সবুজদেশ ডেক্সঃ জাতীয় সংসদের সাতক্ষীরা জেলার চারটি আসনের মধ্যে বিএনপি জোটের চার প্রার্থীর মধ্যে দুজন বিএনপির এবং অপর দুজন শরিক জামায়াতে ইসলামীর। জামায়াতের দুই প্রার্থীই কারাগারে। তাঁদের পক্ষে প্রচারণাও দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির দুই প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রচার শুরুর পর আপাতত মাঠে নেই। অপরজন প্রচার–গণসংযোগ চালাচ্ছেন স্বল্প পরিসরে।

জেলায় বিএনপি জোটের প্রার্থীরা হলেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সাতক্ষীরা-২ (সাতক্ষীরা সদর) আসনে জামায়াতের আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি, দেবহাটা ও কালীগঞ্জের একাংশ) আসনে বিএনপির শহীদুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর ও কালীগঞ্জের একাংশ) আসনে জামায়াতের জি এম নজরুল ইসলাম।

বিএনপির জেলা পর্যায়ের দুজন নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দলের প্রার্থী নির্বাচন সঠিক না হওয়ায় সাধারণ নেতা-কর্মীরা মাঠে নেই। বিশেষ করে জামায়াত নেতাদের প্রার্থী করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জেলা কমিটির প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও জামায়াত নেতাদের প্রার্থী করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বিএনপির তৃণমূল নেতারা মেনে নিতে পারেননি।

বিএনপি সূত্র বলেছে, হাবিবুল ইসলাম ১৩ ডিসেম্বর প্রচারণা শুরু করেন। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর কলারোয়া উপজেলায় তাঁর প্রচারপত্র বিলির সময় হামলা হয়। বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে এ সংঘর্ষ হয়েছে, এমন অভিযোগে স্থানীয় বিএনপির নেতার করা মামলায় প্রার্থী হাবিবুলসহ ৪৬ জনকে আসামি করা হয়। এরপর থেকে তাঁর পক্ষে প্রচারণাও থেমে আছে।

হাবিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করল, অথচ উল্টো বিএনপির নেতাকে ধরে নিয়ে মামলা করে তাঁকেসহ ৪৬ জনকে আসামি করা হলো। এর মধ্যে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফলে নেতা-কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। মামলা হওয়ায় তিনি প্রচার চালাতে পারছেন না।

অবশ্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুফ হোসেন বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কেড়াগাছি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুনসুর আলী বাদী হয়ে হাবিবুল ইসলামসহ ৪৬ জনের নামে মামলা করেছেন। এখানে পুলিশের কী করার আছে?

সাতক্ষীরা-২ আসনে আবদুল খালেক প্রার্থী হয়েছেন কারাগার থেকে। গত ২৬ জুন তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর স্ত্রী সাজেদা বেগমের দাবি, ৩৮টি মামলায় জামিন পাওয়ার পর খালেককে আরও ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ফলে তাঁরা একপ্রকার প্রচারণা চালাতে পারছেন না।

সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খালেককে নির্দিষ্ট তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

প্রচারের মাঠে আছেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের প্রার্থী শহীদুল ইসলাম। তবে তাঁর অভিযোগ, তাঁর নেতা-কর্মীদের বিনা কারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আশাশুনির তেঁতুলিয়ায় তাঁর একটি নির্বাচনী কার্যালয় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে না নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।

সাতক্ষীরা-৪ আসনের প্রার্থী জি এম নজরুল ইসলামকে ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, জি এম নজরুলসহ চারজন নেতাকে গ্রেপ্তার করায় তাঁর প্রচার-প্রচারণা একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। শ্যামনগর থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, ১২টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় জি এম নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য একাধিক দল মাঠে রয়েছে। প্রার্থীরা অভিযোগ করলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here