আমেরিকান লেখক মার্ক টোয়েইন বলেছেন, ধূমপান ছেড়ে দেওয়া দুনিয়ার অন্যতম সহজ কাজ। কারণ, এটি তিনি একশবার করেছেন।
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীতে এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ধূমপান করে। তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ মানুষ এটি ছেড়ে দিতে চায়, কিন্তু পারে না। তারা পুনরায় আবার এটি গ্রহন করে থাকে। নিকোটিনের প্রভাব ব্রেইনে অনেক বেশি পরে। যারা অধিক ধূমপায়ী, তাদের অন্যের উপর শারীরিক নির্ভরশীল হয়।
কিন্তু কথা হচ্ছে, মানুষ কেন এটা ছেড়ে দিতে পারে না এবং বারবার কেন এটাকে পুনরায় গ্রহন করে?
একটা গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিকোটিন নেয়ার পেছনে অনেক সামাজিক কারণ আছে। যদিও নিকোটিন এর প্রতিস্থাপনের জন্য অন্য থেরাপি নেবার ব্যবস্থা রয়েছে। তবুও মানুষ এটি ত্যাগ করে তখনই, যখন তার নিজের ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকে।
যেসব মানুষ সামাজিক সমস্যার সম্মুখীন হয়, যারা সমাজে প্রতারিত ও মানসিকভাবে অসুস্থ তাদের নিকোটিন গ্রহণের প্রবণতা মানসিকভাবে সুস্থ মানুষের চেয়ে বেশি। ধূমপানের প্রবণতা জেলখানার কয়েদীদের মধ্যে স্বাভাবিক একটা বিষয়। যারা সংখ্যালঘু এবং যাদের শিক্ষার হার কম ও অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল তাদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
এক তৃতীয়াংশ মানুষ সামাজিকতা রক্ষার জন্য ধূমপান করে এবং অনেকে অন্যের দেখাদেখিও ধূমপান করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার কেউ শুধু হঠাৎ করে ধুমপান করে। কিন্তু তারা নিয়মিত নন। সামাজিকতা রক্ষার জন্য ধূমপান করা যুক্তরাজ্যে ধূমপানের একটা প্রধান কারন। সেখানে দেখা গেছে যারা নিজেরা ধূমপান করে না, তারাও পার্টিতে গেলে অন্যের দেখাদেখি ধূমপান করে বা করতে হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিকোটিন এর ব্যবহার সামাজিক কাজে উন্নতিসাধনে সাহায্য করে। যারা নিকোটিন গ্রহন করে না বা করা ছেড়ে দিয়েছে, তাদের সামাজিক কাজকর্মে বেশ বাধার সম্মুখীন হতে হয় যারা নিকোটিন নেয় তাদের চেয়ে বেশি। নিকোটিন মানুষকে সামাজিক দুশ্চিন্তা থেকেও দূরে রাখে। এটাও একটা কারণ ধূমপান ত্যাগ না করার।
সামাজিক ক্ষেত্রে যখন একজন ধূমপায়ী অন্য একজন ধূমপায়ীর সাথে পরামর্শ করে ধূমপান ত্যাগ করার, তখন তারা সেই কর্মক্ষেত্রে একাকীত্বের সম্মুখিন হয়। তাই ছেড়ে দেওয়াটা কঠিন হয়ে যায়। এগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, ধুমপান গ্রহিতাকে সামাজিকভাবে পুরস্কৃত করে।
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে।