ঢাকা ০৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান: সেনাপ্রধানের

 

নিজেদের মধ্যে পরস্পরে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এটা বন্ধ না করলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন তিনি। নিজের কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেছেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকেই দেশ এগোচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শহীদ সেনা দিবসে রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত ফটো এক্সিবিশনে তিনি এসব কথা বলেন।

সবাইকে এক থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, হানাহানি না করে দিন শেষে দেশ ও জাতির দিকে খেয়াল করে এক থাকতে হবে। যদি নিজেরা কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, দেশ ও জাতির সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। আমি সতর্ক করে দিচ্ছি, পরে বলতে পারবেন না যে সতর্ক করিনি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যতটুকু পারছেন সাহায্য করছেন দেশকে ইউনাইটেড রাখার।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, আজকে একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই- আমার অন্য কোনো আকাঙ্ক্ষা নাই, একটাই আকাঙ্ক্ষা, দেশ ও জাতিকে সুন্দর জায়গায় রেখে সেনা নিবাসে ফেরত আসব।

সেনাপ্রধান বলেন, আজকে পুলিশ সদস্য কাজ করছে না। কারণ তাদের অনেকেই জেলে। র‍্যাব, বিজিবি প্যানিকড। দেশের শান্তিরক্ষার দায়িত্ব শুধু সেনাবাহিনীর না। আনসার বাহিনী আছে। ৩০ হাজার সেনাবাহিনী সদস্য নিয়ে আমরা কীভাবে করব?

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা নির্বাচনের দিকেই ধাবিত হচ্ছি, ১৮ মাসের কথা বলেছিলাম। ডিসেম্বরের মধ্যে একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করছি।

এ সময় তিনি সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করবেন না। সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানের প্রতি বিদ্বেষ কারো কারো, কী কারণে জানি না। আমাদের সাহায্য করেন, আক্রমণ নয়। আমাদের উপদেশ দেন, আমি সবার কাছে শরণাপন্ন হই, আমরা ভালো উপদেশ গ্রহণ করব, আমরা এক থাকতে চাই, দেশ ও জাতিকে আমরা রক্ষা করতে চাই।

সেনাপ্রধান বলেন, সাত মাসে আমার অনেক হয়েছে। এনাফ ইজ এনাফ। আমি চাই আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ রেখে যেতে।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে ৫৭ জন চৌকস সেনাকে আমরা হারিয়েছি। আসার সময় ছবিগুলো দেখছিলাম, কিন্তু এই ছবিগুলোর চাক্ষুস সাক্ষী এই আমি। এই বিচারের প্রক্রিয়াকে নষ্ট করবেন না। যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা এটার যোগ্য। বাইরের শক্তি, রাজনৈতিক শক্তি এটার সাথে জড়িত কি না তা খুঁজে বের করে আনবেন। এটাকে যারা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করছেন তা কখনো মঙ্গল বয়ে আনবে না।

সেনাপ্রধান বলেন, কিছু কিছু সদস্যের দাবি, তারা ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত শাস্তি পেয়েছেন, অনেকে বলছেন তারা অযাচিত শাস্তি পেয়েছেন।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, বিন্দুমাত্র ছাড় নাই, ডিসিপ্লিন ফোর্সকে ডিসিপ্লিন থাকতে দেন। এই দেশের সব কিছু ভেঙে পড়লেও সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী টিকে আছে কারণ তাদের মধ্যে ডিসিপ্লিন আছে।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information

দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান: সেনাপ্রধানের

Update Time : ০২:১৬:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

নিজেদের মধ্যে পরস্পরে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এটা বন্ধ না করলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন তিনি। নিজের কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেছেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকেই দেশ এগোচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শহীদ সেনা দিবসে রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত ফটো এক্সিবিশনে তিনি এসব কথা বলেন।

সবাইকে এক থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, হানাহানি না করে দিন শেষে দেশ ও জাতির দিকে খেয়াল করে এক থাকতে হবে। যদি নিজেরা কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, দেশ ও জাতির সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। আমি সতর্ক করে দিচ্ছি, পরে বলতে পারবেন না যে সতর্ক করিনি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যতটুকু পারছেন সাহায্য করছেন দেশকে ইউনাইটেড রাখার।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, আজকে একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই- আমার অন্য কোনো আকাঙ্ক্ষা নাই, একটাই আকাঙ্ক্ষা, দেশ ও জাতিকে সুন্দর জায়গায় রেখে সেনা নিবাসে ফেরত আসব।

সেনাপ্রধান বলেন, আজকে পুলিশ সদস্য কাজ করছে না। কারণ তাদের অনেকেই জেলে। র‍্যাব, বিজিবি প্যানিকড। দেশের শান্তিরক্ষার দায়িত্ব শুধু সেনাবাহিনীর না। আনসার বাহিনী আছে। ৩০ হাজার সেনাবাহিনী সদস্য নিয়ে আমরা কীভাবে করব?

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা নির্বাচনের দিকেই ধাবিত হচ্ছি, ১৮ মাসের কথা বলেছিলাম। ডিসেম্বরের মধ্যে একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করছি।

এ সময় তিনি সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করবেন না। সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানের প্রতি বিদ্বেষ কারো কারো, কী কারণে জানি না। আমাদের সাহায্য করেন, আক্রমণ নয়। আমাদের উপদেশ দেন, আমি সবার কাছে শরণাপন্ন হই, আমরা ভালো উপদেশ গ্রহণ করব, আমরা এক থাকতে চাই, দেশ ও জাতিকে আমরা রক্ষা করতে চাই।

সেনাপ্রধান বলেন, সাত মাসে আমার অনেক হয়েছে। এনাফ ইজ এনাফ। আমি চাই আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ রেখে যেতে।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে ৫৭ জন চৌকস সেনাকে আমরা হারিয়েছি। আসার সময় ছবিগুলো দেখছিলাম, কিন্তু এই ছবিগুলোর চাক্ষুস সাক্ষী এই আমি। এই বিচারের প্রক্রিয়াকে নষ্ট করবেন না। যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা এটার যোগ্য। বাইরের শক্তি, রাজনৈতিক শক্তি এটার সাথে জড়িত কি না তা খুঁজে বের করে আনবেন। এটাকে যারা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করছেন তা কখনো মঙ্গল বয়ে আনবে না।

সেনাপ্রধান বলেন, কিছু কিছু সদস্যের দাবি, তারা ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত শাস্তি পেয়েছেন, অনেকে বলছেন তারা অযাচিত শাস্তি পেয়েছেন।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, বিন্দুমাত্র ছাড় নাই, ডিসিপ্লিন ফোর্সকে ডিসিপ্লিন থাকতে দেন। এই দেশের সব কিছু ভেঙে পড়লেও সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী টিকে আছে কারণ তাদের মধ্যে ডিসিপ্লিন আছে।

সবুজদেশ/এসইউ