ঢাকা ০১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দরকার এখন আস্থা ও নির্ভরতার একটি হাত, কোথায় দাড়াবে খালেদুর?

Reporter Name

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ভাগ্যহত খায়রুল ইসলাম ছিলেন নন এপওিভুক্ত হাইস্কুলের শিক্ষক। ২২ বছর বিনা বেতনে শিক্ষকতা করে গেছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার লক্ষিপুর হাসানবাগ হাই স্কুলে। সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা না পেয়ে একরাশ হতাশা বুকে নিয়ে গত ২১ মার্চ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে থাকতেন খায়রুল। ঝিনাইদহ শহরে প্রাইভেট পড়িয়ে চলতো তার সংসার।

এদিকে সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির আকস্মিক মৃত্যুতে হতাশার মহাসমুদ্রে পড়েছে তার পরিবার। ছোট্র সংসার হলেও আয়রোজগারের কোন পথ রেখে যাননি খায়রুল। পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া জমিগুলো অভাবের সংসার চালাতে গিয়ে ৩ লাখ টাকায় বন্ধক রেখে গেছেন। ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন দোকানে দেনায় ভরা।

পিতার অকালে চলে যাওয়া মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ছেদ পড়ে মেধাবী ছাত্র খালেদুর রহমানের। মানসিক যন্ত্রনায় ভেঙ্গে পড়েন। কোন মেডিকেলে সুযোগ পাননি তিনি। পিতার মৃত্যু শোকে কাতর একমাত্র সন্তান খালেদুর এখন ইসলামী ভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র। স্কুল ও কলেজ জীবনে খালেদুর মেধাবৃত্তি ও ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুসহ দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তায় পড়ালেখা চালিয়ে এসেছেন। পিতা খায়রুল ইসলাম মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ছেলেকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। এখন নির্ভরতার বড় আশ্রয় পিতা নামক সেই বটবৃক্ষের ছায়া নেই খালেদের মাথার উপর। কোথায় দাড়াবে এখন খালেদ? সামনে ডেন্টাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের ইচ্ছা রয়েছে খালেদের। কিন্তু এখন বড় বাধা অর্থ সংকট। মা ইতি খাতুন ও ৮ বছরের ছোট বোন মুশফিকুন্নাহারকে নিয়ে শহরের ভাড়া বাড়িতে বেঁচে থাকার লাড়াই সংগ্রাম করার বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই খালেদের।

স্বামী হারা সদ্য বিধবা ইতি খাতুন জানান, আদর্শপাড়ায় সাড়ে তিন হাজার টাকার ভাড়া বাড়িতে থাকেন তারা। সংসার চালাতে যা যা দরকার সব কিছুই করতেন তার স্বামী। সে কিছুই বুঝতে দেয়নি।

এখন স্বামীর মৃত্যুর পর ঘর ভাড়া, বাজার খরচ, পানি, বিদ্যুৎ ও ময়লার বিল কোথা থেকে দেব তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ভর করছে। তার উপর স্বামী বহু দেনা করে রেখে গেছেন। সেগুলো পরিশোধ করার ক্ষমতাও আমার নেই। এখন যদি কেও একটি নির্ভরতার হাত আমাদের মাথার উপর রাখতো তাহলে ছেলেটির উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত হতো।

ইতি খাতুন জানান, কেও যদি তার মেধাবী ছেলের পড়ালেখার দায়িত্ব নিত তাহলে তার মৃত পিতার স্বপ্ন পুরণ হতো। পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা ইবি ছাত্র খালেদুর রহমান ০১৭৩৪২১৯৩৬২, মা ইতি খাতুন ০১৭২২৯৫৩৭৭১ (বিকাশ নং)।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:১১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১
২২০ Time View

দরকার এখন আস্থা ও নির্ভরতার একটি হাত, কোথায় দাড়াবে খালেদুর?

আপডেট সময় : ০৮:১১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ভাগ্যহত খায়রুল ইসলাম ছিলেন নন এপওিভুক্ত হাইস্কুলের শিক্ষক। ২২ বছর বিনা বেতনে শিক্ষকতা করে গেছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার লক্ষিপুর হাসানবাগ হাই স্কুলে। সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা না পেয়ে একরাশ হতাশা বুকে নিয়ে গত ২১ মার্চ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে থাকতেন খায়রুল। ঝিনাইদহ শহরে প্রাইভেট পড়িয়ে চলতো তার সংসার।

এদিকে সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির আকস্মিক মৃত্যুতে হতাশার মহাসমুদ্রে পড়েছে তার পরিবার। ছোট্র সংসার হলেও আয়রোজগারের কোন পথ রেখে যাননি খায়রুল। পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া জমিগুলো অভাবের সংসার চালাতে গিয়ে ৩ লাখ টাকায় বন্ধক রেখে গেছেন। ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন দোকানে দেনায় ভরা।

পিতার অকালে চলে যাওয়া মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ছেদ পড়ে মেধাবী ছাত্র খালেদুর রহমানের। মানসিক যন্ত্রনায় ভেঙ্গে পড়েন। কোন মেডিকেলে সুযোগ পাননি তিনি। পিতার মৃত্যু শোকে কাতর একমাত্র সন্তান খালেদুর এখন ইসলামী ভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র। স্কুল ও কলেজ জীবনে খালেদুর মেধাবৃত্তি ও ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুসহ দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তায় পড়ালেখা চালিয়ে এসেছেন। পিতা খায়রুল ইসলাম মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ছেলেকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। এখন নির্ভরতার বড় আশ্রয় পিতা নামক সেই বটবৃক্ষের ছায়া নেই খালেদের মাথার উপর। কোথায় দাড়াবে এখন খালেদ? সামনে ডেন্টাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের ইচ্ছা রয়েছে খালেদের। কিন্তু এখন বড় বাধা অর্থ সংকট। মা ইতি খাতুন ও ৮ বছরের ছোট বোন মুশফিকুন্নাহারকে নিয়ে শহরের ভাড়া বাড়িতে বেঁচে থাকার লাড়াই সংগ্রাম করার বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই খালেদের।

স্বামী হারা সদ্য বিধবা ইতি খাতুন জানান, আদর্শপাড়ায় সাড়ে তিন হাজার টাকার ভাড়া বাড়িতে থাকেন তারা। সংসার চালাতে যা যা দরকার সব কিছুই করতেন তার স্বামী। সে কিছুই বুঝতে দেয়নি।

এখন স্বামীর মৃত্যুর পর ঘর ভাড়া, বাজার খরচ, পানি, বিদ্যুৎ ও ময়লার বিল কোথা থেকে দেব তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ভর করছে। তার উপর স্বামী বহু দেনা করে রেখে গেছেন। সেগুলো পরিশোধ করার ক্ষমতাও আমার নেই। এখন যদি কেও একটি নির্ভরতার হাত আমাদের মাথার উপর রাখতো তাহলে ছেলেটির উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত হতো।

ইতি খাতুন জানান, কেও যদি তার মেধাবী ছেলের পড়ালেখার দায়িত্ব নিত তাহলে তার মৃত পিতার স্বপ্ন পুরণ হতো। পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা ইবি ছাত্র খালেদুর রহমান ০১৭৩৪২১৯৩৬২, মা ইতি খাতুন ০১৭২২৯৫৩৭৭১ (বিকাশ নং)।