ঢাকা ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার গাবতলী হাটে গরু বেচাকেনা জমেনি

Reporter Name

রাজধানীর ঢাকার অন্যতম গাবতলী হাটে কোরবানির গরু আসা শুরু করেছে। তবে গরু থাকলেও বেচাকেনা সেভাবে জমে ওঠেনি। ক্রেতারা হাটে হাটে ঘুরে গরু দেখে যাচ্ছেন। দাম যাচাই করছেন, কিনছেন না। এদিকে গরুর দাম কমাচ্ছেন না ব্যাপারীরা।

আজ শনিবার গাবতলীর পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, কোরবানি উপলক্ষে স্থায়ী এই হাট নির্দিষ্ট জায়গা ছাপিয়ে আশপাশে বিস্তৃত হয়েছে। বেশ অনেকখানি জায়গাজুড়ে রাখা হয়েছে কোরবানির পশু। বেড়িবাঁধের পাশেও কিছু কিছু গরু দেখা যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে দেশি গরুর পরিমাণ বেশি। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহী থেকে গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারীরা। এর মধ্যে কুষ্টিয়া থেকে আনা গরুর সংখ্যাই বেশি। ব্যাপারীরা সবাই নিজেকে খামারি বলে দাবি করেছেন।

এমন একজন ফজলু ব্যাপারী ২৯টি গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। গতকাল রাতে গরুগুলো নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে রওনা হয়ে আজ সকালে গাবতলী পৌঁছেছেন। তিনি জানান, গরু আনার সময় পথে তাঁর কোনো সমস্যা হয়নি। কোনো বাধারও শিকার হননি।

ঝিনাইদহের ব্যাপারী আবদুর রহমান মাঝারি আকারের এক গরুর দাম এক লাখ টাকা চেয়েছেন। কয়েকজন ক্রেতা গরুটিকে দেখে গেছেন। দামে বনিবনা হয়নি বলে ক্রেতারা কেনেননি। একজন ক্রেতা বললেন, তাঁর কাছে গরুটির দাম ৭০ হাজার টাকার বেশি হওয়া উচিত নয় বলে মনে হয়েছে।

এদিকে আবদুর রহমান বললেন, এক লাখ টাকার কমে তিনি গরুটি বিক্রি করবেন না। তিনি এই দামেই বিক্রি করার জন্য অপেক্ষা করবেন। যদি এই দাম না পান, তাহলে বিক্রি না করে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন।

মো. আতোয়ার নামের একজন ক্রেতা বলেন, এই গরু গত বছর ঈদুল আজহায় ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক বছরে দাম বড়জোর ১০ হাজার টাকা বেশি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘৭০ হাজার টাকা হলেও মেনে নেওয়া যেত। এক লাখ টাকা অতিরিক্ত দাম এই গরুর জন্য। এত দাম কেন চাইছে, অবাক লাগছে।’

তবে ব্যাপারীদের গৎবাঁধা অজুহাত, খড়সহ গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম বেশি।

মো. মোস্তফা নামের এক ক্রেতার দেখা পাওয়া যায় গাবতলীতে। তিনি ব্যবসায়ী। দুটো গরু কোরবানি দেবেন এবার। তিনি জানালেন, গতকাল শুক্রবার বাড্ডার নতুন বাজার হাটে গিয়েছিলেন। সেখানে গরু মোটামুটি আছে। কিন্তু দাম বেশি। বিক্রেতারা দাম ছাড়ছেন না। পরে তিনি মিরপুরে ইস্টার্ন হাউজিং গরুর হাটে গিয়েছিলেন। আজ গাবতলী এসেছেন। বিক্রেতার সঙ্গে এখনো দরদামে বনিবনা হয়নি। তিনি জানান, এবার তাঁর দেড় লাখ টাকা বাজেট। এই টাকার মধ্যে দুটো গরু কিনবেন। আজ কিনতে না পারলে কাল আবার হাটে আসবেন। হাতে সময় আছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেখবেন। তা না হলে ঈদের দিন সকালে এসে গরু কিনে নেবেন।

গাবতলী পশুর হাটে সানোয়ার হোসেন নামের একজন ব্যবস্থাপক বলেন, হাটে স্থায়ী হাসিলঘর আছে একটি। কোরবানি উপলক্ষে নয়টি অস্থায়ী হাসিলঘর তৈরি করা হয়েছে। হাসিলঘরে বেচাকেনার পরিমাণ খুব কম। বিক্রি হচ্ছে না বললেই চলে। ক্রেতারা শুধু গরু দেখে যাচ্ছেন। তিনি জানান, প্রতিদিন প্রচুর গরু আসছে হাটে। কাল থেকে বিক্রি বাড়ার আশা করছেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৫:৩৩:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৮
১৫৪০ Time View

ঢাকার গাবতলী হাটে গরু বেচাকেনা জমেনি

আপডেট সময় : ০৫:৩৩:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৮

রাজধানীর ঢাকার অন্যতম গাবতলী হাটে কোরবানির গরু আসা শুরু করেছে। তবে গরু থাকলেও বেচাকেনা সেভাবে জমে ওঠেনি। ক্রেতারা হাটে হাটে ঘুরে গরু দেখে যাচ্ছেন। দাম যাচাই করছেন, কিনছেন না। এদিকে গরুর দাম কমাচ্ছেন না ব্যাপারীরা।

আজ শনিবার গাবতলীর পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, কোরবানি উপলক্ষে স্থায়ী এই হাট নির্দিষ্ট জায়গা ছাপিয়ে আশপাশে বিস্তৃত হয়েছে। বেশ অনেকখানি জায়গাজুড়ে রাখা হয়েছে কোরবানির পশু। বেড়িবাঁধের পাশেও কিছু কিছু গরু দেখা যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে দেশি গরুর পরিমাণ বেশি। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহী থেকে গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারীরা। এর মধ্যে কুষ্টিয়া থেকে আনা গরুর সংখ্যাই বেশি। ব্যাপারীরা সবাই নিজেকে খামারি বলে দাবি করেছেন।

এমন একজন ফজলু ব্যাপারী ২৯টি গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। গতকাল রাতে গরুগুলো নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে রওনা হয়ে আজ সকালে গাবতলী পৌঁছেছেন। তিনি জানান, গরু আনার সময় পথে তাঁর কোনো সমস্যা হয়নি। কোনো বাধারও শিকার হননি।

ঝিনাইদহের ব্যাপারী আবদুর রহমান মাঝারি আকারের এক গরুর দাম এক লাখ টাকা চেয়েছেন। কয়েকজন ক্রেতা গরুটিকে দেখে গেছেন। দামে বনিবনা হয়নি বলে ক্রেতারা কেনেননি। একজন ক্রেতা বললেন, তাঁর কাছে গরুটির দাম ৭০ হাজার টাকার বেশি হওয়া উচিত নয় বলে মনে হয়েছে।

এদিকে আবদুর রহমান বললেন, এক লাখ টাকার কমে তিনি গরুটি বিক্রি করবেন না। তিনি এই দামেই বিক্রি করার জন্য অপেক্ষা করবেন। যদি এই দাম না পান, তাহলে বিক্রি না করে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন।

মো. আতোয়ার নামের একজন ক্রেতা বলেন, এই গরু গত বছর ঈদুল আজহায় ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক বছরে দাম বড়জোর ১০ হাজার টাকা বেশি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘৭০ হাজার টাকা হলেও মেনে নেওয়া যেত। এক লাখ টাকা অতিরিক্ত দাম এই গরুর জন্য। এত দাম কেন চাইছে, অবাক লাগছে।’

তবে ব্যাপারীদের গৎবাঁধা অজুহাত, খড়সহ গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম বেশি।

মো. মোস্তফা নামের এক ক্রেতার দেখা পাওয়া যায় গাবতলীতে। তিনি ব্যবসায়ী। দুটো গরু কোরবানি দেবেন এবার। তিনি জানালেন, গতকাল শুক্রবার বাড্ডার নতুন বাজার হাটে গিয়েছিলেন। সেখানে গরু মোটামুটি আছে। কিন্তু দাম বেশি। বিক্রেতারা দাম ছাড়ছেন না। পরে তিনি মিরপুরে ইস্টার্ন হাউজিং গরুর হাটে গিয়েছিলেন। আজ গাবতলী এসেছেন। বিক্রেতার সঙ্গে এখনো দরদামে বনিবনা হয়নি। তিনি জানান, এবার তাঁর দেড় লাখ টাকা বাজেট। এই টাকার মধ্যে দুটো গরু কিনবেন। আজ কিনতে না পারলে কাল আবার হাটে আসবেন। হাতে সময় আছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেখবেন। তা না হলে ঈদের দিন সকালে এসে গরু কিনে নেবেন।

গাবতলী পশুর হাটে সানোয়ার হোসেন নামের একজন ব্যবস্থাপক বলেন, হাটে স্থায়ী হাসিলঘর আছে একটি। কোরবানি উপলক্ষে নয়টি অস্থায়ী হাসিলঘর তৈরি করা হয়েছে। হাসিলঘরে বেচাকেনার পরিমাণ খুব কম। বিক্রি হচ্ছে না বললেই চলে। ক্রেতারা শুধু গরু দেখে যাচ্ছেন। তিনি জানান, প্রতিদিন প্রচুর গরু আসছে হাটে। কাল থেকে বিক্রি বাড়ার আশা করছেন।