ধর্ম অবমাননার অভিযোগের পর সরানো হল ‘কমান্ডো’র টিজার
সবুজদেশ ডেস্কঃ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্মাণাধীন ‘কমান্ডো’ সিনেমার টিজার নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ছবিটির বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনার পর ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে ছবিটির টিজারটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
ছবিটিতে অভিনয় করছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা দেব। এ অভিনেতার জন্মদিনকে ঘিরে রিলিজ দেয়া হয়েছে শাপলা মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালের অ্যাকশন মুভি ‘কমান্ডো’র টিজার।
২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নায়ক দেবের ইউটিউব চ্যানেল ‘দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেনচার্স’-এ টিজারটি ছাড়া হয়।
এ ছবির টিজার প্রকাশের পরই ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করা হয়েছে। অনেকেই ছবিটিকে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের মাধ্যম হিসেবে ভূমিকায় দেখছেন। তাদের মধ্যে মাওলানা আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ’র একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি দেবের কমান্ডো সিনেমাকে ইসলামবিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি সেখানে টিজারের তিনটি স্ক্রিন শট দিয়ে লেখেন ১ম ছবিটি দেখুন। কালেমা খচিত পতাকা, পতাকার নীচের অংশে AK-47 এর সিম্বল । পতাকার পেছন থেকে অস্ত্র হাতে বেরিয়ে আসছে কথিত সন্ত্রাসীরা । ২য় ছবিটিতে দেখুন। চার দিকে আরবি লেখা। টিজারের এই অংশে দেখানো হচ্ছে কথিত সন্ত্রাসীরা সুন্নাতি পোষাক পড়ে ‘নারায়ে তাকবির’ ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিচ্ছে।
তিনি আরও লেখেন, ‘এই মুভিতে দেখাবে ইসলামি জঙ্গিবাদ দমনে নায়ক দেব এসে হাজির হয়েছে। আর জঙ্গিদের সিম্বল হিসেবে কালিমা খচিত পতাকা ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে সুস্পষ্টভাবে ইসলামকে ডিমোনাইজ করা হচ্ছে। ভিলেন বানিয়েছে ইসলামকে। যা ইচ্ছাকৃত ইসলাম বিদ্বেষ’।
তিনি প্রশ্ন রাখেন ‘ইসলাম কখনো জঙ্গী ধর্ম নয়, একই সঙ্গে ধর্মের নামে কেবল ইসলামেই উগ্রতা আর জঙ্গিবাদ আছে এমন নয়, সব ধর্মেই আছে, তাহলে মুভিতে কেনো ইসলাম আর কলেমার পতাকারই শুধু ব্যাবহার?’
সিনেমাটির প্রযোজক সেলিম খান যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি নিজে মুসলমান, ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করার দুঃসাহস আমার নেই। জঙ্গিবাদ সরকার কীভাবে দমন করছে সেটাই সিনেমায় দেখানো হয়েছ ‘।
তিনি বলেন ‘টিজারটি কলকাতা থেকে সিনেমার অভিনেতা দেব আপলোড করেন। আমি তাকে জানাই এটা নিয়ে আমার দেশে সমস্যা হচ্ছে, তিনি টিজারটা সরিয়ে ফেলেন’।
বিদেশি শিল্পী হিসেবে কেউ যদি বাংলাদেশে কাজ করতে চান তাকে সরকারের অনুমতি নিতে হয়।
সেলিম খান বলেন, ‘যখন দেবের অভিনয়ের বিষয়টা ফাইনাল হয় তখন আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমতি নেই। তখন সিনেমার গল্পের অনুমোদন নেয়া হয়েছে। আমরা স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী কাজ করছি। এখানে ধর্ম অবমাননার কোন প্রশ্নই আসে ন ‘।
সেন্সর বোর্ডের একজন সদস্য বিবিসিকে বলেন, বাংলাদেশে যে নীতিমালা রয়েছে সেখানে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র দেয়ার আগে সিনেমার একটা পোষ্টারও প্রকাশ করার নিয়ম নেই। সেখানে সিনেমা শেষ করার আগে, সেন্সর বোর্ডের অনুমোদনের আগে যে টিজার প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে আমি বলবো নিয়ম ভাঙ্গা হয়েছে।
সিনেমা তৈরির আগে টিজার প্রকাশ নিয়ে সেলিম খান বলেন, ‘আমরা অনলাইন প্লাটফর্মে রিলিজ করেছিলাম, কোনো সিনেমা হলে টিজার মুক্তি দেইনি’। তাই নীতিমালা ভঙ্গ হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।