ঢাকা ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেই সতর্কতামূলক প্রচার-প্রচারণা, সাতক্ষীরায় নিপাহ ভাইরাস সন্দেহে পাঁচজন

Reporter Name

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

চলছে শীতের মৌসুম। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছের কাঁচা রস খাওয়ার প্রবণতাও কম নয়। তবে এই খেজুরের কাঁচা রসেই ছড়িয়ে থাকে নিপাহ নামক ভাইরাস। যে ভাইরাসে আক্রন্ত হলে অধিকাংশ মানুষেরই মৃত্যু ঘটে। সাতক্ষীরা জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নিপাহ ভাইরাসে আক্রন্তের বিষয়ে তেমন দৃশ্যমান সর্তকতামূলক প্রচার প্রচারণা নেই। ভয়াবহ এ ভাইরাসের খবর জানে না গাছিরা। জানা নেই সাধারণ মানুষদেরও। নিপাহ ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইনস্টিটিউট অফ ইপিডেমিওলোজি ডিজেজ কন্ট্রোল এন্ড রিচার্স (আইইডিসিআর)।

সরকারের রোগ তত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মিরজাদী সেবরিনা ফ্লোরা গত ১৮ নভেম্বর (সোমবার) নিপাহ ভাইরাস নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০১-২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩১৩ জন মানুষ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ২১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরে আক্রান্ত হয়েছেন আটজন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন পাঁচজন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের আব্দুল কাদের (৩৮)। ১৬ বছর ধরে প্রতি বছরই শীত মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন। রস বিক্রি ও রস থেকে গুড় তৈরী করে বিক্রি করেন হাটে বাজারে। শীত মৌসুমে ৪৫-৫০ হাজার টাকা রোজগার করেন তিনি। তবে তিনি জানেন না, খেজুর রসের ভয়াবহ নিপাহ ভাইরাসের খবর।

গাছি আব্দুল কাদের বলেন, শীত মৌসুমে খেজুর গাছ কেঁটে রস সংগ্রহ করেই শীত মৌসুমে রোজকার করি। উপার্জনের সেই অর্থ দিয়েই চলে সংসার। এ বছর আমি ৭০-৮০টা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি। খেজুর গাছে বিভিন্ন পাখিসহ রাতে বাদুড় মুখ দেয়। সেই রসই আমি বিক্রি করি। তবে নিপাহ ভাইরাস বলে কিছু আছে সেটি আমার জানা নেই।

একই গ্রামের ওই গাছির প্রতিবেশী আবু সাঈদ সরদার বলেন, খেজুরের কাঁচা রস আমরা প্রতিনিয়তই খাই। শুধু আমি নই এলাকার বহু মানুষ কাঁচা রস খেয়ে থাকেন। বিকেলে বা সন্ধ্যায় হাটে বাজারে গাছিরা কাঁচা রস বিক্রি করেন। অনেকেই কাঁচা রস খেতে পছন্দ করেন।

কাঁচা রসে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় আক্রান্ত হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এ বিষয়টি জানেন কি না ? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খেজুরের রস খাওয়ার ব্যাপারে এখন থেকে সতর্ক থাকবো।

জেলার তালা সদরের শিবপুর গ্রামের গাছি আবু বক্কার হোসেন। প্রতি বছরই শীত মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে উপার্জন করেন। তিনি বলেন, আমি ৩০টা খেজুর গাছ থেকে এ বছর রস সংগ্রহ করছি। সকাল থেকে খেজুর গাছে ভাড় (মাটির মাত্র) ঝুলাতে ঝুলাতে দুপুর হয়ে যায়। এরপর বিকেলে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বিক্রি করি। প্রতি ভাড় খেজুরের কাঁচা রস ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া রস জ্বালিয়ে উৎপাদিত গুড় বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকায়। কাঁচা রসে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় এ ঘটনা আমাকে কেউ বলেনি।

ওই এলাকার মাঝিয়াড়া বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল মোল্লা বলেন, গ্রামের সাধারণ মানুষরা প্রতিদিনই কাঁচা খেজুরের রস খায়। নিপাহ ভাইরাসের সর্তকতামূলক স্বাস্থ্য বিভাগের কোন প্রচারণা আজও চোঁখে পড়েনি।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (মেডিসিন বিশেষজ্ঞ) চিকিৎসক কাজী আরিফ জানান, চলতি বছর ৫ জন রোগী সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের নমুনা সংগ্রহ করে সরকারের রোগ তত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর কাছে পাঠিয়েছি। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। তবে ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠাণ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোন ফলাফল আমরা পায়নি।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমান পর্যন্ত কোন নিপাহ ভাইরাসে আক্রন্ত হওয়ার রোগী আমার কাছে আসেনি।

নিপাহ ভাইরাসসহ ১০-১২টি ভাইরাস নিয়ে কাজ করা সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এর স্টাফ ও সাতক্ষীরা ফিল্ড রিসার্চ এসিট্যান্ট হাসানুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরায় চলতি বছর বা তার আগে কতজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রন্ত হয়েছেন তার সঠিক তথ্য আমার কাছে নেই। আমরা নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার হেড অফিসে প্রেরণ করি। সেখান থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোন ফলাফল সাতক্ষীরায় পাঠানো হয় না। যার কারণে তথ্যটি আমাদের কাছে নেই। তবে সম্প্রতিও চলতি বছর বেশ কয়েকজনকে সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির অফিস সহকারি শেখ হাফিজুর রহমান জানান, বর্তমান শীত মৌসুমে জেলাব্যাপী ৪০ হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা। কোন কৃষক খেজুর গাছের বাড়তি চাষ করেন না। পতিত জমিতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এসব গাছগুলো। যার কারণে গাছের সংখ্যা কমে গেছে। ২০১৮ সালে জেলায় খেজুরের গুড় উৎপাদন হয়েছিল ৮২২ মেট্রিকটন। আশা করছি, চলতি বছর ৮০০ মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যাবে।

নিপাহ ভাইরাসের ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক রয়েছে জানিয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়েত জানান, এটি একটি সংক্রামক রোগ। একবার আক্রান্ত হলে পরিত্রাণ পাওয়া কঠিন, মৃত্যু হতে পারে। শীতকালে গ্রামে এ ভাইরাসটি বেশী ছড়ায়। মূলত. খেজুরের কাঁচা রস থেকে এ ভাইরাসটি বেশী ছড়িয়ে থাকে। কোনো অবস্থাতেই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া যাবে না। তবে ফুটানো খেজুরের রস খাওয়া নিরাপদ।

তিনি বলেন, জেলাব্যাপী সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে নিপাহ ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্কতামূলক প্রচার প্রচারণা চালানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী উঠান বৈঠকগুলোতেও এ ব্যাপারে জনসাধারণকে সতর্ক করছেন। গ্রাম পর্যায়ে নিপাহ ভাইরাস সম্পর্কে সাধারণ মানুষ অবগত নয় এ বিষয়ে তিনি বলেন, গ্রামঞ্চলের মানুষদের সতর্ক করার জন্য আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:৪৯:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০
৫৫৮ Time View

নেই সতর্কতামূলক প্রচার-প্রচারণা, সাতক্ষীরায় নিপাহ ভাইরাস সন্দেহে পাঁচজন

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

চলছে শীতের মৌসুম। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছের কাঁচা রস খাওয়ার প্রবণতাও কম নয়। তবে এই খেজুরের কাঁচা রসেই ছড়িয়ে থাকে নিপাহ নামক ভাইরাস। যে ভাইরাসে আক্রন্ত হলে অধিকাংশ মানুষেরই মৃত্যু ঘটে। সাতক্ষীরা জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নিপাহ ভাইরাসে আক্রন্তের বিষয়ে তেমন দৃশ্যমান সর্তকতামূলক প্রচার প্রচারণা নেই। ভয়াবহ এ ভাইরাসের খবর জানে না গাছিরা। জানা নেই সাধারণ মানুষদেরও। নিপাহ ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইনস্টিটিউট অফ ইপিডেমিওলোজি ডিজেজ কন্ট্রোল এন্ড রিচার্স (আইইডিসিআর)।

সরকারের রোগ তত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মিরজাদী সেবরিনা ফ্লোরা গত ১৮ নভেম্বর (সোমবার) নিপাহ ভাইরাস নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০১-২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩১৩ জন মানুষ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ২১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরে আক্রান্ত হয়েছেন আটজন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন পাঁচজন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের আব্দুল কাদের (৩৮)। ১৬ বছর ধরে প্রতি বছরই শীত মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন। রস বিক্রি ও রস থেকে গুড় তৈরী করে বিক্রি করেন হাটে বাজারে। শীত মৌসুমে ৪৫-৫০ হাজার টাকা রোজগার করেন তিনি। তবে তিনি জানেন না, খেজুর রসের ভয়াবহ নিপাহ ভাইরাসের খবর।

গাছি আব্দুল কাদের বলেন, শীত মৌসুমে খেজুর গাছ কেঁটে রস সংগ্রহ করেই শীত মৌসুমে রোজকার করি। উপার্জনের সেই অর্থ দিয়েই চলে সংসার। এ বছর আমি ৭০-৮০টা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি। খেজুর গাছে বিভিন্ন পাখিসহ রাতে বাদুড় মুখ দেয়। সেই রসই আমি বিক্রি করি। তবে নিপাহ ভাইরাস বলে কিছু আছে সেটি আমার জানা নেই।

একই গ্রামের ওই গাছির প্রতিবেশী আবু সাঈদ সরদার বলেন, খেজুরের কাঁচা রস আমরা প্রতিনিয়তই খাই। শুধু আমি নই এলাকার বহু মানুষ কাঁচা রস খেয়ে থাকেন। বিকেলে বা সন্ধ্যায় হাটে বাজারে গাছিরা কাঁচা রস বিক্রি করেন। অনেকেই কাঁচা রস খেতে পছন্দ করেন।

কাঁচা রসে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় আক্রান্ত হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এ বিষয়টি জানেন কি না ? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খেজুরের রস খাওয়ার ব্যাপারে এখন থেকে সতর্ক থাকবো।

জেলার তালা সদরের শিবপুর গ্রামের গাছি আবু বক্কার হোসেন। প্রতি বছরই শীত মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে উপার্জন করেন। তিনি বলেন, আমি ৩০টা খেজুর গাছ থেকে এ বছর রস সংগ্রহ করছি। সকাল থেকে খেজুর গাছে ভাড় (মাটির মাত্র) ঝুলাতে ঝুলাতে দুপুর হয়ে যায়। এরপর বিকেলে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বিক্রি করি। প্রতি ভাড় খেজুরের কাঁচা রস ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া রস জ্বালিয়ে উৎপাদিত গুড় বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকায়। কাঁচা রসে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় এ ঘটনা আমাকে কেউ বলেনি।

ওই এলাকার মাঝিয়াড়া বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল মোল্লা বলেন, গ্রামের সাধারণ মানুষরা প্রতিদিনই কাঁচা খেজুরের রস খায়। নিপাহ ভাইরাসের সর্তকতামূলক স্বাস্থ্য বিভাগের কোন প্রচারণা আজও চোঁখে পড়েনি।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (মেডিসিন বিশেষজ্ঞ) চিকিৎসক কাজী আরিফ জানান, চলতি বছর ৫ জন রোগী সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের নমুনা সংগ্রহ করে সরকারের রোগ তত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর কাছে পাঠিয়েছি। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। তবে ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠাণ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোন ফলাফল আমরা পায়নি।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমান পর্যন্ত কোন নিপাহ ভাইরাসে আক্রন্ত হওয়ার রোগী আমার কাছে আসেনি।

নিপাহ ভাইরাসসহ ১০-১২টি ভাইরাস নিয়ে কাজ করা সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এর স্টাফ ও সাতক্ষীরা ফিল্ড রিসার্চ এসিট্যান্ট হাসানুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরায় চলতি বছর বা তার আগে কতজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রন্ত হয়েছেন তার সঠিক তথ্য আমার কাছে নেই। আমরা নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার হেড অফিসে প্রেরণ করি। সেখান থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোন ফলাফল সাতক্ষীরায় পাঠানো হয় না। যার কারণে তথ্যটি আমাদের কাছে নেই। তবে সম্প্রতিও চলতি বছর বেশ কয়েকজনকে সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির অফিস সহকারি শেখ হাফিজুর রহমান জানান, বর্তমান শীত মৌসুমে জেলাব্যাপী ৪০ হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা। কোন কৃষক খেজুর গাছের বাড়তি চাষ করেন না। পতিত জমিতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এসব গাছগুলো। যার কারণে গাছের সংখ্যা কমে গেছে। ২০১৮ সালে জেলায় খেজুরের গুড় উৎপাদন হয়েছিল ৮২২ মেট্রিকটন। আশা করছি, চলতি বছর ৮০০ মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যাবে।

নিপাহ ভাইরাসের ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক রয়েছে জানিয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়েত জানান, এটি একটি সংক্রামক রোগ। একবার আক্রান্ত হলে পরিত্রাণ পাওয়া কঠিন, মৃত্যু হতে পারে। শীতকালে গ্রামে এ ভাইরাসটি বেশী ছড়ায়। মূলত. খেজুরের কাঁচা রস থেকে এ ভাইরাসটি বেশী ছড়িয়ে থাকে। কোনো অবস্থাতেই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া যাবে না। তবে ফুটানো খেজুরের রস খাওয়া নিরাপদ।

তিনি বলেন, জেলাব্যাপী সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে নিপাহ ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্কতামূলক প্রচার প্রচারণা চালানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী উঠান বৈঠকগুলোতেও এ ব্যাপারে জনসাধারণকে সতর্ক করছেন। গ্রাম পর্যায়ে নিপাহ ভাইরাস সম্পর্কে সাধারণ মানুষ অবগত নয় এ বিষয়ে তিনি বলেন, গ্রামঞ্চলের মানুষদের সতর্ক করার জন্য আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে।