চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিম কামাল উদ্দিন (৩০) তার পরকীয়া প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থানকালে জনতার আটকের পর মোটরসাইকেল ফেলে কৌশলে পালিয়েছে। শুক্রবার বিকেলের দিকে উপজেলার বাঁকা গ্রামে সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় জীবননগর পরকীয়া প্রেমিকা ওই গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জীবননগর উপজেলার বাঁকা পুর্বপাড়ার আবুল কাশেমের মেয়ে এক সন্তানের জননী আলিমা খাতুন (২৪) দীর্ঘ দিন প্রবাসে থাকার পর কয়েক বছর পর বাবার বাড়ি বাঁকায় ফিরে আসেন। আকলিমার স্বামীর সাথে বনাবনি না হওয়ায় তিনি বাবার বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এসময় তার সাথে পরিচয় হয় সুটিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ কামাল উদ্দিনের। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে পরকীয়া সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের সুবাদে তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ায়।
পরকীয়া প্রেমিকা আকলিমা খাতুন বলেন, গ্রাম পুলিশ কামাল উদ্দিন আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ অবস্থায় গত চার মাস ধরে বিয়ের কথা বলে আমাকে তার বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে নিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করে। বর্তমানে আমাকে বিয়ে না করে নানা অজুহাতে কালক্ষেপণ করে আসছিল। গ্রাম পুলিশ কামাল একইভাবে গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমাদের বাড়িতে আসে এবং বিয়ের কোনো ব্যবস্থা না করে সে আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করতে চায়। কিন্তু আমি রাজি না হওয়ায় আমার সাথে ধস্তাধস্তি করার একপর্যায়ে আমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা কামালকে আটক করে ফেলে। পরে আমাদের গ্রামের মেম্বার খায়রুল ইসলাম এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে লোকজনের চাপে কামালের মোটরসাইকেলটি রেখে সন্ধ্যার পর কামালকে নিয়ে চলে যায়। কিন্তু কামাল বাড়িতে গিয়ে আমাদেরকে মোবাইলে মোটরসাইকেল চুরির মামলায় জড়ানোর হুমকি দিতে থাকে। এ ঘটনায় আমি ওইদিন থানায় মামলা দিয়েছি।
বাঁকা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, আকলিমা খাতুন হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে। গ্রাম পুলিশ কামাল উদ্দিনকে লোকজন দিনের বেলা আকলিমার বাড়িতে আটক করেছে। কিন্তু বর্তমানে ঘটনাটি ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান ও মেম্বার খায়রুল ইসলাম বিভিন্নভাবে টালবাহানা শুরু করেছেন।
বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার খায়রুল ইসলাম বলেন, আমি আসলে কামালকে জোর করে আনিনি। আপস নিস্পত্তির জন্য তাকে চেয়ারম্যানের কথামত নিয়ে আসা হয়েছে।
চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান বলেন, কামাল উদ্দিন আমার পরিষদের গ্রাম পুলিশ। আমি ঘটনাটি শোনার পর মেম্বার খায়রুল ইসলামকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি এবং সালিশ বৈঠকে বিষয়টি নিস্পত্তি করা হবে জানিয়েছে। এটা নিয়ে তো মামলা হওয়ার কথা নয়।
অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ কামাল উদ্দিন বলেন, আকলিমা সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। সে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা। আমি মূলত ঘটনার দিন তার বাড়িতে টাকা দেয়ার জন্য গিয়েছিলাম।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগটি সাব-ইন্সপেক্টর আমির হোসেন তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।