ঢাকা:
বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর রাজধানীর ডজনখানেকেরও বেশি অভিজাত ক্লাবের সদস্য বলে জানিয়েছে র্যাব।
এরমধ্যে চিত্রনায়িকা পরীমনির ঘটনায় আলোচিত সেই বোট ক্লাবের সদস্য হেলেনা জাহাঙ্গীর।যিনি পরীমনির ঘটনায় ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন।তার সে সময়ের স্ট্যাটাসের নিচে ব্যাপক নেতিবাচক মন্তব্যও করতে দেখা গিয়েছিল।
বোট ক্লাব ছাড়াও হেলেনা জাহাঙ্গীর গুলশান ক্লাব, গুলশান নর্থ ক্লাব, বারিধারা ক্লাব, কুমিল্লা ক্লাব, গলফ ক্লাব, গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাব, বিজিএমইএ অ্যাপারেল ক্লাব, বোট ক্লাব, গুলশান লেডিস ক্লাব, উত্তরা লেডিস ক্লাব, গুলশান ক্যাপিটাল ক্লাব, গুলশান সোসাইটি, বনানী সোসাইটি, গুলশান জগার্স সোসাইটি ও গুলশান হেলথ ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত।
গত কয়েক বছর ধরে আলোচিত-সমালোচিত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও নারী উদ্যোক্তা হেলেনা জাহাঙ্গীর। সম্প্রতি ‘আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের পোস্টারকে ঘিরে বিতর্কিত হন।এর জের ধরে আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য পদও খোয়ান তিনি।রোববার তাকে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ফেসবুকে বেশ সক্রিয় হেলেনা জাহাঙ্গীর মূলত একজন নারী উদ্যোক্তা হলেও কিছুদিন ধরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েও আলোচনায় আসে।
হেলেনা জাহাঙ্গীর ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সদস্য ও নির্বাচিত পরিচালক। এ ছাড়া তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএরও সক্রিয় সদস্য হেলেনা জাহাঙ্গীর।
এদিকে বিতর্কিত সেফুদার সঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠতা ও আর্থিক লেনদেন ছিল বলে জানিয়েছে র্যাব।শুক্রবার বিকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত সেফুদার নাতনি হিসেবে সম্বোধন করতেন। সেফুদার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। করতেন লেনদেনও।
প্রসঙ্গত, হেলেনা জাহাঙ্গীরের ঢাকার গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসায় বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাত ৮টার দিকে অভিযান শুরু করে র্যাব।পরে মধ্যরাতে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ বলেছিলেন, তাকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।কী কারণে- জানতে চাইলে তিনি তখন বলেন, তার বাসায় মদ, হরিণের চামড়া, ক্যাসিনো বোর্ড, ওয়াকিটকিসহ বেশ কিছু অবৈধ সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।রাত সোয়া ১২টার দিকে পাঁচ তলা ওই বাড়িতে নিজের ফ্ল্যাট থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীর যখন র্যাব সদস্যদের সঙ্গে বেরিয়ে আসেন, তার মুখে ছিল মাস্ক। পরনে ছিল বেগুনি রঙের জামা ও হলুদ ওড়না।
অভিযানে ওই বাসা থেকে বিদেশি মদ, ওয়াকিটকি সেট, বিদেশি মুদ্রা, জুয়া খেলার সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়।হেলেনাকে আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।পরে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখায় র্যাব।