কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মার দুর্গম চর রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী দুই ইউনিয়নে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো এই চরাঞ্চলটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ এর উদ্বোধন করেন দৌলতপুর-১ আসনের সংসদ আ.কা.ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ এমপি।
রোববার বেলা ১১টায় ভারত সীমান্ত ঘেঁষে এই দুই ইউনিয়নের গ্রাম গুলোতে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়ন। এখানেই বসবাস করেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ভারত সীমান্ত ঘেঁষে এসব গ্রাম পদ্মা নদীর কারণে মূল ভু-খণ্ড থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি কারণেই নৌকা যোগে যাতাযাত করেন এখানকার মানুষ। গ্রীষ্ম মৌসুমে চারিদিকে শুধু ধু-ধু বালুচরই চোখে পড়ে এখানে।
এসময় চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে গ্রামগুলো পরিণত হয় ভুতুড়ে জনপদে। আলোর ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয় বাজার গুলোও প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। দিনে সূর্যের আলো থাকলেও রাতের অন্ধকার দূর করতে বিদ্যুতের আলো এই অঞ্চলের মানুষের কাছে ছিল স্বপ্নের মত। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে মুখে হাঁসি ফুটেছে চরাঞ্চলের মানুষের।
নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডলের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দৌলতপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আ. কা. ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ এমপি, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মহিউদ্দিন, কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সোহরাব উদ্দিন, দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ মামুন, কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি রেজওয়ান আলী খান। জেলা পরিষদের সদস্য নাসির উদ্দিন মাষ্টার প্রমুখসহ অন্যান্যরা। এসময় দুই ইউনিয়নে ২২১টি নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়।রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন এলাকার বাসিন্দা কামাল বলেন,পদ্মার এই দুর্গম চরে বিদ্যুতের আলো আসবে তা কখনই ভাবিনি। আলোর দেখা পাওয়ায় খুশি আমরা।
একই এলাকার মিজান বলেন,এ বিদ্যুত সংযোগ চরাঞ্চল এগিয়ে যাবে। সামগ্রিক উন্নয়নের সাথে সাথে চরাঞ্চলের মানুষের রাস্তাঘাট চিকিৎসাসহ তাদের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করায় এ সরকারকে ধন্যবাদ জানান তারা।
কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সোহরাব উদ্দিন বলেন, দুর্গম এ চরে বিদ্যুতের লাইন স্থাপন চ্যালেঞ্জিং ছিল। পদ্মা নদীর মাঝ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে লাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারপরও আমরা এই কাজটি করতে পেরেছি। এতে চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন তিনি।