নতুন টি-টোয়েন্টি দলে তিন চমক, সৌম্যসহ বাদ চারজন
সবুজদেশ ডেস্কঃ
সোমবার সকালে নাস্তার টেবিলে বসেই প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, এইচপি তথা অনূর্ধ্ব-২৩ দলে খানিক রদবদল করে হলেও জাতীয় দলে কিছু ক্রিকেটারের অন্তর্ভুক্তি ঘটানো হবে।
শুধু তাই নয়, তিন জাতি টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে অফ ফর্মের কারণে সৌম্য সরকারসহ অন্তত দু’তিনজন ক্রিকেটার বাদ পড়তে পারেন। তিন জাতি ক্রিকেটের ফিরতি পর্বের জন্য যেন নতুন দল ঘোষণা করা হবে, তাতে এইচপির এবং ‘এ’ ক’জন নতুন মুখ থাকবে।
ঠিক তাই। প্রধান নির্বাচকের কথার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে সকাল পৌনে ১১টায় দেয়া হলো চট্টগ্রাম পর্ব তথা তিন জাতি আসরের পরের পর্বের জন্য জাতীয় দল। সেই দলে এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন।
ঢাকায় জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানের সাথে খেলা দল থেকে চার জন নেই। নেই ঢাকার পর্বে দুই ম্যাচ খেলা বাঁ-হাতি উইলোবাজ সৌম্য সরকার। তার সঙ্গে বাদ দেয়া হয়েছে দুই ম্যাচের একটিতেও খেলার সুযোগ না পাওয়া স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান, সাইড স্ট্রেইনে ভোগা পেসার আরাফাত মিশু এবং শেষ মুহূর্তে সংযোজন হওয়া বাঁ-হাতি পেসার আবু হায়দার রনি।
এ চার জনের বদলে দলে নেয়া হয়েছে পাঁচ জনকে। যার দু’জন পুরনো এবং তিনজন একদম নতুন। দুই পেসার আবু হায়দার রনি আর আরাফাত মিশুর জায়গায় এসেছেন প্রতিষ্ঠিত দুই পারফরমার রুবেল হোসেন এবং শফিউল ইসলাম। যারা টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় দলের বেশ পুরনো এবং পরীক্ষিত মুখ। এছাড়া এইচপি তথা অনূর্ধ্ব-২৩ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে ভারত সফরে না পাঠিয়ে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে জাতীয় দলে।
দুই টেস্ট আর তিন ওয়ানডে খেলা বাঁ-হাতি টপ অর্ডার নাজমুল হোসেন শান্তর এখনো টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়নি। কে জানে চট্টগ্রামেই না আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ঘটে তার!
একই সঙ্গে সৌম্য সরকারের বিকল্প হিসেবে দলভুক্ত হয়েছেন মারকুটে ওপেনার নাঈম শেখ এবং মেহেদি হাসানের জায়গায় নেয়া হয়েছে তরুণ সম্ভাবনাময় মিডল অর্ডার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে।
দু’জনই বিশেষ করে নাঈম শেখ আগে থেকেই পাইপ লাইনে ও বিশেষ বিবেচনায় ছিলেন। বাংলাদেশের পরের প্রজন্মের যে হাতে গোনা ক’জন মাত্র তরুণ ফ্রি স্ট্রোক খেলতে পারেন এবং পেস বলে স্বচ্ছন্দে হাত খুলে খেলার সামর্থ্য রাখেন- নাঈম শেখ তাদের অন্যতম।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা অফ ফর্মে থাকায় তাকে এবারের সিরিজে শুরুতে বিবেচনায় আনা হয়নি। না হয় তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে নাঈমের অন্তর্ভূক্তির সম্ভাবনা ছিল প্রবল।
অবশেষে এবার প্রথমবারের মত জাতীয় দলে ডাক পেলেন নাঈম শেখ। তার সঙ্গে সাইফ হাসান কিংবা ইয়াসির আরাফাত রাব্বির কথাই হয়তো ভেবে বসেছিলেন ক্রিকেট ভক্তরা; কিন্তু সবাইকে অবাক করে দলে এসেছেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।
আমিনুল বিপ্লব মূলতঃ মিডল অর্ডার, সাথে লেগস্পিন বোলিংটাও পারেন। করেনও। তাই সাইফ আর ইয়াসির রাব্বিকে পেছনে ফেলে আমিনুল বিপ্লবই নির্বাচকদের আস্থা অর্জন করে নিলেন। প্রসঙ্গতঃ বিপ্লবকে দিয়ে দলে একজন লেগ স্পিনারের অভাবও পূরণ করা সম্ভব হবে।
জোবায়ের হোসেন লিখনের পর টিম বাংলাদেশে একজন লেগ ব্রেক বোলারের অভাব ছিল প্রবল; কিন্তু সে অর্থে কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিপ্লব মূলতঃ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। পাশাপাশি লেগস্পিনারও। সব দিক বিবেচনা করেই তাকে দলে আনা হয়েছে।
এইচপির অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তু’র অনূর্ধ্ব-২৩ দলের অধিনায়ক হিসেবে আগামীকাল ভারত যাওয়ার কথা ছিল। একইভাবে শফিউল-রুবেলেরও ‘এ’ দলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে, তাদের সেই সফর বাতিলই করতে হলো।
ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ পর্বের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ স্কোয়াড
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন ধ্রুব, তাইজুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফউদ্দীন, নাঈম শেখ, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব এবং নাজমুল হোসেন শান্ত।