বিশেষ প্রতিনিধিঃ

দুইদিন আগে ছুটি নিয়ে কর্মস্থল সাতক্ষীরা থেকে এসেছিলেন মাস্টার্সের পরীক্ষা দিতে। বৃহস্পতিবার ফেরার কথা ছিল কর্মস্থলে। কিন্তু মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে লাশ হয়ে ফিরতে হলো মোস্তাফিজুর রহমান কল্লোলের। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের সুন্দরপুর গ্রামের ইছাহাক মন্ডলের ছেলে।

নিহতের ফুফাতো ভাই মিশন আলী বলেন, সে সাতক্ষীরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে উপ-পরিদর্শক সিপাহি পদে চাকরি করতেন। মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাড়িতে ছুটি নিয়ে এসেছিলেন। পরীক্ষা শেষ করে বাড়িতে ফেরার পথে বারোবাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে সে।

জানা গেছে, বাসটিতে যাত্রী ছিল ৪০ এর উর্ধ্বে। ওভারটেক করতে গিয়ে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান ১২ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। এরমধ্যে ওই বাসেই যাত্রী হিসেবে ছিলেন সাতক্ষীরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা।

সাতক্ষীরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক বিজয় কুমার বলেন, মোস্তাফিজুরের নিহতের কথা আমরা শুনেছি। শোনামাত্রই সেখানে অফিস থেকে দুইজনকে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার তার কর্মস্থলে ফেরার কথা ছিল। মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার মাগুরা গামী জিকে পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো গ-১১০২১৪) বাসটি যাত্রী নিয়ে যশোর থেকে মাগুরার দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বাসটি বারোবাজার পার হয়ে আমজাদ আলী ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌছালে বিপরীত থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহি বাসটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার উপর আড়াআড়ি হয়ে উল্টে পড়ে। এতে যাত্রীরা হাতহত হন। এঘটনায় এতে সড়কটির সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলের উভয় পাশে শত শত বাস ট্রাক আটকে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় জনতার সাথে কালীগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে।

নিহতরা হলেন- কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান (২২), ভাটপাড়া গ্রামের রনজিত দাসের ছেলে সনাতন দাশ (২৫), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে রেশমা (২৬), আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ গ্রামের জান্নাতুল বিশ^াসের ছেলে ওয়ালিউল আলম শুভ (২৫), শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া গ্রামের মৃত মহরম বিশ^াসের ছেলে আব্দুল আজিজ (৭৫), সদর উপজেলার নাথকুন্ডু গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে ইউনুস আলী (৩২), বাসের ড্রাইভার মাগুরা জেলার উজ্জল হোসেন (৩৫), কোটচাঁদপুর উপজেলার হরিণদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হারুনুর রশিদ সোহাগ (২৪), কালীগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ (২৬), যশোরের মনিরামপুর এলাকার শিলা খাতুন (২৮) ও ভাসুরের মেয়ে খাদিজা খাতুন (৭) ও নড়াইলের আব্দুর রশিদ মোড়ল।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, নিহতদের ১২ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here