দিন যত যাচ্ছে আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। বাড়ছে বৈশ্বিক উঞ্চতা। নীচে নেমে যাচ্ছে পানির স্তর আর প্রকৃতি যেন ক্রমেই রুক্ষ আর রুষ্ট হয়ে উঠছে। এর ধারাবাহিকতায় বিগত কয়েক দিন ধরে সারাদেশে বইয়ে যাচ্ছে মৃদু-থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। কিন্ত খুলনা বিভাগে বিরাজমান তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরও বেশি। এর প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, খুলনাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে খানিকটা স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। চলতি সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ায় সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে। আর এ দুই জেলার পার্শ্ববর্তী হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জেও। এ অঞ্চলে রাতে দিনের প্রচন্ড গরমে সমস্ত প্রাণীকূল আজ হাপিয়ে উঠেছে।
এমন অবস্থায় খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন রিকসা ভ্যানচালকসহ এ এলাকার শ্রমজীবি মানুষেরা। রাতে, দিনে গ্রাম কিংবা শহরে সব স্থানেই একই অবস্থা। এমন অবস্থায় শহরের অস্থায়ী শরবতের দোকানগুলোতে।
মোটর সাইকেলের পথচারী যশোরের আজগর আলী জানান, প্রচন্ড তাপ প্রবাহে একটু বেলা হলেই পিচ সড়কগুলো জ¦লন্ত চুলার মত গরম হয়ে উঠছে। এমন অবস্থায় মটর বাইক নিয়ে চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, যশোর থেকে মোটর সাইকেলযোগে কালীগঞ্জ শহরের আসতে মোট ৩ জায়গায় বিশ্রাম নিয়েছেন। তাই ভাবছেন সন্ধ্যার দিকে সড়কের পিচ একটু ঠান্ডা হলে নিরিবিলি বাড়ি ফিরবেন।
আলম দফাদার নামের এক রিকসা চালক জানান, প্রচন্ড রোদ গরমে দিনের বেলায় শহরের মধ্যে রিকসা চালানো যাচ্ছে না। শহরের মধ্যে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ির গড়ে উঠেছে। যে কারনে শহরের মধ্যে বাতাস কম পাওয়া যায়। একবার একটি ভাড়া মেরে খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে আবার যেতে হচ্ছে। আর প্রচন্ড গরমে শহরে লোক চলাচলও কমে গেছে। ফলে রোজগার কমে গেছে।
সচীন কুমার দাস নামের একজন নির্মান শ্রমিক জানান, তারা সাধারনত টাকায় কন্ট্রাক নিয়ে কাজ করেন। কিন্ত বিগত কয়েক দিনের কাঠফাটা রোদ আর ভ্যাপসা গরমে কাজ করা যাচ্ছে না। শ্রমিকেরা নিজেরা এমন অবস্থায় কাজে যেতে চাচ্ছেন না। কারন তারা বলতে চাচ্ছেন নিজের জীবন আগে।
আব্দুর রজ্জাক নামের এক শরবত ব্যবসায়ী জানান, তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে শহরে শরবত বিক্রি করে আসছেন। বিগত কয়েকদিনের গরমে তার দোকানে ভীড় থেকেই যায়। পথচারী, শ্রমজীবিসহ সব শ্রেণীর মানুষ তার দোকানে এসে অপেক্ষায় থাকেন গরমে এক গ্লাস লেবু পানির শরবত পান করে স্বস্তি পেতে।
তিনি আরও বলেন, গরমের সময়ে শরবত বিক্রি বেড়ে যায়। কিন্ত এ বছরের বিগত কয়েকদিনের গরমের তীব্রতায় বিক্রি বিগত যে কোন বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
সবুজদেশ/এসইউ