ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডি, বিভাগের শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাসস্থ থানায় সোপর্দ করেন। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

তোপের মুখে পড়া ওই ছাত্রলীগ নেতা ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মামুনুর রশীদ।

ঘটনার সূত্রপাত সকাল সাড়ে ৯টায়। তখন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মানোন্নয়ন পরীক্ষা শুরু হয়। ছাত্রলীগ নেতা মামুনুর রশীদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরে তার ক্যাম্পাসে আসার খোঁজ পেয়ে শিক্ষার্থীরা ভবনের তৃতীয় তলায় পরীক্ষার হলের সামনে জড়ো হয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দেয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে অতর্কিতভাবে কিছু কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় দেয়। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে নিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকাশ্যে জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা ও শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া সে আন্দোলন পরবর্তী সময়েও বিভিন্ন অপপ্রচারে লিপ্ত ছিল এবং আবার শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসে আন্দোলনকারীদের থেকে প্রতিশোধ নেওয়া হবে মর্মে প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

বিভাগের শিক্ষকরা জানান, সে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রশাসনের মাধ্যমে আবেদন করেছিল। পরে আমরা তাকে আসার জন্য নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু আজকে সে কখন এসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, তা বুঝতে পারিনি। পরে প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র উপদেষ্টা ও সমন্বয়কদের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এসেছে বলে মনে করি। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাকে পরীক্ষা দিতে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। এরপরও সে পরীক্ষা দিতে এসেছে। তার আসার পেছনে কারোর ইন্ধন রয়েছে কিনা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে পুলিশের হেফাজতে দিয়েছেন। আমরা জানতে পেরেছি যে সে নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সবুজদেশ/এসইউ