ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :

সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের মাঝপাড়া মসজিদের পেছনে পাঁচটি পুকুরে বিপুল পরিমাণ চাল পাওয়া গেছে; যে চাল ঈদের আগে দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য (ভিজিএফ) দিয়েছিল সরকার। স্থানীয়রা বলছেন, সোমবার ভরতপুর থেকে কিছু লোক বেড়াতে এসেছিলেন এই গ্রামে। তারা পুকুরের পানিতে দুর্গন্ধের কারণ জানতে চান স্থানীয়দের কাছে। পরে গ্রামবাসী পুকুরে নেমে পচা চালের সন্ধান পান। এই পুকুরগুলোর দুই পাশে দুই ইউপি সদস্যের বাড়ি। একজন হলেন মহিলা ইউপি সদস্য শাবানা বেগম; আরেকজনের নাম আহাম্মদ আলী। গ্রামবাসী ধারণা করছেন, পুকুরে ফেলা চালগুলো সরকারের দেওয়া ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এসেছিল। আত্মসাৎ বা অবৈধভাবে কেনা-বেচা করতে ব্যর্থ হয়ে চাল পুকুরে ফেলা হয়েছে। সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য শাবানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। আহাম্মদ আলী মেম্বার টেলিফোনে বলেন, ‘আমি কালীগঞ্জে আছি। পরে কথা হবে।’ মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি এখানে এসেছি। উনি আমাকে তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করতে বলেছেন।’ ‘তবে আমি প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল বিতরণের পর সবুজ নামে এক ব্যক্তি দুই হাজার ৬০০ কেজি চাল কিনে এই গ্রামের আজিজুলের কাছে বিক্রি করেছে। গণমাধ্যমের তৎপরতার কারণে ভয়ে আজিজুল সেই চাল পুকুরে ফেলে দিয়েছে।’ পুকুরে ফেলা চাল যে সরকারি বরাদ্দ- এই কথা চেয়ারম্যান নিশ্চিত করেন। আর চাল কেনা-বেচার কথাও স্বীকার করেছেন সবুজ। তিনি বলেন, ‘আমি ৬৫ হাজার টাকার চাল আজিজুলের কাছে বিক্রি করেছি।’ যোগাযোগ করা হলে আজিজুল দাবি করেন, তিনি আত্মীয় বাড়িতে গেছেন। তবে আজিজুলের স্ত্রী বলেন, ‘সে সকালে চাতালে গেছে। দুপুরে বাড়িতে খেতে আসেনি।’ ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজকুমার নাথ বলেন, ‘আমি ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পাঠিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here