তিনি বলেছেন, “নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে কেউ বঞ্চিত হয় না… স্বাধীনতাও যেমন পেয়েছে, উন্নয়নও তেমন পাবে।”
বাড্ডা নর্থ ইউলুপের নিচে শনিবার বিকালে এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার যানজট নিরসনে ২০ বছর মেয়াদী কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেওয়ার কথাও বলেন।
যানজটের কথা বলতে গিয়ে উন্নত দেশগুলোর উপমা টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যানজট নতুন কিছু না। পৃথিবীর বড় বড় দেশে যানজট আছে।”
যানজট নিরসন ও সৌন্দর্য বর্ধন করে ঢাকাকে একটি আধুনিক ও উন্নত শহরের আদলে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিয়ে কাজ করে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা প্ল্যান নিয়েছি পুরো ঢাকাকে ঘিরে একটা রিংরোড করব। যেটা হবে সম্পূর্ন এলিভেটেড রিংরোড।
“যোগাযোগটা যাতে আরও সহজ হয় সেই ব্যবস্থাটা আমরা হাতে নিয়েছি।”
‘ঢাকা সার্কুলার রুট’ এবং ‘ইস্টার্ন বাইপাস’ নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করারও কথাও প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-ময়মনসিংহের চার লেইনের মহাসড়ককে শিগগিরই ছয় লেইনে উন্নীত করা হবে বলেও জানান তিনি।উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণকাজ চলছে। ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। বাকী অংশ ২০২০ সালের মধ্যে চালু হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এক ঘণ্টায় যাতায়াতের জন্য বুলেট ট্রেন চালুর পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যাতে লোকজন ঢাকায় দিনে কাজ করে দিনেই ফিরে যেতে পারেন।”
এছাড়া ঢাকা থেকে সিলেট, রাজশাহী, দিনাজপুর, বরিশাল এবং কলকাতায় দ্রুতগতির ট্রেন চালু করার পরিকল্পনার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
ঢাকায় পাতাল রেল চালুর সাম্ভ্যবতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পুরো ঢাকাকে ঘিরে পাতাল ট্রেন যাতে করা যায় সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিয়েছি।”
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিমান বন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৪০ কিলোমিটার পাতালরেল এবং পূর্বাচল থেকে কুড়িল পর্যন্ত ১০ দশমিক ২০ কিলোমিটার উড়াল রেল বাস্তবায়নের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।
হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী, মিরপুর ও গুলশান হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন পাঁচ বাস্তবায়নে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য এদেশের সার্বিক উন্নয়ন। জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল বলেই আমরা জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।
“একটানা দুই টার্ম ক্ষমতায় আছি বলেই উন্নয়নের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পেরেছি।”
এই ইউলুপ চালু হওয়ায় প্রগতি সরণীসহ রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, মালিবাগ, মগবাজার এলাকার যানজট নিরসন হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব পালন করেছে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের ১৭ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেনাবাহিনী তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।”
সব ধরনের কারিগরি মান বজায় রেখে দেশীয় সম্পদ এবং মেধা ব্যবহার করে সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সহযোগিতার জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক ও সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্থানীয় সাংসদ এ কে এম রহমত উল্লাহ, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং প্রকল্প পরিচালক মেজর জেনারেল আবু সাঈদ মো. মাসুদ বক্তব্য রাখেন।