদেশের জয় কেবল ৩টি। পাকিস্তানের বাকি ১৬টি। বাংলাদেশ জাতীয় দল টি-টোয়েন্টিতে সবশেষ পাকিস্তানকে হারিয়েছে ২০১৬ এশিয়া কাপে। ২০২৩ এশিয়ান গেমসে জিতলেও আদতে সেখানে জাতীয় দল খেলেনি। তবুও সেই ম্যাচ স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি হিসেবে রেকর্ডবুকে আছে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান এখন একই মেরুতে দাঁড়িয়ে। পাকিস্তান সবশেষ দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজই হেরেছে। একটি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে। আরেকটি নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে। বাংলাদেশ পাকিস্তানে যাওয়ার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে।
ফলে মানসিকভাবে দুই দলের অবস্থান সমান সমান। এমন অবস্থায় নতুন একটি সিরিজে দুই দলই চাইবে নিজেদের ছন্দে ফেরাতে। নতুন এই সিরিজে নতুন এই চ্যালেঞ্জটাকে গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস।
‘‘শেষ সিরিজটিতে আমরা সন্তোষজনকভাবে খেলতে পারিনি। এটা নতুন সিরিজ, নতুন চ্যালেঞ্জ। আমাদের সবারই চেষ্টা থাকে যেন ভালো খেলতে পারি। আমরা জানি, কোথায় কী ভুল করেছি। চেষ্টা করব সেটার পুনরাবৃত্তি যেন এখানে না হয়।
নিজের দল নিয়ে লিটন অনেক বড় স্বপ্ন দেখছেন, ‘‘আমরা যদি ধারাবাহিক হতাম, তাহলে হয়তো বিশ্বের সেরা দলগুলোর ভেতরই থাকতাম। আমরা যেহেতু পেছনের দল, তার মানে আমাদের কিছু ঘাটতি আছে। ওই জিনিসগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি…কীভাবে ধারাবাহিক হওয়া যায়। প্রতিটা সিরিজে আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ থাকে। চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে নিচ্ছি, দল হিসেবে কীভাবে আমরা একসঙ্গে পারফর্ম করছি, এটা হলো আসল বিষয়।
পাকিস্তান এই সিরিজের দলে রাখেনি শাহিন শাহ আফ্রিদিকে। বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হারিয়েছেন আগের সিরিজেই। অনেকেই বলছেন, এবারই পাকিস্তানকে হারানোর সেরা সময়। নির্দিষ্ট কোনো প্রতিপক্ষ বা শক্তি নিয়ে লিটন ভাবছেন না। তার ক্যানভাসটা অনেক বড়,‘‘আমাদের বিশ্বাস আছে, পৃথিবীর যেকোনো দলকে হারিয়ে দিতে পারি। কিন্তু আমরা এখন ভালো ক্রিকেট খেলছি না। অতীতে কী ভালো ও খারাপ করেছি, তা জানি। এখন সামনে কীভাবে খেলব, তা নিয়ে ভাবছি।
এদিকে পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আগা জানিয়েছেন, তারা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে বাংলাদেশকে হারাবে। অতীতের ভুল না করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় তার।
‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো প্রতিপক্ষই সহজ নয়। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের এই সিরিজ জেতার চেষ্টা করবো। আপনি যদি বিশ্ব ক্রিকেটের পরিবর্তন দেখেন দেখবেন সবগুলো দলই অ্যাটাকিং স্টাইলই বেছে নিয়েছেন। আমরাও আক্রমণাত্মক ক্রিকেটকে বেছে নেব যা লম্বা সময় পর কাজে আসবে। আমরা ভয়ডরহীন খেলবো কিন্তু ঢিলেঢালা নয়।
দুই দলই আছে ব্যাকফুটে। আজকের ম্যাচে যে দল জিতবে তাদের মনোবল খানিকটা ভালো হবে। আত্মবিশ্বাস বাড়বে। কার মুখে ফুটবে হাসি, সেটাই দেখার।
সবুজদেশ/এসইউ