ঢাকা ০১:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিজিটালে আটকে গেছে আমিনা বেগমের বয়স্ক ভাতা!

 

আমিনা বেগম। পরিবারের দাবি তার বয়স ৯০ বছর। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ৫২ বছর। হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে তার বয়স্ক ভাতা। এতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বৃদ্ধা আমিনা বেগম। আমিনা বেগম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের তালসার গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের স্ত্রী।

তবে, ডিজিটালাইজেশনে আমিনা বেগমের ভাতার টাকা আটকে গেছে বলে জানালেন উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ।

জানা যায়, বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছেন আমিনা বেগম। তার সন্তানদের দাবি তার বয়স ৯০ বছর। তবে জাতীয় পরিচয় পত্রে তাঁর জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ১০ সেপ্টম্বর ১৯৭২ সাল। সে অনুযায়ী তাঁর বর্তমান বয়স ৫২ বছর। তিনি ২০১৮ সালে বয়স্ক ভাতার আওতায় আসেন। সে থেকে ভাতা উত্তোলন করে জীবকা নির্বাহ করে আসছিলেন আমিনা বেগম।

আমিনা বেগমের ছেলে আফজেল হোসেন সবুজদেশ নিউজকে জানান, সংসার জীবনে তার মা ৮ ছেলে-মেয়ের জননী। যার মধ্যে ছেলে আব্দুল বারেক, শওকত আলী, সরবত আলী, আব্দুল সাত্তার, মেয়ে অজুপা খাতুন, ফাতেমা খাতুন ও জনী খাতুন। এত বড় সংসারে ভাই-বোনেরা ব্যস্ত তাদের পরিবারে নিয়ে। এ ছাড়া সারাদিন কাজ কর্ম করে যা আয় রোজগার করেন, তা দিয়ে তাদের সংসার চালাতেই হিমশিত খেয়ে যান।

তিনি আরো বলেন, ৮ ভাই বোনের মধ্যে ১ ভাই মারা গেছে। আর বাকি আমরা যারা আছি প্রত্যেকে দিন মুজুর। কাজ না করলে সংসার চলে না। তার মা ২০১৮ সালের দিকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আসেন। হঠাৎ করে ২১ সালের দিকে বন্ধ হয়ে যায় ভাতার টাকা। সে থেকে বেশ সমস্যার মধ্যে আছেন মা। ভাতার টাকা পেলে মা তাঁর খরচ নিজে চালাতে পারতেন। এতে তাদেরও একটু সমস্যার সমাধান হতো। তিনি বিষয়টি সমাধান করে পুনরায় ভাতার টাকা চালুর দাবি জানান।

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর সমাজ সেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ সবুজদেশ নিউজকে বলেন, আগের দিনে এ সব ভাতা কার্ডে অনেক ভাবে করা হয়েছে। ২০২১ সালের পর সব কিছু ডিজিটালাইজ হওয়ার পর তাঁর ভাতা টাকা অটোমেটিক ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

কারন হিসেবে তিনি বলেন, আগে জন্ম নিবন্ধন দেখে ও চেয়ারম্যান মেম্বরদের সুপারিশে বয়স বেশ কম করে ভাতার কার্ড করা হয়েছে। এখন সেটা আর সম্ভব না। এখন সবকিছু সফটওয়্যারে চলে গেছে। বয়স না হলে ওই সফটওয়্যার অটো বাদ দিয়ে দিবেন কার্ডটি। ওখানে কিছু করার নাই।

ওই কর্মকর্তা বলেন, এখন ওনার কার্ড চালু করতে ভোটার কার্ড সংশোধন করতে হবে। সংশোধন হয়ে আসলে তাঁর কার্ড করে দেয়া সম্ভব হবে।

ভাতা বন্ধের জন্য দায় কার? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই ভোটার তালিকা করার সময় যারা বয়স নির্ধারন করে লিখে ছিলেন তারাই এর জন্য দায়ী।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :
জনপ্রিয়

ডিজিটালে আটকে গেছে আমিনা বেগমের বয়স্ক ভাতা!

Update Time : ০৭:৫৫:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

 

আমিনা বেগম। পরিবারের দাবি তার বয়স ৯০ বছর। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ৫২ বছর। হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে তার বয়স্ক ভাতা। এতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বৃদ্ধা আমিনা বেগম। আমিনা বেগম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের তালসার গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের স্ত্রী।

তবে, ডিজিটালাইজেশনে আমিনা বেগমের ভাতার টাকা আটকে গেছে বলে জানালেন উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ।

জানা যায়, বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছেন আমিনা বেগম। তার সন্তানদের দাবি তার বয়স ৯০ বছর। তবে জাতীয় পরিচয় পত্রে তাঁর জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ১০ সেপ্টম্বর ১৯৭২ সাল। সে অনুযায়ী তাঁর বর্তমান বয়স ৫২ বছর। তিনি ২০১৮ সালে বয়স্ক ভাতার আওতায় আসেন। সে থেকে ভাতা উত্তোলন করে জীবকা নির্বাহ করে আসছিলেন আমিনা বেগম।

আমিনা বেগমের ছেলে আফজেল হোসেন সবুজদেশ নিউজকে জানান, সংসার জীবনে তার মা ৮ ছেলে-মেয়ের জননী। যার মধ্যে ছেলে আব্দুল বারেক, শওকত আলী, সরবত আলী, আব্দুল সাত্তার, মেয়ে অজুপা খাতুন, ফাতেমা খাতুন ও জনী খাতুন। এত বড় সংসারে ভাই-বোনেরা ব্যস্ত তাদের পরিবারে নিয়ে। এ ছাড়া সারাদিন কাজ কর্ম করে যা আয় রোজগার করেন, তা দিয়ে তাদের সংসার চালাতেই হিমশিত খেয়ে যান।

তিনি আরো বলেন, ৮ ভাই বোনের মধ্যে ১ ভাই মারা গেছে। আর বাকি আমরা যারা আছি প্রত্যেকে দিন মুজুর। কাজ না করলে সংসার চলে না। তার মা ২০১৮ সালের দিকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আসেন। হঠাৎ করে ২১ সালের দিকে বন্ধ হয়ে যায় ভাতার টাকা। সে থেকে বেশ সমস্যার মধ্যে আছেন মা। ভাতার টাকা পেলে মা তাঁর খরচ নিজে চালাতে পারতেন। এতে তাদেরও একটু সমস্যার সমাধান হতো। তিনি বিষয়টি সমাধান করে পুনরায় ভাতার টাকা চালুর দাবি জানান।

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর সমাজ সেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ সবুজদেশ নিউজকে বলেন, আগের দিনে এ সব ভাতা কার্ডে অনেক ভাবে করা হয়েছে। ২০২১ সালের পর সব কিছু ডিজিটালাইজ হওয়ার পর তাঁর ভাতা টাকা অটোমেটিক ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

কারন হিসেবে তিনি বলেন, আগে জন্ম নিবন্ধন দেখে ও চেয়ারম্যান মেম্বরদের সুপারিশে বয়স বেশ কম করে ভাতার কার্ড করা হয়েছে। এখন সেটা আর সম্ভব না। এখন সবকিছু সফটওয়্যারে চলে গেছে। বয়স না হলে ওই সফটওয়্যার অটো বাদ দিয়ে দিবেন কার্ডটি। ওখানে কিছু করার নাই।

ওই কর্মকর্তা বলেন, এখন ওনার কার্ড চালু করতে ভোটার কার্ড সংশোধন করতে হবে। সংশোধন হয়ে আসলে তাঁর কার্ড করে দেয়া সম্ভব হবে।

ভাতা বন্ধের জন্য দায় কার? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই ভোটার তালিকা করার সময় যারা বয়স নির্ধারন করে লিখে ছিলেন তারাই এর জন্য দায়ী।

সবুজদেশ/এসএএস