জামালপুরঃ

বরখাস্ত হওয়া ডিসি আহমেদুল কবীরের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা খতিয়ে দেখতে জামালপুরে গেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত দল।

বৃহ্স্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তদন্ত দল জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে পৌঁছায়। তদন্ত দলের সদস্যরা ডিসি অফিসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। দুপুর দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় তদন্ত দল ডিসি অফিসেই অবস্থান করছিল।

তদন্ত দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমান।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের গোপনীয় শাখার কর্মী সানজিদা ইয়াসমিন সাধনার সঙ্গে ডিসি আহমেদ কবীরের আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওটিতে দুজনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনাটি ‘সাজানো’ বলে দাবি করেন আহমেদ কবীর। ওই ঘটনায় জামালপুরসহ সারা দেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরকে ওএসডি করা হয়। তার বদলে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পান পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হক। ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন প্রতিনিধি। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

আদেশে কমিটিকে প্রকাশিত ভিডিওটির সঠিকতা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটি প্রয়োজনে সরেজমিন পরিদর্শন করবে এবং ভিডিওটি যাচাইয়ের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেবে। কমিটিতে প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট মতামত দিতে হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে জামালপুরের ডিসি থেকে ওএসডি হওয়া আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ‘উদাহরণ সৃষ্টির মতো’ শাস্তির ব্যবস্থা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করার মতো পানিশমেন্ট হবে। আমাদের চাকরির বিধানে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়ে গেছে। সেটিই হবে।

আমরা খুব দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারব। সেখানে কী ঘটেছে, কতটুকু ‘অনৈতিকতা’ সেখানে হয়েছে, সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করেই তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে। আর তার ভিত্তিতেই সরকারব্যবস্থা নেবে।’

বিষয়টি অনেকের ‘দৃষ্টিগোচর’ হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড। একজন ডিসি হিসেবে তার যে দায়দায়িত্ব আছে, সেখান থেকে সরে গিয়ে যে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা আমরা দেখেছি।

এটি আমাদের কাছে লিখিত এসেছে এবং আমরা খুব ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা তাকে ওএসডি করেছি। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আমরা সেটি করেছি আপাতত।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here