নারী পাচারকারী চক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার
খুলনায় নারী পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার গভীর রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ মেয়েটিকে বাবার কাছ থেকে হেফাজতে নিয়েছে। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে খুলনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া দুই পাচারকারী হল, নগরীর ৫নং মাছঘাট এলাকার শেখ জামাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৫) এবং সোনাডাঙ্গা বাসস্টান্ড মাহাতাব উদ্দিন সড়ক আদর্শ কলোনী এলাকার পনু হাওলাদারের মেয়ে লাকি আক্তার ইতি (২৩)। তাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চক্রটিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো.মুনীর উল গিয়াস। তিনি বলেন, শহর এবং গ্রামের সহজ সরল মেয়েদের বিভিন্ন কাজের প্রলোভন দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করে এ চক্রটি। সেখানে নিয়ে তাদের দিয়ে প্রতিতা বৃত্তি করা হয়। এমন একটি ঘটনা খুলনার একটি কিশোরীর সাথে হতে যাচ্ছিল।
তিনি বলেন, ১৭ ডিসেম্বর নগরীর ৫ নং মাছ ঘাট এলাকার সি ব্লকের এক কিশোরীকে কাজের প্রলোভন দেখায় সাইফুল। তাতে রাজি হয়ে যায় ওই কিশোরী। কাউকে কিছু না জানিয়ে ওই সে ওইদিন ভোর রাতে বাড়ির সবার অজান্তে সাইফুলের সাথে বেরিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ১৭ ডিসেম্বর সকালে ওই কিশোরীকে সাইফুল পাচারকারী চক্রের অন্য সদস্য সোনাডাঙ্গার লাকি আক্তার ইতির কাছে পৌছে দেয়। ওইদিন লাকি তাকে নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার একটি বাড়িতে রেখে দেয়। তখনও বুঝতে পারেনি যে সে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি আচ করতে পেরে কৌশল অবলম্বন করে তার বাবার ফোনে কল দেয় মেয়েটি। তখন তার বাবা স্থানীয় ব্যক্তিদের বিষয়টি জানায়। স্থানীয়রা সাইফুলকে তার মেয়েকে ফেরত দেওয়ার জন্য তাগিদ দিতে থাকে।
এরপর থেকে সাইফুল কিশোরীর বাবাকে হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি দেয়। পরে বিষয়টি থানায় জানানো হলে পুলিশ সাইফুলকে আটকের চেষ্টা করতে থাকে। ১৯ ডিসেম্বর সাতক্ষীরায় স্থানীয়দের সহায়তায় কিশোরীকে ফিরিয়ে এনে পুলিশ হেফাজতে নেয়। এরপর থেকে পাচারকারী ওই দু’সদস্যকে ধরতে পুলিশ বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পাততে থাকে। পুলিশের ফাঁদে পা দিয়েই রোববার রাতে সাইফুল ৫ নং মাছঘাট সি ব্লক থেকে এবং অপর সদস্য লাকি আক্তার ইতিকে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার মাহাতাব উদ্দিন সড়ক আদর্শ কলোনী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সাইফুল গ্রাম এবং শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কিশোরী ও মেয়েদের সংগ্রহ করে লাকি আক্তার ইতির কাছে দিত। ইতি খুলনা থেকে তাদের সাতক্ষীরা পর্যন্ত পৌছে দিত। এ কাজের বিনিময়ে কে কত টাকা পেত তা তিনি নির্দিৃষ্ট করে বলতে পারেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া কিশোরীর মা বাদী হয়ে খুলনা থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনের ১০(১)/৭ একটি মামলা দায়ের করেছেন। সাইফুলকে আদালতে নেওয়া হলে সে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইতি পর্যন্ত কোন নারী বা কিশোরীকে পৌছে দেওয়া বাবদ সাইফুল ১০ হাজার টাকা পেত।
সবুজদেশ/এসইউ