ঢাকা ০৭:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেবর-ভাবির সমঝোতা, কাদের চেয়ারম্যান, রওশন বিরোধী দলীয় নেতা

Reporter Name

ঢাকাঃ

জিএম কাদেরই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। আর জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হবেন পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।

এ তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা।

রোববার বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে পার্টির চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

এর আগে শনিবার রাতে জাতীয় পার্টিতে সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়ে বৈঠক করেন চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদের পক্ষের নেতারা। ওই বৈঠকে এই সমঝোতা হয়।

বৈঠকে দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা উভয়পক্ষে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব বসে রংপুর-৩ আসনে প্রার্থীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান রাঙ্গা।

রাঙ্গা জানান, ওই বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী কাউন্সিল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন জিএম কাদের। কাউন্সিলে দলের নেতৃত্ব ঠিক হবে। আর দ্বিতীয় বারের মতো বিরোধী নেতা হচ্ছেন রওশন এরশাদ।

শনিবার রাতে বারিধারা ক্লাবে রুদ্ধদ্বার এই বৈঠক হয়। রাত সাড়ে ৯টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে উত্তরণের উপায় বের করতেই মূলত এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

দলের চেয়ারম্যান, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচন এবং রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এসএম ফয়সল চিশতী যুগান্তরকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চলমান সংকট নিরসনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের মধ্যে কিছু বিষয়ে মতানৈক্য ছিল। আমরা তা দূর করেছি।’

বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘এখন থেকে পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন জিএম কাদের। ম্যাডাম (রওশন এরশাদ) বিরোধীদলীয় নেতা হবেন। আর রংপুর-৩ আসনে দলের প্রার্থী হবেন সাদ এরশাদ।’

সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে বেলা ১টায় সংসদ ভবনে বিরোধীদলীয় উপনেতার কক্ষে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে রওশন এরশাদকে সর্বসম্মতভাবে নির্বাচিত করে তা লিখিতভাবে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে অবহিত করা হবে।

জিএম কাদের, রওশন এরশাদ এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা ছাড়াও রাতের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক চুন্নু, একেএম সেলিম ওসমান, কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী এবং এসএম ফয়সল চিশতী।

উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হওয়া নিয়ে অভ্যন্তরীণ সংকট তৈরি হয়। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির একাংশ রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।

পরে ওইদিনই সংবাদ সম্মেলন ডেকে জিএম কাদের বলেন, ‘রওশন এরশাদকে সম্মান করি, যতটুকু শুনেছি, তিনি নিজ থেকে নিজের কথা বলেননি। শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে অস্থির হওয়ার কিছু নেই। জাতীয় পার্টি ভাঙেনি। কোনো ভাঙনের মুখে পড়েনি। যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো ঘোষণা দিলেই তো তা বাস্তবায়িত হয় না।’

এর আগে মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় পার্টির দলীয় প্যাডে নিজেকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদে নিয়োগ দিতে স্পিকারকে চিঠি দেন জিএম কাদের।

পরদিন বুধবার জিএম কাদেরের চিঠির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা গ্রহণ না করার অনুরোধ জানিয়ে পাল্টা চিঠি দেন রওশন এরশাদ।

About Author Information
আপডেট সময় : ০১:২৫:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
৩৪৮ Time View

দেবর-ভাবির সমঝোতা, কাদের চেয়ারম্যান, রওশন বিরোধী দলীয় নেতা

আপডেট সময় : ০১:২৫:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঢাকাঃ

জিএম কাদেরই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। আর জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হবেন পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।

এ তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা।

রোববার বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে পার্টির চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

এর আগে শনিবার রাতে জাতীয় পার্টিতে সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়ে বৈঠক করেন চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদের পক্ষের নেতারা। ওই বৈঠকে এই সমঝোতা হয়।

বৈঠকে দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা উভয়পক্ষে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব বসে রংপুর-৩ আসনে প্রার্থীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান রাঙ্গা।

রাঙ্গা জানান, ওই বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী কাউন্সিল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন জিএম কাদের। কাউন্সিলে দলের নেতৃত্ব ঠিক হবে। আর দ্বিতীয় বারের মতো বিরোধী নেতা হচ্ছেন রওশন এরশাদ।

শনিবার রাতে বারিধারা ক্লাবে রুদ্ধদ্বার এই বৈঠক হয়। রাত সাড়ে ৯টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে উত্তরণের উপায় বের করতেই মূলত এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

দলের চেয়ারম্যান, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচন এবং রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এসএম ফয়সল চিশতী যুগান্তরকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চলমান সংকট নিরসনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের মধ্যে কিছু বিষয়ে মতানৈক্য ছিল। আমরা তা দূর করেছি।’

বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘এখন থেকে পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন জিএম কাদের। ম্যাডাম (রওশন এরশাদ) বিরোধীদলীয় নেতা হবেন। আর রংপুর-৩ আসনে দলের প্রার্থী হবেন সাদ এরশাদ।’

সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে বেলা ১টায় সংসদ ভবনে বিরোধীদলীয় উপনেতার কক্ষে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে রওশন এরশাদকে সর্বসম্মতভাবে নির্বাচিত করে তা লিখিতভাবে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে অবহিত করা হবে।

জিএম কাদের, রওশন এরশাদ এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা ছাড়াও রাতের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক চুন্নু, একেএম সেলিম ওসমান, কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী এবং এসএম ফয়সল চিশতী।

উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হওয়া নিয়ে অভ্যন্তরীণ সংকট তৈরি হয়। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির একাংশ রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।

পরে ওইদিনই সংবাদ সম্মেলন ডেকে জিএম কাদের বলেন, ‘রওশন এরশাদকে সম্মান করি, যতটুকু শুনেছি, তিনি নিজ থেকে নিজের কথা বলেননি। শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে অস্থির হওয়ার কিছু নেই। জাতীয় পার্টি ভাঙেনি। কোনো ভাঙনের মুখে পড়েনি। যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো ঘোষণা দিলেই তো তা বাস্তবায়িত হয় না।’

এর আগে মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় পার্টির দলীয় প্যাডে নিজেকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদে নিয়োগ দিতে স্পিকারকে চিঠি দেন জিএম কাদের।

পরদিন বুধবার জিএম কাদেরের চিঠির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা গ্রহণ না করার অনুরোধ জানিয়ে পাল্টা চিঠি দেন রওশন এরশাদ।