ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্যাগের মনোভাব নিয়ে ছাত্রলীগকে কাজ করতে হবে।’

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে মানবসেবায় কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘ত্যাগের মনোভাব নিয়ে ছাত্রলীগকে কাজ করতে হবে। আদর্শ না থাকলে সাময়িক নেতা হওয়া গেলেও বেশিদূর এগোনো যায় না। ছাত্রলীগকে কাজের মাধ্যমেই মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকতে হবে।’

শনিবার বিকেলে গণভবনে শোকের মাস আগস্টের শেষ দিনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ স্মরণে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রলীগের আজীবন সদস্য শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষক-শ্রমিককে এক করে সমগ্র বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করে অর্থনৈতিক মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে কারণে তিনি বাকশাল অর্থাৎ বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বাকশাল কার্যকর করা গেলে বাংলাদেশ অনেক আগেই বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে থাকতো। কিন্তু, তার আগেই বাকশালের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো এবং জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো।’

ছাত্রলীগের বর্তমান নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে জাতির পিতার আদর্শের কর্মী হিসেবে সব চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে নীতি-আদর্শ ও দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে হবে। ত্যাগের মনোভাব নিয়ে ছাত্রলীগকে কাজ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ অনেকে বাকশাল বাকশাল বলে গালি দেয়। আসলে বাকশালটা কী ছিল? এটা ছিল কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ। এই বাংলাদেশ ছিল কৃষি প্রধান দেশ। কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাদ্য উৎপাদন করে। এই কৃষক-শ্রমিকদের একত্রিত করতেই বাকশাল গঠন করা হয়। দেশের সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশটাকে অর্থনৈতিক মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।’

তিনি বলেন, ‘তখন আমাদের ১৯টি মহকুমা ছিল। সেগুলো ভাগ করে প্রত্যেকটি মহাকুমাকে জেলায় রুপান্তিত করে ৬০টি জেলা করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। গণতন্ত্র এবং ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রেীয়করণ করে তৃণমূলে সেবাটা যেন পৌঁছে দেয়া যায়, সাধারণ মানুষ যেন কথা বলতে পারে সে ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন তিনি। যারা জমিতে শ্রম দিবে তারা উৎপাদিত পণ্যের একটি অংশ পাবে, যারা জমির মালিক তারা একটা অংশ পাবে এবং কো-অপারেটিভের মাধ্যমে সরকারের কাছে একটা অংশ আসবে। যেন কখনো কেউ বঞ্চিত না হয়। অন্তত যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলায় তারা যেন ন্যায্যমূল্য পায়, তারা যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা যে কর্মসূচিগুলোর ঘোষণা দিয়েছিলেন, এগুলো যদি তিনি বাস্তবায়ন করে যেতে পারতেন, তাহলে বাংলাদেশে অনেক আগেই বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে আসীন হতো। জাতির পিতার যখন দেশকে এগিয়ে নিতে চাইলেন,কর্মসূচি ঘোষণা করলেন, তখন বাকশালের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো হলো।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের সাতজন সংসদ সদস্যসহ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হলো। একটার পর একটা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু হলো। পাটের গুদামে আগুন, থানা লুটপাট থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত চক্রান্ত করে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়ে মানুষ হত্যা করা হলো। তাঁর পুরো কাজগুলো বাধাগ্রস্ত করা, লক্ষ্যটাকে নস্যাৎ করা এবং স্বাধীনতার ভিশনটাকে যখন ধ্বংস করার চেষ্টা করা হলো, তখন তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন।’

মুক্তিযুদ্ধের পরে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখনও দেশে ষড়যন্ত্র থেমে যায়নি। নানা চক্রান্ত চলছিল এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য। এটা ভুলে গেলে চলবে না আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বা আমাদের সংগ্রামের পথে অনেক দালাল ছিল, অনেক লোকই ছিল যারা ওই পাকিস্তানিপ্রেমীই ছিল। যারা কখনো বাংলাদেশকে ভালবাসেনি, বাংলার মানুষকে ভালবাসেনি, বাংলার মানুষের কল্যাণ চায়নি। আর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাদের ভূমিকা সকলেরই জানা। তারাই যুদ্ধাপরাধী, তারাই এদেশের স্বাধীনতাবিরোধী। যাদের বিচারটাও জাতির পিতা শুরু করেছিল। কাজেই জাতির পিতা বেঁচে থাকলে ১০ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটা উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠত।’

ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতির পিতার হাত ধরে। ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের নাম জড়িয়ে আছে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের তালিকা যদি দেখি, তাহলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর নামই বেশি পাওয়া যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আদর্শ না থাকলে নেতা হওয়া যায় না। সব কিছু ত্যাগ করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারলে, মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে পারলে সেটাই বড় সম্পদ। আদর্শবিহীন সাময়িক সময়ের নেতা হওয়া যায়। কিন্তু, ছাত্রলীগকে মানুষের হৃদয়ে আজীবন বেঁচে থাকতে হবে। এজন্য ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে কাজ করতে হবে। সব চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে নীতি-আদর্শ নিয়ে দেশের কাজ করতে হবে।’

এ সময় নিজের রাজনৈতিক জীবন ছাত্রলীগের মাধ্যমে সূচনা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ সম্পর্কে জানতে হলে তাকে নিয়ে লেখাপড়া করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা বেই কারাগারের রোজনামচা বের করা হয়েছে। তার আদর্শ সম্পর্কে জানতে হলে তার লেখা বইগুলো পড়তে হবে। বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়তে হবে।’

ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন প্রমুখ।

বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতাকমীরা সকাল থেকেই গণভবনের সামনে ভিড় জমান।

ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের। বিকেলে এক পর্যায়ে গেটের সামনে অপেক্ষমান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:১৯:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০১৯
৪১৭ Time View

ত্যাগের মনোভাব নিয়ে ছাত্রলীগকে কাজ করতে হবে।’

আপডেট সময় : ০৯:১৯:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০১৯

সবুজদেশ ডেস্কঃ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে মানবসেবায় কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘ত্যাগের মনোভাব নিয়ে ছাত্রলীগকে কাজ করতে হবে। আদর্শ না থাকলে সাময়িক নেতা হওয়া গেলেও বেশিদূর এগোনো যায় না। ছাত্রলীগকে কাজের মাধ্যমেই মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকতে হবে।’

শনিবার বিকেলে গণভবনে শোকের মাস আগস্টের শেষ দিনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ স্মরণে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রলীগের আজীবন সদস্য শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষক-শ্রমিককে এক করে সমগ্র বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করে অর্থনৈতিক মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে কারণে তিনি বাকশাল অর্থাৎ বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বাকশাল কার্যকর করা গেলে বাংলাদেশ অনেক আগেই বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে থাকতো। কিন্তু, তার আগেই বাকশালের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো এবং জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো।’

ছাত্রলীগের বর্তমান নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে জাতির পিতার আদর্শের কর্মী হিসেবে সব চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে নীতি-আদর্শ ও দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে হবে। ত্যাগের মনোভাব নিয়ে ছাত্রলীগকে কাজ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ অনেকে বাকশাল বাকশাল বলে গালি দেয়। আসলে বাকশালটা কী ছিল? এটা ছিল কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ। এই বাংলাদেশ ছিল কৃষি প্রধান দেশ। কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাদ্য উৎপাদন করে। এই কৃষক-শ্রমিকদের একত্রিত করতেই বাকশাল গঠন করা হয়। দেশের সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশটাকে অর্থনৈতিক মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।’

তিনি বলেন, ‘তখন আমাদের ১৯টি মহকুমা ছিল। সেগুলো ভাগ করে প্রত্যেকটি মহাকুমাকে জেলায় রুপান্তিত করে ৬০টি জেলা করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। গণতন্ত্র এবং ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রেীয়করণ করে তৃণমূলে সেবাটা যেন পৌঁছে দেয়া যায়, সাধারণ মানুষ যেন কথা বলতে পারে সে ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন তিনি। যারা জমিতে শ্রম দিবে তারা উৎপাদিত পণ্যের একটি অংশ পাবে, যারা জমির মালিক তারা একটা অংশ পাবে এবং কো-অপারেটিভের মাধ্যমে সরকারের কাছে একটা অংশ আসবে। যেন কখনো কেউ বঞ্চিত না হয়। অন্তত যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলায় তারা যেন ন্যায্যমূল্য পায়, তারা যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা যে কর্মসূচিগুলোর ঘোষণা দিয়েছিলেন, এগুলো যদি তিনি বাস্তবায়ন করে যেতে পারতেন, তাহলে বাংলাদেশে অনেক আগেই বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে আসীন হতো। জাতির পিতার যখন দেশকে এগিয়ে নিতে চাইলেন,কর্মসূচি ঘোষণা করলেন, তখন বাকশালের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো হলো।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের সাতজন সংসদ সদস্যসহ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হলো। একটার পর একটা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু হলো। পাটের গুদামে আগুন, থানা লুটপাট থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত চক্রান্ত করে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়ে মানুষ হত্যা করা হলো। তাঁর পুরো কাজগুলো বাধাগ্রস্ত করা, লক্ষ্যটাকে নস্যাৎ করা এবং স্বাধীনতার ভিশনটাকে যখন ধ্বংস করার চেষ্টা করা হলো, তখন তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন।’

মুক্তিযুদ্ধের পরে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখনও দেশে ষড়যন্ত্র থেমে যায়নি। নানা চক্রান্ত চলছিল এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য। এটা ভুলে গেলে চলবে না আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বা আমাদের সংগ্রামের পথে অনেক দালাল ছিল, অনেক লোকই ছিল যারা ওই পাকিস্তানিপ্রেমীই ছিল। যারা কখনো বাংলাদেশকে ভালবাসেনি, বাংলার মানুষকে ভালবাসেনি, বাংলার মানুষের কল্যাণ চায়নি। আর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাদের ভূমিকা সকলেরই জানা। তারাই যুদ্ধাপরাধী, তারাই এদেশের স্বাধীনতাবিরোধী। যাদের বিচারটাও জাতির পিতা শুরু করেছিল। কাজেই জাতির পিতা বেঁচে থাকলে ১০ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটা উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠত।’

ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতির পিতার হাত ধরে। ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের নাম জড়িয়ে আছে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের তালিকা যদি দেখি, তাহলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর নামই বেশি পাওয়া যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আদর্শ না থাকলে নেতা হওয়া যায় না। সব কিছু ত্যাগ করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারলে, মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে পারলে সেটাই বড় সম্পদ। আদর্শবিহীন সাময়িক সময়ের নেতা হওয়া যায়। কিন্তু, ছাত্রলীগকে মানুষের হৃদয়ে আজীবন বেঁচে থাকতে হবে। এজন্য ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে কাজ করতে হবে। সব চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে নীতি-আদর্শ নিয়ে দেশের কাজ করতে হবে।’

এ সময় নিজের রাজনৈতিক জীবন ছাত্রলীগের মাধ্যমে সূচনা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ সম্পর্কে জানতে হলে তাকে নিয়ে লেখাপড়া করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা বেই কারাগারের রোজনামচা বের করা হয়েছে। তার আদর্শ সম্পর্কে জানতে হলে তার লেখা বইগুলো পড়তে হবে। বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়তে হবে।’

ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন প্রমুখ।

বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতাকমীরা সকাল থেকেই গণভবনের সামনে ভিড় জমান।

ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের। বিকেলে এক পর্যায়ে গেটের সামনে অপেক্ষমান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।