ঢাকা ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ মামলা, গ্রেপ্তার ৫০

Reporter Name

সবুজদেশ ডেক্সঃ রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আসামি করে তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার পল্টন থানায় এসব মামলা করা হয়।

পল্টন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, রাস্তা অবরোধ, পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে এসব মামলা হয়। বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় অন্তত ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত চারটার দিকে পল্টন থানায় যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, এ মামলায় নতুন করে আর কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হওয়ার পর তিন দিন ধরেই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয় এলাকায় বইছিল নির্বাচনী উৎসবের হাওয়া। গতকাল দুপুরে পুলিশের ‘রাস্তা চালু রাখার চেষ্টা’য় উৎসবের পরিবেশ সংঘাতময় হয়ে ওঠে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের দুটি গাড়ি পোড়ানো হয়, ভাঙচুর করা হয় অনেক গাড়ি। এরপর থেকেই চলছে দোষারোপ আর পাল্টা দোষারোপ।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, গতকাল দুপুরে হাজারখানেক নেতা-কর্মীর মিছিল পুরো রাস্তা আটকে দেয়। মিছিলটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে একটি লেন চালু করার চেষ্টায় পুলিশ লাঠিপেটা করলে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। নেতা-কর্মীরাও খুব দ্রুত মারমুখী হয়ে ওঠেন। এরপর তাঁদের লক্ষ্য করে পুলিশ প্রচুর কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ছররা গুলি ছোড়ে। গুলি-কাঁদানে গ্যাসের শেলের দ্রুম দ্রুম শব্দ, গ্যাসের ধোঁয়া, নেতা-কর্মীদের হইচই, ধর ধর চিৎকার, মানুষের ছোটাছুটি, হুড়মুড় করে দোকানের ঝাঁপ নামানোর শব্দ—সব মিলিয়ে কিছুক্ষণের জন্য পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। কিছু যানবাহন ভাঙচুর ও পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দেড় ঘণ্টার সংঘর্ষে ২৩ পুলিশ সদস্য এবং অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি উভয় পক্ষের।

সংঘর্ষের জন্য পুলিশ দুষছে মির্জা আব্বাস, তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, বিএনপির নেতা আখতারুজ্জামান ও নবীউল্লাহকে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, বিনা উসকানিতে কেবল ইস্যু তৈরির জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন বানচালের জন্য পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে বিএনপি।

অন্যদিকে, গতকাল মির্জা আব্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা সরকার বা আওয়ামী লীগের সাবোটাজ হতে পারে।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, নির্বাচন বানচালের জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে বিনা উসকানিতে তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:২৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৮
১৪২৪ Time View

নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ মামলা, গ্রেপ্তার ৫০

আপডেট সময় : ০৯:২৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

সবুজদেশ ডেক্সঃ রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আসামি করে তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার পল্টন থানায় এসব মামলা করা হয়।

পল্টন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, রাস্তা অবরোধ, পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে এসব মামলা হয়। বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় অন্তত ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত চারটার দিকে পল্টন থানায় যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, এ মামলায় নতুন করে আর কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হওয়ার পর তিন দিন ধরেই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয় এলাকায় বইছিল নির্বাচনী উৎসবের হাওয়া। গতকাল দুপুরে পুলিশের ‘রাস্তা চালু রাখার চেষ্টা’য় উৎসবের পরিবেশ সংঘাতময় হয়ে ওঠে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের দুটি গাড়ি পোড়ানো হয়, ভাঙচুর করা হয় অনেক গাড়ি। এরপর থেকেই চলছে দোষারোপ আর পাল্টা দোষারোপ।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, গতকাল দুপুরে হাজারখানেক নেতা-কর্মীর মিছিল পুরো রাস্তা আটকে দেয়। মিছিলটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে একটি লেন চালু করার চেষ্টায় পুলিশ লাঠিপেটা করলে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। নেতা-কর্মীরাও খুব দ্রুত মারমুখী হয়ে ওঠেন। এরপর তাঁদের লক্ষ্য করে পুলিশ প্রচুর কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ছররা গুলি ছোড়ে। গুলি-কাঁদানে গ্যাসের শেলের দ্রুম দ্রুম শব্দ, গ্যাসের ধোঁয়া, নেতা-কর্মীদের হইচই, ধর ধর চিৎকার, মানুষের ছোটাছুটি, হুড়মুড় করে দোকানের ঝাঁপ নামানোর শব্দ—সব মিলিয়ে কিছুক্ষণের জন্য পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। কিছু যানবাহন ভাঙচুর ও পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দেড় ঘণ্টার সংঘর্ষে ২৩ পুলিশ সদস্য এবং অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি উভয় পক্ষের।

সংঘর্ষের জন্য পুলিশ দুষছে মির্জা আব্বাস, তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, বিএনপির নেতা আখতারুজ্জামান ও নবীউল্লাহকে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, বিনা উসকানিতে কেবল ইস্যু তৈরির জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন বানচালের জন্য পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে বিএনপি।

অন্যদিকে, গতকাল মির্জা আব্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা সরকার বা আওয়ামী লীগের সাবোটাজ হতে পারে।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, নির্বাচন বানচালের জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে বিনা উসকানিতে তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়।