ঢাকা ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহর থেকে গুলিবিদ্ধ তিন যুবকের পরিচয় মিলেছে।

Reporter Name

সবুজদেশ ডেক্স: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহর থেকে গুলিবিদ্ধ তিন যুবকের পরিচয় মিলেছে। নিহতরা হলেন, রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকার শহীদুল্লাহর ছেলে সোহাগ ভুইয়া (৩২), ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আব্দুল মান্নানের ছেলে শিমুল আজাদ (৩০)। একই এলাকার আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে ও মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার পাইকপাড়া এলাকার আ. ওহাবের ছেলে নুর হোসেন বাবু (৩০)। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ির এলাকায়। এর মধ্যে সোহাগ ও শিমুল পরস্পরের বন্ধু, আর শিমুল ও বাবু সম্পর্কে ভায়রা ভাই। শিমুল ও নূর হোসেন ঝুটের ব্যবসা করে ও আর সোহাগ স্যাটেলাইট ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা করতেন। স্বজনদের দাবি, শিমুল আজাদের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ বেড়াতে গিয়েছিলেন তারা। গত বুধবার ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে মাওয়া ফেরী পার হওয়ার পর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবির সদস্য পরিচয়ে তাদেরকে যাত্রীবাহী বাস থেকে নামিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন। তিনজনই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের আলমপুরের ১১ নম্বর ব্রিজ এলাকা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সকালে লাশ উদ্ধারের পর তাৎক্ষণিকভাবে নিহত যুবকদের পরিচয় জানা যায়নি বলে জানায় পুলিশ। এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির জানান, আলমপুরের ১১ নম্বর ব্রিজ এলাকায় সড়কের পাশে তিন যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকা থেকে তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। নিহত তিন যুবকের পরনে প্যান্ট, শার্ট ও গেঞ্জি ছিল। খবর পেয়ে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা রূপগঞ্জ থানায় ছুটে আসেন। তারা লাশ শনাক্ত করেন। নিহত শিমুলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার আন্নি জানান, সোহাগ ও নূর হোসেনকে নিয়ে শিমুল গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে বাসে ফেরার পথে গত বুধবার রাতে মানিকগঞ্জের দৌলতদিয়া ঘাট পার হবার পর দুটি মাইক্রোবাস বাসটিতে আটকায়। এরপর নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে ১০-১২ জনের কয়েকজন শিমুলকে অন্য আরেকটি গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর থেকে শিমুল নিখোঁজ ছিলেন। তার মুঠোফোন বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে থানায় এসে তিনি স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করেন। তার স্বামী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। তাদের এক কন্যাশিশু রয়েছে। নিহত সোহাগের ভাই মো. শাওনের তথ্যমতে, গত বুধবার বেড়াতে গিয়ে তার বড় ভাই নিখোঁজ হন। এর পর থেকে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফেসবুকে ছবি থেকে তারা রূপগঞ্জ থানায় এসে লাশ শনাক্ত করেন। তার ভাই ফাস্ট ফুড বার্গার ও স্যাটেলাইট ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা করতেন বলে তিনি জানান। নিহত সোহাগের ১০ বছর বয়সী সন্তান রয়েছে। রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির জানান, নিহত যুবকদের মাথা ও শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। নিহত একজনের পকেট থেকে ৬৫টি ইয়াবা বড়ি জব্দ করা হয়েছে। নিহত যুবকদের স্বজনেরা লাশ শনাক্ত করেছেন। তবে ওই যুবকদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রয়েছে কি না, তা জানাতে পারেননি তিনি। পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওসি বলেন, সেখানে জেলা পুলিশের কোনো অভিয়ান চালানো হয়নি। অন্য কোনো বাহিনী তাদের আটক করেছিল কি না, সে তথ্য আমাদের কাছে নেই। স্বজনরা এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান ওসি। নিহতদের পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ভাষ্য জানা যায়নি।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৫:৩৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
৯১৮ Time View

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহর থেকে গুলিবিদ্ধ তিন যুবকের পরিচয় মিলেছে।

আপডেট সময় : ০৫:৩৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সবুজদেশ ডেক্স: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহর থেকে গুলিবিদ্ধ তিন যুবকের পরিচয় মিলেছে। নিহতরা হলেন, রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকার শহীদুল্লাহর ছেলে সোহাগ ভুইয়া (৩২), ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আব্দুল মান্নানের ছেলে শিমুল আজাদ (৩০)। একই এলাকার আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে ও মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার পাইকপাড়া এলাকার আ. ওহাবের ছেলে নুর হোসেন বাবু (৩০)। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ির এলাকায়। এর মধ্যে সোহাগ ও শিমুল পরস্পরের বন্ধু, আর শিমুল ও বাবু সম্পর্কে ভায়রা ভাই। শিমুল ও নূর হোসেন ঝুটের ব্যবসা করে ও আর সোহাগ স্যাটেলাইট ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা করতেন। স্বজনদের দাবি, শিমুল আজাদের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ বেড়াতে গিয়েছিলেন তারা। গত বুধবার ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে মাওয়া ফেরী পার হওয়ার পর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবির সদস্য পরিচয়ে তাদেরকে যাত্রীবাহী বাস থেকে নামিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন। তিনজনই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের আলমপুরের ১১ নম্বর ব্রিজ এলাকা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সকালে লাশ উদ্ধারের পর তাৎক্ষণিকভাবে নিহত যুবকদের পরিচয় জানা যায়নি বলে জানায় পুলিশ। এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির জানান, আলমপুরের ১১ নম্বর ব্রিজ এলাকায় সড়কের পাশে তিন যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকা থেকে তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। নিহত তিন যুবকের পরনে প্যান্ট, শার্ট ও গেঞ্জি ছিল। খবর পেয়ে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা রূপগঞ্জ থানায় ছুটে আসেন। তারা লাশ শনাক্ত করেন। নিহত শিমুলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার আন্নি জানান, সোহাগ ও নূর হোসেনকে নিয়ে শিমুল গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে বাসে ফেরার পথে গত বুধবার রাতে মানিকগঞ্জের দৌলতদিয়া ঘাট পার হবার পর দুটি মাইক্রোবাস বাসটিতে আটকায়। এরপর নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে ১০-১২ জনের কয়েকজন শিমুলকে অন্য আরেকটি গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর থেকে শিমুল নিখোঁজ ছিলেন। তার মুঠোফোন বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে থানায় এসে তিনি স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করেন। তার স্বামী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। তাদের এক কন্যাশিশু রয়েছে। নিহত সোহাগের ভাই মো. শাওনের তথ্যমতে, গত বুধবার বেড়াতে গিয়ে তার বড় ভাই নিখোঁজ হন। এর পর থেকে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফেসবুকে ছবি থেকে তারা রূপগঞ্জ থানায় এসে লাশ শনাক্ত করেন। তার ভাই ফাস্ট ফুড বার্গার ও স্যাটেলাইট ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা করতেন বলে তিনি জানান। নিহত সোহাগের ১০ বছর বয়সী সন্তান রয়েছে। রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির জানান, নিহত যুবকদের মাথা ও শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। নিহত একজনের পকেট থেকে ৬৫টি ইয়াবা বড়ি জব্দ করা হয়েছে। নিহত যুবকদের স্বজনেরা লাশ শনাক্ত করেছেন। তবে ওই যুবকদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রয়েছে কি না, তা জানাতে পারেননি তিনি। পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওসি বলেন, সেখানে জেলা পুলিশের কোনো অভিয়ান চালানো হয়নি। অন্য কোনো বাহিনী তাদের আটক করেছিল কি না, সে তথ্য আমাদের কাছে নেই। স্বজনরা এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান ওসি। নিহতদের পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ভাষ্য জানা যায়নি।