ঢাকা ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের করোনাভাইরাস গবেষণা কিট নিয়ে কিছু কথা

Reporter Name

ডা. পেরু গোপাল বিশ্বাসঃ

বিজ্ঞানের বায়োলজিক্যাল শাখার একজন ক্ষুদ্র গবেষণা কর্মী হিসেবে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি খবর থেকে রোগ-ব্যাধি অথবা গবেষণার খবরগুলি আমাকে বেশি টানে। দেশে কিছুদিন যাবৎ করোনা ভাইরাস (COVID-19) ও GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট নিয়ে যে অনাকাঙ্খিত, অবৈজ্ঞানিক সমালোচনা হচ্ছে , সেটা নিয়ে মুখ না খুললে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আঙ্গুল তুলে বলবে, বাংলাদেশে বিজ্ঞানের গবেষণার বন্ধ এর জন্য তুমিও দায়ী, যখন বৈজ্ঞানিক নাম ধারী অবৈজ্ঞানিক মানুষ/কর্মকর্তারা বিজ্ঞানের গবেষণার পথ চিরতরে রুদ্ধ করেছিল, তখন তুমি বিজ্ঞানের গবেষণা কর্মী হয়েও চুপ ছিলে। আমার হয়তো কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই, কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ও আমার গবেষণার বিষয় সমন্বয় করে লেখার চেষ্টা করছি।

GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট উদ্ভাবন, একটি সময় উপযোগী, যুগান্তকারী আবিষ্কার, এর স্বপক্ষে অনেকগুলো ব্যাখ্যার মধ্যে, শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করব। মলিকুলার বায়োলজির জ্ঞানহীন কিছু মানুষ যথাযথ পরীক্ষা বাদেই বলেছেন, এটি এন্টি বডি টেস্ট কিট, এটি খুব কার্যকর নয়, ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসবে, কোন দেশ এই ধরনের কিট ব্যবহার করছে না ইত্যাদি। প্রথমেই উল্লেখ করি, এটি শুধুমাত্র এন্টিবডি টেস্ট কিট নয়, এটি এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত টেস্ট কিট, ফলে এটির ফলাফল ভালো আসবে আশা করাই যায়। সাধারণত তো ঘর গৃহস্থালীতে, আমরা যে সমস্ত ইলেকট্রনিক্স পণ্য (অথবা অন্য যেকোন পণ্য) ব্যবহার করি, সেগুলি কিন্তু উৎপাদনকারী কোম্পানি অথবা দেশের ভিন্নতার কারণে, পণ্যের মান, কার্যক্ষমতা, স্থায়িত্ব ইত্যাদি ভিন্ন হয়ে থাকে। GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এর গবেষক দলের প্রধান ড. বিজন কুমার শীল, এই ধরনের কিট আবিষ্কারের জন্য, একজন অiন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী। ড. বিজন কুমার শীল ও তার গবেষকদল উল্লেখ করেছেন যে, তাদের এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট দিয়ে পরীক্ষিত সবগুলো নমুনায় পজেটিভ রেজাল্ট দিয়েছে। উনার উদ্ভাবিত SARS -2003 ডায়াগনস্টিক কিট ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় (SARS) সফল হয়েছিল। এছাড়াও ডেঙ্গু সহ অন্যান্য রোগ এর ডায়াগনস্টিক কিট আবিষ্কার করেছেন (NCBI/Google/Research gate ইত্যাদিতে খোঁজ করুন বৈজ্ঞানিক জার্নাল সহ পেয়ে যাবেন)। অন্য দেশে প্রস্তুত এন্টি বডি কিট ভালো কাজ করেনি বলে, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল এর গবেষক দলের উদ্ভাবিত ও আমাদের দেশের তৈরি, এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট ভালো কাজ করবেনা, যথাযথ পরীক্ষা ছাড়াই বলে দিলাম, এটা কি একজন বিজ্ঞানীর বক্তব্য হতে পারে?

আমাদের দেশের কিছু লোক (দেশে ও বিদেশে অবস্থান করা) এখন এই কাজটি করে যাচ্ছে, পরীক্ষা ছাড়াই বলছে, এই কিট ভালো কাজ করবেনা। আপনি সত্যিকারের বিজ্ঞানী হলে বলতেন, দ্রুত যথাযথ পরীক্ষা করে, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হোক। উনারা বলেছেন RT-PCR শতভাগ কাজ করে। আসলেই কি তাই? পৃথিবীর কোন পরীক্ষায় শতভাগ সফল নয়। আমার গবেষণার কাজের জন্য, আমি জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিন বছর ধরে PCR, Cloning, sequencing ইত্যাদি নিয়মিতই করি। GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এ কিছু ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট দেবে বলে মুখে ফেনা তুলছেন, আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে চাই, RT-PCR এ ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসে তো মাঝে মাঝেই। (COVID-19 একটি RNA ভাইরাস) RT-PCR এর জন্য নমুনা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রসেসিং, RNA extraction (জটিল প্রক্রিয়া) ইত্যাদি ধাপ গুলি খুবই স্পর্শ কাতর এবং ২-৩ ঘন্টা সময় লাগবে, কঠোর ভাবে cool chain maintain সহ বিভিন্ন সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। প্রতিটি ধাপে খুবই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের কম সচেতনতাই, ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট দেবে। RT-PCR করতে খুবই অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছাড়া সঠিকভাবে সম্ভব নয়, এমনকি, তাদেরও মাঝে মাঝে ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসবে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, দেশের কিছু পরীক্ষাগারে RT-PCR মেশিন আছে, কিন্তু অভিজ্ঞ লোকের অভাবে (খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে) পরীক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে, এতে সঠিক ফলাফল আসছে কি? অবশ্যই ফলস নেগেটিভ আসছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের (সংবাদমাধ্যম অনুসারে) RT-PCR রেজাল্ট বিশ্লেষণ করে দেখবেন, যে পরীক্ষাগার গুলিতে অভিজ্ঞ গবেষকগণ তত্ত্বাবধান করেছেন, সেই গুলিতে শনাক্তের হার বেশি। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ পরীক্ষার সংখ্যা অনুপাতে, শনাক্তের হার বেশি। RT-PCR এর প্রতিটি ধাপের ফ্যাক্টর গুলি এবং আমাদের দেশের বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে, RT-PCR এ বেশি ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসার কথা বা ইতিমধ্যেই আসছে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে, করোনার নমুনা দিতে দীর্ঘলাইন। বেশিরভাগ অসুস্থ মানুষের নমুনা দিতে যাবার কথা, ওই লাইনের মধ্যে হয়তো অনেকেই আছেন করোনাই আক্রান্ত নন, অনুমান করুন কিভাবে ব্যাপকহারে করোনা ছড়িয়ে পড়বে। এই বাস্তবতায় এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এর কার্যকারিতা পরীক্ষাপূর্বক, অতি দ্রুত অনুমোদন ও দেশে-বিদেশে ব্যবহার জরুরি। আমরা যারা মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার করি, লক্ষ্য করবেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে সফটওয়্যার আপডেট করি, যাতে আমাদের ডিভাইসটি ত্রুটি মুক্ত হয়ে আরও ব্যবহার উপযোগী হয়ে ওঠে। SARS-2003 পরিবর্তিত রূপ হল COVID-19. অন্যদিকে SARS-2003 ডায়াগনস্টিক কিট এর উন্নত সংস্করণ হল এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 কিট। বিভিন্ন সংবাদপত্র বিশেষ করে দৈনিক ইত্তেফাক (২৬ এপ্রিল, বিজ্ঞান ও টেক, অনলাইন), বাংলাদেশ প্রতিদিন ইত্যাদিতে ডা. মোঃ সাজেদুর রহমান শাওন “গণস্বাস্থ্যের রেপিট কিট, বিজ্ঞান বনাম রাজনীতি” নামে একটি লেখায়, অহেতুক, অনৈতিক ও অবৈজ্ঞানিক কিছু সমালোচনা করেছেন। যা আমার কাছে বৈজ্ঞানিক ভাবে ইনভ্যালিড বলে মনে হয়েছে। তবুও, আমি ওনার লেখার বিপরীতে দুইটি (মোটাদাগে) বিষয় উল্লেখ করব। এন্টিবডি ডায়াগনস্টিক কিট এ ফলস নেগেটিভ আসবে বলে উল্লেখ করেছেন। এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এ সমস্যার সমাধান হবে, এরপরও যদি কিছু ফলাফলে ফলস নেগেটিভ আসে, তখন RT-PCR এর মাধ্যমে cross check করলে, ফলস নেগেটিভ আরো কমে আসবে। উনার লেখায় উল্লেখ করেছেন কিট আবিষ্কারে নাকি সাইন্টিফিক মিস্কন্ডাক্ট হয়েছে ! উনি কি, সাইন্টিফিক মিস্কন্ডাক্ট জানেন ভালো করে? এই প্রশ্নের সন্দিহান হয়ে আমি উনার বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় UNSW Sydney এর ওয়েবসাইটে ঢুকে আমি তাজ্জব বনে যাই। এই ভদ্রলোকের একক ও যৌথ মিলিয়ে বারটি পাবলিকেশন রয়েছে, যার একটি ও মলিকুলার বায়োলজি (সেরোলজি, PCR, ইত্যাদি) সম্পর্কিত নয়, সবগুলো গবেষণাপত্র জরিপ ভিত্তিক, অর্থাৎ ল্যাবে পরীক্ষা ভিত্তিক কোন কাজই করেননি। উনি হয়তো সঠিকভাবে জানেনই না কিভাবে PCR ও সেরোলজিক্যাল গবেষণা করা হয়। লেখার সময় ভাবছিলাম, আমি এই লোককে (যিনি গবেষণার বিষয় নিয়ে সঠিকভাবে অবগত নন) নিয়ে লিখছি, উনাকে, আমি ভাইরাল করে, ভাইরাল নায়ক, হিরো আলম করে দিচ্ছি না তো (হিরো আলমকে, আমি সহজ সরল ভালো মানুষ বলে মনে করি)। কিন্তু, ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল, প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাতেও তার লেখা টি ইংরেজিতে খুঁজে পাই, তখন আমার মনে সন্দেহ হয় আল-জাজিরার মত এমন একটি সংবাদমাধ্যমে, কেন, এমন একজন ব্যক্তি, যিনি এই বিষয়ে কোনো গবেষণা করেননি, তার লেখা প্রকাশ হয়েছে, তাহলে কি এখানে কোন আন্তর্জাতিক রাজনীতি জড়িত?

২৪ এপ্রিল ৭১ টিভির জার্নালে টকশোতে, ডা. মামুন মাহতাব ও অন্যান্যরা একই কথার প্রতিধ্বনি করছিলেন। এটি কি, একটি চক্র নয় তো? মলিকুলার বায়োলজির প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞানহীন এপিদেমিওলজিস্ট, লিভার বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ক্লিনিশিয়ান, ক্লিনিশিয়ান, বায়োলজিস্ট বা যে কোন ব্যক্তি, এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। মলিকুলার বায়োলজির প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞানহীন, যদি কেউ এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন, তবে সেটি হবে অনৈতিক, অবৈজ্ঞানিক ও অগ্রহণযোগ্য।

ঔষধ প্রশাসনের ডিজি মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের কথা বলে, GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এর কার্যকারিতা পরীক্ষা ও ব্যবহার আটকে দিয়েছেন। ঔষধ প্রশাসনের ডিজি এর পদে নিয়োগ কি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম বা পরামর্শ মেনে হয়েছে? উন্নত দেশগুলোতে ঔষধ প্রশাসনের ডিজি এর পদে কাদের নিয়োগ দেয়া হয় দেখুন (ফার্মাকোলজিস্ট, ডাক্তার, কৃষিবিদ, বায়োলজিস্ট), Google করলে সহজেই পেয়ে যাবেন। ভুল লোক ঔষধ প্রশাসনের ডিজি এর পদে দায়িত্ব পালন করছে নাতো? দেশের নীতিনির্ধারণের দায়িত্বশীল পদগুলোতেও ভুল লোকগুলি দায়িত্ব পালন করছে নাতো? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে ডাক্তার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে কৃষিবিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে ভেটেরিনারিয়ান বা মৎস্য এর গ্রাজুয়েট, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে প্রকৌশলী, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে আইন এর গ্রাজুয়েট হলে কি, এইরূপ সংকটকালীন পরিবেশ সমাধান ও দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতো, তাই নয় কি?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম না মেনে নিম্নমানের N95 মাস্ক, পিপিই ইত্যাদি হাসপাতালগুলিতে সরবরাহ করে, আমার ডাক্তার ভাই ও সেবা কর্মীদের করোনা ভাইরাস এ আক্রান্ত করেছেন, এই দায় কি ঔষধ প্রশাসনের ডিজি এড়াতে পারে? এজন্য আপনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনাও শুনেছেন। রেজিস্টার্ড ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ব্যতীত এন্টিবায়োটিক, হরমোনাল ড্রাগহর্মনাল ড্রাগ ইত্যাদি বিক্রি বন্ধ, এটাতো WHO এর গাইডলাইন, এটা কি করেছেন? এই রকম অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে। ঔষধ প্রশাসনের ডিজি বলেছেন, অনেকগুলি Rapid কিট এর আবেদন জমা আছে। এখন মানুষ অর্থনৈতিক কুটকৌশল বোঝে, বিদেশি কিট আমদানি হবে ও বেশি দামে বিক্রি হবে, অনেকের অনেক টাকা, হবে, কিন্তু দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, মানবতা রাস্তায় কাঁদবে। মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সাহেব, আপনিতো দেশের জন্য জীবনবাজি রাখার শপথ নিয়ে গৌরবময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদস্য হিসেবে যোগদান করেছিলেন, আসুন না বাংলার মানুষকে একটু সহায়তা করুন, দেশের মানুষগুলোর প্রতি একটু সদয় হন, এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এর কার্যকারিতা যথাযথ পরীক্ষা পূর্বক, অতি দ্রুত অনুমোদন ও দেশে-বিদেশে ব্যাপক ব্যবহার শুরু করুন।

করোনা (COVID-19) ভাইরাস যুদ্ধের প্রথম সারির যোদ্ধা ডাক্তার, সেবাকর্মী, পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য, সংবাদকর্মী ইত্যাদিদেরও সুস্থ রাখতে GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস। দেশের সর্বশেষ আস্থার জায়গা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, আমরা জেনেছি আপনি GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট উদ্ভাবনে উৎসাহ প্রদান করেছেন, দয়া করে, কিটটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে, দেশের মানুষকে বাঁচান ডঃ বিজন কুমারশীল একজন পরীক্ষিত বিজ্ঞানী, তাদের উদ্ভাবিত কিট দেশের করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় অপরিসীম ভূমিকা রাখবে বলে আমার আশা।

লেখকঃ পিএইচডি ক্যান্ডিডেট, ইয়াতে বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৩:০২:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ এপ্রিল ২০২০
১৭৬৪ Time View

দেশের করোনাভাইরাস গবেষণা কিট নিয়ে কিছু কথা

আপডেট সময় : ০৩:০২:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ এপ্রিল ২০২০

ডা. পেরু গোপাল বিশ্বাসঃ

বিজ্ঞানের বায়োলজিক্যাল শাখার একজন ক্ষুদ্র গবেষণা কর্মী হিসেবে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি খবর থেকে রোগ-ব্যাধি অথবা গবেষণার খবরগুলি আমাকে বেশি টানে। দেশে কিছুদিন যাবৎ করোনা ভাইরাস (COVID-19) ও GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট নিয়ে যে অনাকাঙ্খিত, অবৈজ্ঞানিক সমালোচনা হচ্ছে , সেটা নিয়ে মুখ না খুললে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আঙ্গুল তুলে বলবে, বাংলাদেশে বিজ্ঞানের গবেষণার বন্ধ এর জন্য তুমিও দায়ী, যখন বৈজ্ঞানিক নাম ধারী অবৈজ্ঞানিক মানুষ/কর্মকর্তারা বিজ্ঞানের গবেষণার পথ চিরতরে রুদ্ধ করেছিল, তখন তুমি বিজ্ঞানের গবেষণা কর্মী হয়েও চুপ ছিলে। আমার হয়তো কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই, কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ও আমার গবেষণার বিষয় সমন্বয় করে লেখার চেষ্টা করছি।

GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট উদ্ভাবন, একটি সময় উপযোগী, যুগান্তকারী আবিষ্কার, এর স্বপক্ষে অনেকগুলো ব্যাখ্যার মধ্যে, শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করব। মলিকুলার বায়োলজির জ্ঞানহীন কিছু মানুষ যথাযথ পরীক্ষা বাদেই বলেছেন, এটি এন্টি বডি টেস্ট কিট, এটি খুব কার্যকর নয়, ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসবে, কোন দেশ এই ধরনের কিট ব্যবহার করছে না ইত্যাদি। প্রথমেই উল্লেখ করি, এটি শুধুমাত্র এন্টিবডি টেস্ট কিট নয়, এটি এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত টেস্ট কিট, ফলে এটির ফলাফল ভালো আসবে আশা করাই যায়। সাধারণত তো ঘর গৃহস্থালীতে, আমরা যে সমস্ত ইলেকট্রনিক্স পণ্য (অথবা অন্য যেকোন পণ্য) ব্যবহার করি, সেগুলি কিন্তু উৎপাদনকারী কোম্পানি অথবা দেশের ভিন্নতার কারণে, পণ্যের মান, কার্যক্ষমতা, স্থায়িত্ব ইত্যাদি ভিন্ন হয়ে থাকে। GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এর গবেষক দলের প্রধান ড. বিজন কুমার শীল, এই ধরনের কিট আবিষ্কারের জন্য, একজন অiন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী। ড. বিজন কুমার শীল ও তার গবেষকদল উল্লেখ করেছেন যে, তাদের এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট দিয়ে পরীক্ষিত সবগুলো নমুনায় পজেটিভ রেজাল্ট দিয়েছে। উনার উদ্ভাবিত SARS -2003 ডায়াগনস্টিক কিট ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় (SARS) সফল হয়েছিল। এছাড়াও ডেঙ্গু সহ অন্যান্য রোগ এর ডায়াগনস্টিক কিট আবিষ্কার করেছেন (NCBI/Google/Research gate ইত্যাদিতে খোঁজ করুন বৈজ্ঞানিক জার্নাল সহ পেয়ে যাবেন)। অন্য দেশে প্রস্তুত এন্টি বডি কিট ভালো কাজ করেনি বলে, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল এর গবেষক দলের উদ্ভাবিত ও আমাদের দেশের তৈরি, এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট ভালো কাজ করবেনা, যথাযথ পরীক্ষা ছাড়াই বলে দিলাম, এটা কি একজন বিজ্ঞানীর বক্তব্য হতে পারে?

আমাদের দেশের কিছু লোক (দেশে ও বিদেশে অবস্থান করা) এখন এই কাজটি করে যাচ্ছে, পরীক্ষা ছাড়াই বলছে, এই কিট ভালো কাজ করবেনা। আপনি সত্যিকারের বিজ্ঞানী হলে বলতেন, দ্রুত যথাযথ পরীক্ষা করে, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হোক। উনারা বলেছেন RT-PCR শতভাগ কাজ করে। আসলেই কি তাই? পৃথিবীর কোন পরীক্ষায় শতভাগ সফল নয়। আমার গবেষণার কাজের জন্য, আমি জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিন বছর ধরে PCR, Cloning, sequencing ইত্যাদি নিয়মিতই করি। GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এ কিছু ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট দেবে বলে মুখে ফেনা তুলছেন, আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে চাই, RT-PCR এ ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসে তো মাঝে মাঝেই। (COVID-19 একটি RNA ভাইরাস) RT-PCR এর জন্য নমুনা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রসেসিং, RNA extraction (জটিল প্রক্রিয়া) ইত্যাদি ধাপ গুলি খুবই স্পর্শ কাতর এবং ২-৩ ঘন্টা সময় লাগবে, কঠোর ভাবে cool chain maintain সহ বিভিন্ন সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। প্রতিটি ধাপে খুবই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের কম সচেতনতাই, ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট দেবে। RT-PCR করতে খুবই অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছাড়া সঠিকভাবে সম্ভব নয়, এমনকি, তাদেরও মাঝে মাঝে ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসবে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, দেশের কিছু পরীক্ষাগারে RT-PCR মেশিন আছে, কিন্তু অভিজ্ঞ লোকের অভাবে (খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে) পরীক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে, এতে সঠিক ফলাফল আসছে কি? অবশ্যই ফলস নেগেটিভ আসছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের (সংবাদমাধ্যম অনুসারে) RT-PCR রেজাল্ট বিশ্লেষণ করে দেখবেন, যে পরীক্ষাগার গুলিতে অভিজ্ঞ গবেষকগণ তত্ত্বাবধান করেছেন, সেই গুলিতে শনাক্তের হার বেশি। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ পরীক্ষার সংখ্যা অনুপাতে, শনাক্তের হার বেশি। RT-PCR এর প্রতিটি ধাপের ফ্যাক্টর গুলি এবং আমাদের দেশের বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে, RT-PCR এ বেশি ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসার কথা বা ইতিমধ্যেই আসছে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে, করোনার নমুনা দিতে দীর্ঘলাইন। বেশিরভাগ অসুস্থ মানুষের নমুনা দিতে যাবার কথা, ওই লাইনের মধ্যে হয়তো অনেকেই আছেন করোনাই আক্রান্ত নন, অনুমান করুন কিভাবে ব্যাপকহারে করোনা ছড়িয়ে পড়বে। এই বাস্তবতায় এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এর কার্যকারিতা পরীক্ষাপূর্বক, অতি দ্রুত অনুমোদন ও দেশে-বিদেশে ব্যবহার জরুরি। আমরা যারা মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার করি, লক্ষ্য করবেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে সফটওয়্যার আপডেট করি, যাতে আমাদের ডিভাইসটি ত্রুটি মুক্ত হয়ে আরও ব্যবহার উপযোগী হয়ে ওঠে। SARS-2003 পরিবর্তিত রূপ হল COVID-19. অন্যদিকে SARS-2003 ডায়াগনস্টিক কিট এর উন্নত সংস্করণ হল এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 কিট। বিভিন্ন সংবাদপত্র বিশেষ করে দৈনিক ইত্তেফাক (২৬ এপ্রিল, বিজ্ঞান ও টেক, অনলাইন), বাংলাদেশ প্রতিদিন ইত্যাদিতে ডা. মোঃ সাজেদুর রহমান শাওন “গণস্বাস্থ্যের রেপিট কিট, বিজ্ঞান বনাম রাজনীতি” নামে একটি লেখায়, অহেতুক, অনৈতিক ও অবৈজ্ঞানিক কিছু সমালোচনা করেছেন। যা আমার কাছে বৈজ্ঞানিক ভাবে ইনভ্যালিড বলে মনে হয়েছে। তবুও, আমি ওনার লেখার বিপরীতে দুইটি (মোটাদাগে) বিষয় উল্লেখ করব। এন্টিবডি ডায়াগনস্টিক কিট এ ফলস নেগেটিভ আসবে বলে উল্লেখ করেছেন। এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এ সমস্যার সমাধান হবে, এরপরও যদি কিছু ফলাফলে ফলস নেগেটিভ আসে, তখন RT-PCR এর মাধ্যমে cross check করলে, ফলস নেগেটিভ আরো কমে আসবে। উনার লেখায় উল্লেখ করেছেন কিট আবিষ্কারে নাকি সাইন্টিফিক মিস্কন্ডাক্ট হয়েছে ! উনি কি, সাইন্টিফিক মিস্কন্ডাক্ট জানেন ভালো করে? এই প্রশ্নের সন্দিহান হয়ে আমি উনার বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় UNSW Sydney এর ওয়েবসাইটে ঢুকে আমি তাজ্জব বনে যাই। এই ভদ্রলোকের একক ও যৌথ মিলিয়ে বারটি পাবলিকেশন রয়েছে, যার একটি ও মলিকুলার বায়োলজি (সেরোলজি, PCR, ইত্যাদি) সম্পর্কিত নয়, সবগুলো গবেষণাপত্র জরিপ ভিত্তিক, অর্থাৎ ল্যাবে পরীক্ষা ভিত্তিক কোন কাজই করেননি। উনি হয়তো সঠিকভাবে জানেনই না কিভাবে PCR ও সেরোলজিক্যাল গবেষণা করা হয়। লেখার সময় ভাবছিলাম, আমি এই লোককে (যিনি গবেষণার বিষয় নিয়ে সঠিকভাবে অবগত নন) নিয়ে লিখছি, উনাকে, আমি ভাইরাল করে, ভাইরাল নায়ক, হিরো আলম করে দিচ্ছি না তো (হিরো আলমকে, আমি সহজ সরল ভালো মানুষ বলে মনে করি)। কিন্তু, ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল, প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাতেও তার লেখা টি ইংরেজিতে খুঁজে পাই, তখন আমার মনে সন্দেহ হয় আল-জাজিরার মত এমন একটি সংবাদমাধ্যমে, কেন, এমন একজন ব্যক্তি, যিনি এই বিষয়ে কোনো গবেষণা করেননি, তার লেখা প্রকাশ হয়েছে, তাহলে কি এখানে কোন আন্তর্জাতিক রাজনীতি জড়িত?

২৪ এপ্রিল ৭১ টিভির জার্নালে টকশোতে, ডা. মামুন মাহতাব ও অন্যান্যরা একই কথার প্রতিধ্বনি করছিলেন। এটি কি, একটি চক্র নয় তো? মলিকুলার বায়োলজির প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞানহীন এপিদেমিওলজিস্ট, লিভার বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ক্লিনিশিয়ান, ক্লিনিশিয়ান, বায়োলজিস্ট বা যে কোন ব্যক্তি, এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। মলিকুলার বায়োলজির প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞানহীন, যদি কেউ এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন, তবে সেটি হবে অনৈতিক, অবৈজ্ঞানিক ও অগ্রহণযোগ্য।

ঔষধ প্রশাসনের ডিজি মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের কথা বলে, GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এর কার্যকারিতা পরীক্ষা ও ব্যবহার আটকে দিয়েছেন। ঔষধ প্রশাসনের ডিজি এর পদে নিয়োগ কি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম বা পরামর্শ মেনে হয়েছে? উন্নত দেশগুলোতে ঔষধ প্রশাসনের ডিজি এর পদে কাদের নিয়োগ দেয়া হয় দেখুন (ফার্মাকোলজিস্ট, ডাক্তার, কৃষিবিদ, বায়োলজিস্ট), Google করলে সহজেই পেয়ে যাবেন। ভুল লোক ঔষধ প্রশাসনের ডিজি এর পদে দায়িত্ব পালন করছে নাতো? দেশের নীতিনির্ধারণের দায়িত্বশীল পদগুলোতেও ভুল লোকগুলি দায়িত্ব পালন করছে নাতো? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে ডাক্তার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে কৃষিবিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে ভেটেরিনারিয়ান বা মৎস্য এর গ্রাজুয়েট, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে প্রকৌশলী, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদে আইন এর গ্রাজুয়েট হলে কি, এইরূপ সংকটকালীন পরিবেশ সমাধান ও দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতো, তাই নয় কি?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম না মেনে নিম্নমানের N95 মাস্ক, পিপিই ইত্যাদি হাসপাতালগুলিতে সরবরাহ করে, আমার ডাক্তার ভাই ও সেবা কর্মীদের করোনা ভাইরাস এ আক্রান্ত করেছেন, এই দায় কি ঔষধ প্রশাসনের ডিজি এড়াতে পারে? এজন্য আপনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনাও শুনেছেন। রেজিস্টার্ড ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ব্যতীত এন্টিবায়োটিক, হরমোনাল ড্রাগহর্মনাল ড্রাগ ইত্যাদি বিক্রি বন্ধ, এটাতো WHO এর গাইডলাইন, এটা কি করেছেন? এই রকম অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে। ঔষধ প্রশাসনের ডিজি বলেছেন, অনেকগুলি Rapid কিট এর আবেদন জমা আছে। এখন মানুষ অর্থনৈতিক কুটকৌশল বোঝে, বিদেশি কিট আমদানি হবে ও বেশি দামে বিক্রি হবে, অনেকের অনেক টাকা, হবে, কিন্তু দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, মানবতা রাস্তায় কাঁদবে। মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সাহেব, আপনিতো দেশের জন্য জীবনবাজি রাখার শপথ নিয়ে গৌরবময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদস্য হিসেবে যোগদান করেছিলেন, আসুন না বাংলার মানুষকে একটু সহায়তা করুন, দেশের মানুষগুলোর প্রতি একটু সদয় হন, এন্টিবডি-এন্টিজেন সমন্বিত GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট এর কার্যকারিতা যথাযথ পরীক্ষা পূর্বক, অতি দ্রুত অনুমোদন ও দেশে-বিদেশে ব্যাপক ব্যবহার শুরু করুন।

করোনা (COVID-19) ভাইরাস যুদ্ধের প্রথম সারির যোদ্ধা ডাক্তার, সেবাকর্মী, পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য, সংবাদকর্মী ইত্যাদিদেরও সুস্থ রাখতে GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস। দেশের সর্বশেষ আস্থার জায়গা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, আমরা জেনেছি আপনি GR COVID-19 ডায়াগনস্টিক কিট উদ্ভাবনে উৎসাহ প্রদান করেছেন, দয়া করে, কিটটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে, দেশের মানুষকে বাঁচান ডঃ বিজন কুমারশীল একজন পরীক্ষিত বিজ্ঞানী, তাদের উদ্ভাবিত কিট দেশের করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় অপরিসীম ভূমিকা রাখবে বলে আমার আশা।

লেখকঃ পিএইচডি ক্যান্ডিডেট, ইয়াতে বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান।