ঢাকা ১১:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘নিজের বিচারের দাবিতে’ কলেজ শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ০৮:৪০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে।

 

যশোরের মণিরামপুরে হাফিজুর রহমান নামের এক কলেজশিক্ষক নিজের বিচার দাবি করে ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের ফটকে ব্যানার ঝুলিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তিনি। খবর পেয়ে আধাঘণ্টা পর কলেজের অধ্যক্ষ ওই শিক্ষকের কর্মসূচি ভাঙিয়ে তাকে অফিস কক্ষে নিয়ে যান।

হাফিজুর রহমান সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

হাফিজুর রহমানের অভিযোগ, তারই দুই সহকর্মী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রুহুল কুদ্দুস টিটো ও ভূগোল বিভাগের আব্দুস সালাম কলেজের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে তাকে নিয়ে নানা আপত্তিকর কথা লিখেছেন। যা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। তিনি কথাগুলোর ভার নিতে না পেরে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে ফিরে এসে নিজের বিচার দাবি করে তিনি কলেজের ফটকে অবস্থান কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি আরও বলেন, কলেজে নিয়মিত কমিটি গঠনের উদ্দেশে শিক্ষক প্রতিনিধি (টিআর) নির্বাচন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়েছে। নিয়মিত কমিটিতে তিনজন টিআর নির্বাচিত হবেন। আমি একজন প্রার্থী। বর্তমান এডহক কমিটির টিআর রুহুল কুদ্দুস টিটো ও শিক্ষক আব্দুস সালামসহ আমরা পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অধিকাংশ শিক্ষক আমাকে ভোট দিতে চেয়েছেন। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে টিটো ও আব্দুস সালাম আমার সম্পর্কে কলেজের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে উল্টোপাল্টা লিখেছেন।

এ কলেজশিক্ষক বলেন, ওই দুই শিক্ষকের ভাষায় আমি খারাপ মানুষ। আমি মনে করি আমি খারাপ হলে আমার বিচার হওয়া উচিত। এজন্য আমি নিজের বিচার দাবি করে কলেজের সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।

হাফিজুর বলেন, পরে অধ্যক্ষ স্যার এসে আমাকে অনুরোধ করে অফিসে নিয়ে গেছেন। আমার অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বলেছেন তিনি। তিনি একটা সমাধান দেবেন। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এজন্য লিখিত দেওয়ার ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত জানাইনি।

সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের অভিযোগ তোলা দুই শিক্ষকের মধ্যে রুহুল কুদ্দুস টিটোর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, হাফিজুর রহমান নিজে থেকে কলেজে নানা দায়িত্বে আসতে চান। সোমবার কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। তাকে দায়িত্ব দেওয়া না হওয়ায় তিনি চটেছেন। এছাড়া টিআর নির্বাচনে তাকে ভোট না দিলে তিনি কয়েকজন শিক্ষককে দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কলেজের ১০-১২ জন শিক্ষকের একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ আছে। ভোট চাওয়া নিয়ে কয়েকজন শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে পেরে গ্রুপে আমি লিখেছিলাম, হাফিজুর ভাই, আপনার চেহারা দিন দিন সুন্দর হচ্ছে কিন্তু আচরণ ভালো করা দরকার। এর বাইরে তাকে নিয়ে খারাপ কোনো মন্তব্য আমরা কোনো শিক্ষক করিনি।

সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক হাফিজুর রহমানের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে পেরে আমি নিজে তাকে কর্মসূচি ভাঙিয়ে অফিসে ডেকে এনে আলোচনায় বসেছিলাম। তিনি দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে খারাপ মন্তব্যের অভিযোগ তুলে উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন। আমি প্রমাণাদিসহ তাকে অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বলেছি।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :
জনপ্রিয়

‘নিজের বিচারের দাবিতে’ কলেজ শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি

Update Time : ০৮:৪০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

যশোরের মণিরামপুরে হাফিজুর রহমান নামের এক কলেজশিক্ষক নিজের বিচার দাবি করে ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের ফটকে ব্যানার ঝুলিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তিনি। খবর পেয়ে আধাঘণ্টা পর কলেজের অধ্যক্ষ ওই শিক্ষকের কর্মসূচি ভাঙিয়ে তাকে অফিস কক্ষে নিয়ে যান।

হাফিজুর রহমান সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

হাফিজুর রহমানের অভিযোগ, তারই দুই সহকর্মী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রুহুল কুদ্দুস টিটো ও ভূগোল বিভাগের আব্দুস সালাম কলেজের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে তাকে নিয়ে নানা আপত্তিকর কথা লিখেছেন। যা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। তিনি কথাগুলোর ভার নিতে না পেরে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে ফিরে এসে নিজের বিচার দাবি করে তিনি কলেজের ফটকে অবস্থান কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি আরও বলেন, কলেজে নিয়মিত কমিটি গঠনের উদ্দেশে শিক্ষক প্রতিনিধি (টিআর) নির্বাচন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়েছে। নিয়মিত কমিটিতে তিনজন টিআর নির্বাচিত হবেন। আমি একজন প্রার্থী। বর্তমান এডহক কমিটির টিআর রুহুল কুদ্দুস টিটো ও শিক্ষক আব্দুস সালামসহ আমরা পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অধিকাংশ শিক্ষক আমাকে ভোট দিতে চেয়েছেন। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে টিটো ও আব্দুস সালাম আমার সম্পর্কে কলেজের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে উল্টোপাল্টা লিখেছেন।

এ কলেজশিক্ষক বলেন, ওই দুই শিক্ষকের ভাষায় আমি খারাপ মানুষ। আমি মনে করি আমি খারাপ হলে আমার বিচার হওয়া উচিত। এজন্য আমি নিজের বিচার দাবি করে কলেজের সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।

হাফিজুর বলেন, পরে অধ্যক্ষ স্যার এসে আমাকে অনুরোধ করে অফিসে নিয়ে গেছেন। আমার অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বলেছেন তিনি। তিনি একটা সমাধান দেবেন। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এজন্য লিখিত দেওয়ার ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত জানাইনি।

সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের অভিযোগ তোলা দুই শিক্ষকের মধ্যে রুহুল কুদ্দুস টিটোর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, হাফিজুর রহমান নিজে থেকে কলেজে নানা দায়িত্বে আসতে চান। সোমবার কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। তাকে দায়িত্ব দেওয়া না হওয়ায় তিনি চটেছেন। এছাড়া টিআর নির্বাচনে তাকে ভোট না দিলে তিনি কয়েকজন শিক্ষককে দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কলেজের ১০-১২ জন শিক্ষকের একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ আছে। ভোট চাওয়া নিয়ে কয়েকজন শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে পেরে গ্রুপে আমি লিখেছিলাম, হাফিজুর ভাই, আপনার চেহারা দিন দিন সুন্দর হচ্ছে কিন্তু আচরণ ভালো করা দরকার। এর বাইরে তাকে নিয়ে খারাপ কোনো মন্তব্য আমরা কোনো শিক্ষক করিনি।

সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক হাফিজুর রহমানের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে পেরে আমি নিজে তাকে কর্মসূচি ভাঙিয়ে অফিসে ডেকে এনে আলোচনায় বসেছিলাম। তিনি দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে খারাপ মন্তব্যের অভিযোগ তুলে উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন। আমি প্রমাণাদিসহ তাকে অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বলেছি।

সবুজদেশ/এসএএস