নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
সবুজদেম ডেক্সঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে বর্তমানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। দেশের মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ রয়েছে। মানুষ মনে করেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এবং তাঁরা ভোট দিয়ে মনমতো সরকার গঠন করতে পারবেন।
নিউইয়র্কে ভয়েস অব আমেরিকাকে শনিবার দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত প্রায় পাঁচ বছরে স্থানীয়, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার নির্বাচন মিলিয়ে প্রায় ছয় হাজার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব নির্বাচন যাচাই করলে পরিষ্কার হয়ে যায় যে এখন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুন্দর পরিবেশ আছে এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন সে নির্বাচন করতে পারবে। তিনি বলেন, আগে সরকার ইচ্ছেমতো নির্বাচন কমিশন গঠন করত। এখন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় একটা সার্চ কমিটির মাধ্যমে।
অর্থ পাচার, ঋণখেলাপি, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ, গুম-খুন—এসব অভিযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর কি ঋণখেলাপির কালচার ছিল? ছিল না। এই কালচার শুরু করল কে? পঁচাত্তরের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে কিছু লোককে খুশি করে তাদের সমর্থন নেওয়ার জন্য ব্যাংক খুলে দিল, যাকে-তাকে ঋণ দিল। তারা ঋণ ফেরত দিল কি দিল না, সেটা দেখল না। এভাবে এই মিলিটারি রুলাররাই এ দেশে ঋণখেলাপির কালচার শুরু করল।’
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা ও দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজ করতে গেলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে কথাগুলো আসে, হ্যাঁ, সে সমস্যা হয়তো থাকতে পারে। কিন্তু সেই সমস্যা কি আমার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারছে? তা তো পারছে না। যেটা আমার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারছে না, সেটা নিয়ে এত আলোচনার তো দরকার নেই।’
ভারতের আসামে ৪০ লাখ মানুষকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে তাদের বিতাড়িত করতে বিজেপির নেতাদের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা বোধ হয় তাদের পলিটিকস। আমি তো মনে করি না যে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী, যথেষ্ট মজবুত।’ তিনি বলেন, ‘তাদেরই (ভারত) নাগরিক, তারা যদি কাউকে অবৈধ বলে, এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার। বিষয়টা নিয়ে আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, তাদের ফেরত পাঠানো বা এ ধরনের কোনো চিন্তা তাঁদের নেই।’
বাংলাদেশের অনেক অর্জন সত্ত্বেও কখনো কখনো ক্ষোভ, হতাশার কথা শোনা যায়—এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অনেক অর্জন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি সত্ত্বেও কিছু ব্যক্তি এসব ভালো চোখে দেখেন না। তাঁরা গণতান্ত্রিক পরিবেশে স্বস্তি বোধ করেন না। মানুষ ভালো থাকলে, সুখে থাকলে তাঁদের ভালো লাগে না। তিনি আরও বলেন, ‘তাঁরা তখনই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন, যদি এ দেশে সংবিধান লঙ্ঘন করে কোনো মহল ক্ষমতা দখল করে। তখন তাঁদের গুরুত্বটা বাড়ে। তাঁরা কেউ কেউ হয়তো পতাকার আশা করেন, কেউ একটু ভালো থাকার আশা করেন বা ভালো একটা পদ পাওয়ার আশা করেন বা ক্ষমতার স্বাদটা একটু পেতে চান।’