সবুজদেশ ডেক্সঃ নেত্রকোনায় এক কলেজছাত্রীকে (২০) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক আজাদ (৪৫)। এ ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। তিনি জেলা বিএনপির সহসভাপতি।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা সদরের একটি বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই রাতেই মেয়েটি ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মানিক আজাদের বিরুদ্ধে বারহাট্টা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মানিকের বাড়ি বারহাট্টার দশাল এলাকায়।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী ও উপজেলা বিএনপির দুজন জ্যেষ্ঠ নেতার দাবি, বিষয়টি সন্দেহজনক। হয়তো চেয়ারম্যানকে ফাঁসাতেই পরিকল্পনামতো এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্টা সদরের এক কলেজছাত্রীর বছর দু-এক আগে বিয়ে হয়। কিছুদিন পর তাঁর স্বামী মারা যান। এরপর থেকে মেয়েটি বাবার বাড়িতে থাকছিলেন। সম্প্রতি মেয়েটি উপজেলা পরিষদে একটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। তখন থেকে চেয়ারম্যান মানিক তাঁর খোঁজখবর রাখছিলেন। আশ্বাস দিচ্ছিলেন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েটিকে নানাভাবে সহযোগিতা করার।

মেয়েটি সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চেয়ারম্যান তাঁকে মুঠোফোনে জানান, তিনি তাঁর বাসায় আসছেন। কিছুক্ষণ পর বাসায় আসেন। এ সময় মেয়ের মা চেয়ারম্যানকে আপ্যায়নের জন্য চা-বিস্কুট আনতে বাড়ির কাছাকাছি দোকানে যান। এই সময় চেয়ারম্যান তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। পরে ঘরের দরজা ভেঙে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন তাঁরা। এ সময় লোকজন চেয়ারম্যানকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে খবর দেন। একপর্যায়ে মানিক কৌশলে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি আত্মগোপনে।

ওই ছাত্রী আরও বলেন, চেয়ারম্যানকে আটকে রাখা হয়েছে খবর পেয়ে তাঁর বেশ কয়েকজন সমর্থক বাসায় এসে তর্কে জড়ান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন ও বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম খান এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

ওসি বদরুল আলম খান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।

ইউএনও ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমিও এ রকমই শুনেছি। এ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। ছাত্রীটির লেখাপড়া যাতে ব্যাহত না হয়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল শুক্রবার বিকেলে মানিক আজাদের বারহাট্টা সদরের গোপালপুর এলাকার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, ফটকে তালা ঝুলছে। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। তবে তাঁর স্ত্রী আছমা আক্তার মুঠোফোনে বলেন, ‘এটি একটি ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা। আমার স্বামীর জনপ্রিয়তা দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে এবং সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here