ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই দিবসে যশোরে ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি

Reporter Name

যশোর প্রতিনিধিঃ

বাংলা বর্ষ পঞিকা অনুয়ারী আজ পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব। প্রকৃতিকে রাঙিয়ে দিয়ে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। আর এই বসন্তে বাড়তি রঙ যোগ করেছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস! বিশেষ এই দিনটি রাঙাতে থাকে নানা আয়োজন। যার মূল অনুসঙ্গ হলো রঙবেরঙের ফুল। ফলে দিবসটি এলেই কয়েকগুণ বেড়ে যায় ফুলের চাহিদা। আর এসব ফুলের চাহিদার ৬০-৭০ভাগ ফুলেই যোগান দিচ্ছে ফুলের ‘রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালী’। বসন্ত উৎসব ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গদখালী থেকে বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ ফুল সারা দেশে সরবরাহ হয়েছে।

গদখালী ফ্লাওয়ার সোসাইটি সূত্রে, বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসে দেশের বৃহৎ ফুলের পাইকারী বাজার থেকে ২০ কোটি টাকার গোলাপ, জারবেরা ও গ্লাডিওলাস সহ ১২ ধরনের ফুল দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে। এই দুই দিনই যেন ছিল ফুলচাষি ও ব্যাপারীদের কাছে সবচেয়ে আনন্দময় এক দিন। এদিনই বছরের সবচেয়ে বেশি ফুল কেনাবেচা হয়েছে। ফুলচাষিরা আশা করছেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আরো ৩০-৪০ কোটি বিক্রি হবে।

(১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার) যশোরের গদখালীর পাইকারী প্রতিটি গোলাপ ১৫-২০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রাতিটি গ্লাডিওলাস ৮-১০ টাকা, জারবেরা প্রতি পিচ ১০-১৫ টাকা, রজনীগন্ধা ৫-৬ টাকা, আঁটি জিপসি ২৫ টাকা, গাঁদার প্রতি হাজার ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

গদখালি এলাকার ফুল ব্যবসায়ী সালাম হোসেন জানান, যশোরের ফুলের চাহিদা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুল প্যাকেটজাত করে পটুয়াখালি সালাম হোসেন নামে এক পাইকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে।

সেলিম গাজী নামে এক ফুল চাষী বলেন, তিন বিঘা জমিতে জারবেরা ও গোলাপ চাষ করের্ছি। সারা বছর ফুল বিক্রি করলেও এই দুটি দিবসের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। বর্তমানে ফুলের বাজার ভালো। গত এক সপ্তাহ ধরে বেশি করে ফুলের পরিচর্যা করেছি। গত প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার ফুল বিক্রি করেছি।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি সভাপতি আবদুর রহিম জানান, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বসন্ত দিবস ও ভালোবাসা দিবসের ফুল বিক্রি শুরু হয়েছে। দেশের ফুলের চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ সরবরাহ হয় যশোরের গদখালি থেকে।

তিনি জানান, বিভিন্ন দিবসে সারাদেশে যে পরিমাণ ফুল বেচাকেনা হয় তার বেশির ভাগই যশোরের। সারা বছর ফুল উৎপাদন করলেও বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস ও ২১ ফেব্রুয়ারি এই তিন দিবসকে ঘিরেই মূল লক্ষ্য থাকে ফুলচাষিদের। আর এ তিনটি দিবসে ফুল বিক্রি করেই মূলত সারা বছরের লাভ-ক্ষতির হিসাব মেলান এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সেখ এমদাদ হোসেন জানান, যশোর জেলার আট উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়। তার মধ্যে শুধুমাত্রই ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি-পানিসারায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কৃষক ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফুলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। অন্যবারের চেয়ে এবার ভালো ফুল বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৭:০২:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
৫৬১ Time View

দুই দিবসে যশোরে ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি

আপডেট সময় : ০৭:০২:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০

যশোর প্রতিনিধিঃ

বাংলা বর্ষ পঞিকা অনুয়ারী আজ পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব। প্রকৃতিকে রাঙিয়ে দিয়ে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। আর এই বসন্তে বাড়তি রঙ যোগ করেছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস! বিশেষ এই দিনটি রাঙাতে থাকে নানা আয়োজন। যার মূল অনুসঙ্গ হলো রঙবেরঙের ফুল। ফলে দিবসটি এলেই কয়েকগুণ বেড়ে যায় ফুলের চাহিদা। আর এসব ফুলের চাহিদার ৬০-৭০ভাগ ফুলেই যোগান দিচ্ছে ফুলের ‘রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালী’। বসন্ত উৎসব ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গদখালী থেকে বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ ফুল সারা দেশে সরবরাহ হয়েছে।

গদখালী ফ্লাওয়ার সোসাইটি সূত্রে, বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসে দেশের বৃহৎ ফুলের পাইকারী বাজার থেকে ২০ কোটি টাকার গোলাপ, জারবেরা ও গ্লাডিওলাস সহ ১২ ধরনের ফুল দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে। এই দুই দিনই যেন ছিল ফুলচাষি ও ব্যাপারীদের কাছে সবচেয়ে আনন্দময় এক দিন। এদিনই বছরের সবচেয়ে বেশি ফুল কেনাবেচা হয়েছে। ফুলচাষিরা আশা করছেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আরো ৩০-৪০ কোটি বিক্রি হবে।

(১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার) যশোরের গদখালীর পাইকারী প্রতিটি গোলাপ ১৫-২০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রাতিটি গ্লাডিওলাস ৮-১০ টাকা, জারবেরা প্রতি পিচ ১০-১৫ টাকা, রজনীগন্ধা ৫-৬ টাকা, আঁটি জিপসি ২৫ টাকা, গাঁদার প্রতি হাজার ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

গদখালি এলাকার ফুল ব্যবসায়ী সালাম হোসেন জানান, যশোরের ফুলের চাহিদা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুল প্যাকেটজাত করে পটুয়াখালি সালাম হোসেন নামে এক পাইকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে।

সেলিম গাজী নামে এক ফুল চাষী বলেন, তিন বিঘা জমিতে জারবেরা ও গোলাপ চাষ করের্ছি। সারা বছর ফুল বিক্রি করলেও এই দুটি দিবসের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। বর্তমানে ফুলের বাজার ভালো। গত এক সপ্তাহ ধরে বেশি করে ফুলের পরিচর্যা করেছি। গত প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার ফুল বিক্রি করেছি।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি সভাপতি আবদুর রহিম জানান, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বসন্ত দিবস ও ভালোবাসা দিবসের ফুল বিক্রি শুরু হয়েছে। দেশের ফুলের চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ সরবরাহ হয় যশোরের গদখালি থেকে।

তিনি জানান, বিভিন্ন দিবসে সারাদেশে যে পরিমাণ ফুল বেচাকেনা হয় তার বেশির ভাগই যশোরের। সারা বছর ফুল উৎপাদন করলেও বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস ও ২১ ফেব্রুয়ারি এই তিন দিবসকে ঘিরেই মূল লক্ষ্য থাকে ফুলচাষিদের। আর এ তিনটি দিবসে ফুল বিক্রি করেই মূলত সারা বছরের লাভ-ক্ষতির হিসাব মেলান এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সেখ এমদাদ হোসেন জানান, যশোর জেলার আট উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়। তার মধ্যে শুধুমাত্রই ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি-পানিসারায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কৃষক ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফুলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। অন্যবারের চেয়ে এবার ভালো ফুল বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী।