নতুন দলগুলো নিবন্ধন জটিলতায়
সবুজদেশ ডেক্সঃ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নিয়ে জটিলতায় পড়েছে নির্বাচন কমিশন। যথাযথভাবে গঠনতন্ত্র ও প্রয়োজনীয় দলিলাদি না থাকায় অধিকাংশ দলের নিবন্ধন আবেদন নাকচ করে দিলেও দলগুলো আবেদন পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছে। অনেক দল নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করারও হুমকি দিচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ জাসদের পুনর্বিবেচনার আবেদন আমলে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দলটিকে নিবন্ধন দিতে এখন মাঠ পর্যায়ের অফিস ও কমিটি তদন্ত চলছে। তবে বাংলাদেশ জাসদও নিবন্ধন পাবে কি না তা নিশ্চিত করছে না ইসি। বিশ্লেষকদের মতে, সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আর মাত্র দেড় মাস বাকি। কিন্তু কমিশন এখনো নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে ভোটের আগে নতুন দলগুলো আইনের আশ্রয় নিলে সংসদ নির্বাচনও হুমকির মুখে পড়তে পারে। এদিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন আবেদন বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পুনর্বিবেচনা করতে নির্বাচন কমিশনকে আইনি নোটিস দিয়েছেন দলটির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকীর পক্ষে তার আইনজীবী রবিবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিস পাঠান। সাত দিনের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগেও দলটি নির্বাচন কমিশনারকে স্মারকলিপিও দিয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পাচ্ছে কি না জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, এখনো বলতে পারছি না কোনো দল নিবন্ধন পাবে কি না। বাংলাদেশ জাসদের নিবন্ধনের বিষয়ে বলেন, আমরা এখনো তদন্ত প্রতিবেদন পাইনি। ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুর পর ৩৮টি দল নিবন্ধিত হয়। এরপর ৪টি দল নিবন্ধন পায়। এ ছাড়া শর্ত পূরণ না হওয়ায় তিনটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়। সব মিলিয়ে এখন বাংলাদেশে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে, যারা নিজস্ব প্রতীক নিয়ে দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারে। নতুন দল নিবন্ধনের জন্য গত বছরের ৩০ অক্টোবর দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান করে ইসি। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৬টি দল আবেদন করে। পাঁচ মাস ধরে এ নিয়ে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করে ইসি, যদিও নির্বাচনী রোডম্যাপ অনুযায়ী এপ্রিলের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি ইসি। এ বছরের শেষ ভাগে ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে।
নিবন্ধন আবেদন বাতিল : ইসিকে গণসংহতির সাকীর আইনি নোটিস : রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন আবেদন বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পুনর্বিবেচনা করতে নির্বাচন কমিশনকে আইনি নোটিস দিয়েছেন দলটির সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী। রবিবার তার পক্ষে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিস পাঠান। নোটিসে প্রধান নির্বাচন কমিশন, আইন সচিব ও নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে। নোটিসে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন পেতে গত বছর ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন জোনায়েদ সাকী। পরে চলতি বছরের ৮ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধি, ২০০৮ ও গণ প্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের দুটি প্রবিধানের বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই আবেদনে। ১৫ দিনের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয় গণসংহতিকে। পরবর্তীতে ১৩ এপ্রিল গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের দুটি প্রবিধানের বিষয় ঠিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ও ব্যাখ্যাসহ গণসংহতির আবেদন ২২ এপ্রিল আবার নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হয়। এ বিষয়ে জোনায়েদ সাকী বলেন, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম এরপর গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হবে। কিন্তু বারবার যোগাযোগ করেও নিবন্ধন না দেওয়ার বিষয়ে কোনো কিছু জানতে পারিনি। আইনি নোটিসের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা নোটিস পাঠিয়েছি। সাত দিনের সময় দিয়েছি ইসিকে।