ঢাকা ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন মাসেই কালীগঞ্জ থানাকে বদলে দিয়েছেন ওসি মাহফুজ

Reporter Name

ঝিনাইদহঃ

থানার আইন-শৃঙ্খলা পরিবেশ দেখভালের পাশাপাশি মানবিক দিক বিবেচনায় সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে

সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের মাঝে “নিবেদিত প্রাণ” কর্মকর্তা হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান। গত বছরের ২৮ অক্টোবর যোগদানের পর থেকে থানার আইন-শৃঙ্খলা পরিবেশ দেখভালের পাশাপাশি সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।

দায়িত্ব নিয়েই থানার সব পুলিশ সদস্যদের সমানভাবে দায়িত্ববণ্টন করে দিয়েছেন তিনি। নির্মাণকাজ শুরু করেছেন- ডিউটি অফিসারের কক্ষ, নতুন করে মেস ও ডাইনিং, পুলিশ সদস্যদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ডিউটি অফিসারের কক্ষ নির্মাণের কাজ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার একাধিক পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন, এর আগে কালীগঞ্জ থানার কোনো ওসি ফোর্সদের উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ করেননি। দীর্ঘদিন ধরে নোংরা, অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার করে আসছিলেন তারা। মেসের পরিবেশ ও খাবারের মান ছিল খারাপ। অনেক সময় দাঁড়িয়ে খেতে হয়েছে।

পুলিশ সদস্যদের ভাষ্য, “কিন্তু মাহফুজ স্যার আসার পর থেকে পুলিশ সদস্যদের এসব দুর্ভোগ লাঘবের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন। ব্যবস্থা করেছেন খেলাধুলার। শীত মৌসুমের রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য থানা কমপ্লেক্সে পাকা ব্যাডমিন্টন ইয়ার্ড তৈরি করে দিয়েছেন। টয়লেটে টাইলস্ বসানোর ব্যবস্থা করেছেন। ডাইনিংসহ নতুন মেস নির্মাণ করছেন। ওয়ারলেস অপারেটরের জন্য নতুন ওয়ালেস রুম তৈরি করেছেন।”

ব্যক্তি হিসেবেও মাহফুজুর রহমান পরিচিত সদালাপী ও মিষ্টভাষী হিসেবে। কখনোই নিম্নপদস্থ কাউকে গালিগালাজ করেন না।

তার আচরণ ও কাজকর্মে আধুনিক পুলিশের ছোঁয়া পরিলক্ষিত হয়। সহকর্মীরা তার আচরণে সন্তুষ্ট এবং কৃতজ্ঞ।

তবে এসব মানবিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ওসি মাহফুজুর ভুলে যাননি পেশাগত দায়িত্বের কথা। এলাকার বিভিন্ন বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে তিনি সজাগ। তার নেতৃত্বেই গত ৪ নভেম্বর অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ১০ মামলার আসামি শফিউদ্দিন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে কালীগঞ্জের পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে “কালীগঞ্জের মাদক সম্রাজ্ঞী” হিসেবে খ্যাত ৩০ মামলার আসামি লাভলী আক্তারকে। এছাড়াও, মাদক ও অস্ত্রসহ আরও বেশ কয়েকজন স্থানীয় আসামিকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, কোনো চাওয়া-পাওয়ার জন্য নয়, পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ভালোলাগার জায়গা থেকে কাজগুলো শুরু করেছি। পুলিশ সদস্যরা সারারাত ডিউটি করে ভাল পরিবেশে থাকতে না পেরে মনোকষ্টে ভোগেন।

তিনি বলেন, আমি পরিচ্ছন্নতা ও শৃংখলাকে ভালোবাসি। নিজেও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে পছন্দ করি তাই ফোর্সদেরকেও এসবের আওতায় আনতে চাই।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৭:৩১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
৮৩৪ Time View

তিন মাসেই কালীগঞ্জ থানাকে বদলে দিয়েছেন ওসি মাহফুজ

আপডেট সময় : ০৭:৩১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০

ঝিনাইদহঃ

থানার আইন-শৃঙ্খলা পরিবেশ দেখভালের পাশাপাশি মানবিক দিক বিবেচনায় সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে

সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের মাঝে “নিবেদিত প্রাণ” কর্মকর্তা হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান। গত বছরের ২৮ অক্টোবর যোগদানের পর থেকে থানার আইন-শৃঙ্খলা পরিবেশ দেখভালের পাশাপাশি সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।

দায়িত্ব নিয়েই থানার সব পুলিশ সদস্যদের সমানভাবে দায়িত্ববণ্টন করে দিয়েছেন তিনি। নির্মাণকাজ শুরু করেছেন- ডিউটি অফিসারের কক্ষ, নতুন করে মেস ও ডাইনিং, পুলিশ সদস্যদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ডিউটি অফিসারের কক্ষ নির্মাণের কাজ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার একাধিক পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন, এর আগে কালীগঞ্জ থানার কোনো ওসি ফোর্সদের উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ করেননি। দীর্ঘদিন ধরে নোংরা, অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার করে আসছিলেন তারা। মেসের পরিবেশ ও খাবারের মান ছিল খারাপ। অনেক সময় দাঁড়িয়ে খেতে হয়েছে।

পুলিশ সদস্যদের ভাষ্য, “কিন্তু মাহফুজ স্যার আসার পর থেকে পুলিশ সদস্যদের এসব দুর্ভোগ লাঘবের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন। ব্যবস্থা করেছেন খেলাধুলার। শীত মৌসুমের রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য থানা কমপ্লেক্সে পাকা ব্যাডমিন্টন ইয়ার্ড তৈরি করে দিয়েছেন। টয়লেটে টাইলস্ বসানোর ব্যবস্থা করেছেন। ডাইনিংসহ নতুন মেস নির্মাণ করছেন। ওয়ারলেস অপারেটরের জন্য নতুন ওয়ালেস রুম তৈরি করেছেন।”

ব্যক্তি হিসেবেও মাহফুজুর রহমান পরিচিত সদালাপী ও মিষ্টভাষী হিসেবে। কখনোই নিম্নপদস্থ কাউকে গালিগালাজ করেন না।

তার আচরণ ও কাজকর্মে আধুনিক পুলিশের ছোঁয়া পরিলক্ষিত হয়। সহকর্মীরা তার আচরণে সন্তুষ্ট এবং কৃতজ্ঞ।

তবে এসব মানবিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ওসি মাহফুজুর ভুলে যাননি পেশাগত দায়িত্বের কথা। এলাকার বিভিন্ন বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে তিনি সজাগ। তার নেতৃত্বেই গত ৪ নভেম্বর অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ১০ মামলার আসামি শফিউদ্দিন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে কালীগঞ্জের পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে “কালীগঞ্জের মাদক সম্রাজ্ঞী” হিসেবে খ্যাত ৩০ মামলার আসামি লাভলী আক্তারকে। এছাড়াও, মাদক ও অস্ত্রসহ আরও বেশ কয়েকজন স্থানীয় আসামিকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, কোনো চাওয়া-পাওয়ার জন্য নয়, পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ভালোলাগার জায়গা থেকে কাজগুলো শুরু করেছি। পুলিশ সদস্যরা সারারাত ডিউটি করে ভাল পরিবেশে থাকতে না পেরে মনোকষ্টে ভোগেন।

তিনি বলেন, আমি পরিচ্ছন্নতা ও শৃংখলাকে ভালোবাসি। নিজেও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে পছন্দ করি তাই ফোর্সদেরকেও এসবের আওতায় আনতে চাই।