বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১২ জনে। নিহতদের মধ্যে ৫ জনই যশোর এমএম কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শিক্ষা জীবনের শেষ পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে প্রাণ গেল তাদের।

উদ্ধারের সময় হঠাৎ আনুমানিক ৫৫ বছরের একজনকে বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এসময় তাকে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে চাইলে তিনি যেতে রাজি হননি। প্রায় ১০ মিনিট দুর্ঘটনাস্থলে বসে ছিলেন।

তিনি বলেন, আমাকে শুধু একটু পানি দেন। আমার দুই পাশে দুইজনই নিহত হয়েছে। আমি একা বেঁচে ছিলাম। খুব কষ্ট হয়েছে। এরপর আর কিছু বলতে পারেননি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার মাগুরা গামী জিকে পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো গ-১১০২১৪) বাসটি যাত্রী নিয়ে যশোর থেকে মাগুরার দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বাসটি বারোবাজার পার হয়ে আমজাদ আলী ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌছালে বিপরীত থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহি বাসটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার উপর আড়াআড়ি হয়ে উল্টে পড়ে। এতে যাত্রীরা হাতহত হন। এঘটনায় এতে সড়কটির সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলের উভয় পাশে শত শত বাস ট্রাক আটকে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় জনতার সাথে কালীগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে।

নিহতরা হলেন- কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান (২২), ভাটপাড়া গ্রামের রনজিত দাসের ছেলে সনাতন দাশ (২৫), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে রেশমা (২৬), আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ গ্রামের জান্নাতুল বিশ্বাসের ছেলে ওয়ালিউল আলম শুভ (২৫), শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া গ্রামের মৃত মহরম বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল আজিজ (৭৫), সদর উপজেলার নাথকুন্ডু গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে ইউনুস আলী (৩২), বাসের ড্রাইভার মাগুরা জেলার উজ্জল হোসেন (৩৫), কোটচাঁদপুর উপজেলার হরিণদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হারুনুর রশিদ সোহাগ (২৪), কালীগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ (২৬), যশোরের মনিরামপুর এলাকার শিলা খাতুন (২৮) ও ভাসুরের মেয়ে খাদিজা খাতুন (৭) ও নড়াইলের আব্দুর রশিদ মোড়ল।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, নিহতদের ১২ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here