যশোরঃ
যশোর সদর উপজেলায় ধর্ষণের শিকার এক মাদরাসাছাত্রী সন্তান প্রসব করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হোসেন গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে জাহাঙ্গীরের লোকজন ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
এ ঘটনায় রোববার (৯ অক্টোবর) রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মেয়েটির বাবা। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হামিদপুর গ্রামের মধ্যপাড়ার অমেদ আলীর ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মে মাসে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে জানতে পারেন মেয়ে গর্ভবতী। এরপর মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, জাহাঙ্গীর হোসেন বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে পরিবারসহ সবাইকে হত্যার হুমকিও দেন তিনি। ভয়ে ওই মেয়ে বিষয়টি গোপন রাখে।
এ বিষয়ে মেয়ের বাবা অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই ফতেপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আকরাম হোসেনের কাছে যান। তিনিও তাদের নানা ধরনের হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে মেয়েকে তিনি অন্যত্র পাঠিয়ে দেন।
সর্বশেষ রোববার সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরা কলোরোয়ার একটি হাসপাতালে ওই মেয়ে একটি সন্তানের জন্ম দেয়। খবর পেয়ে আকরাম মেম্বার মেয়ের বাবা ও তার মাকে বাড়িতে যেতে বলেন। তারা ইউপি সদস্যের বাড়িতে গেলে একটি কক্ষে তাদের আটকে রেখে বিষয়টি মীমাংসার জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হলে এলাকাছাড়ার হুমকি দিয়ে মেয়ের বাবা-মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে মাদরাসাছাত্রীর বাবা কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ করেন।
ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করে ইউপি সদস্য আকরাম হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই সকাল থেকেই নিখোঁজ। আমি তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তবে আমার বিরুদ্ধে হুমকি ধামকি দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।’
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। সত্যতা পেলেই অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, যশোরের বাঘারপাড়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ২৩ দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। রোববার ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মামলার পর সোমবার পুলিশ আরিফ হোসেন নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। আরিফ উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের জয়পুর শিকদারপাড়ার ইউনুস শিকদারের ছেলে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই স্কুলছাত্রী পুনিহার বটতলায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে। বাসার সামনেই আরিফের চায়ের দোকান হওয়ায় প্রায়ই মেয়েটিকে কু-প্রস্তাব দিত। কিন্তু কোনোভাবেই মেয়েটিকে রাজি করতে না পেরে তার ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন আরিফ। ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় পরিবারের সবার অনুপস্থিতির সুযোগে বাড়িতে প্রবেশ করে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে আরিফ।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন বলেন, সোমবার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।