দুই কূটনীতিককে ডাকা হলো ঢাকায়
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েনে ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি বুঝতে’ আলোচনা করার জন্য কলকাতা ও আগরতলা মিশনের দুই শীর্ষ কূটনীতিককে ঢাকায় ডাকা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র ও কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন সূত্র জানায়, কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের অ্যাক্টিং ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ আশরাফুল শিকদার ও আগরতলায় অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদকে ঢাকায় ডেকেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কলকাতায় বাংলাদেশ মিশন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবারই (৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় চলে গেছেন আশরাফুল শিকদার। যদিও এই বিষয়ে অফিসিয়ালি কেউ কোনো বিবৃতি দেননি।
আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আরিফ মোহাম্মদও আগামীকাল শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকায় আসবেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশে কিছু রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে প্রচার করে ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যম।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভারতীয় গণমাধ্যমের মিথ্যা প্রচারণা আরও বেড়ে যায়। এতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে ক্ষুব্ধ হন সে দেশের হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠনের উগ্রপন্থিরা। সেখানকার বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হতে থাকে।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২ ডিসেম্বর ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায় হিন্দুত্ববাদী সমিতির সদস্যরা। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে হামলা করে এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলে ও ছিঁড়ে দেয়। পরে ভবনের সামনে থাকা সাইনবোর্ড ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
অন্যদিকে মুম্বাই ও কলকাতা হাইকমিশনের বাইরেও বিক্ষোভ করে হিন্দুত্ববাদীরা।
আগরতলার ঘটনায় বাংলাদেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের দাবি তোলে। পাশাপাশি ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। যদিও ভারত সরকার ঘটনাটি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
অনিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনের কনস্যুলার সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এদিকে এই টানাপড়েনের মধ্যে প্রতিদিন কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে স্মারকলিপি জমা দিচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। বৃহস্পতিবারও মিশনে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয় জাতীয় কংগ্রেস। যদিও তাদের বিক্ষোভ মিছিল মিশনের আশপাশে ঘেষতে দেনি কলকাতা পুলিশ। সেই মিছিল আটকে দেওয়া হয় বাংলাদেশ লাইব্রেরি অর্থাৎ পার্ক সার্কাস অঞ্চলে। পরে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি শুভংকর সরকারের নেতৃত্বে সাত প্রতিনিধি মিশনে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয়।
আগরতলার ঘটনার পর পুলিশের তরফে আরও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে কলকাতা মিশনে। নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে যান চলাচলে।
সবুজদেশ/এসইউ