পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি করতে দেব না: মমতা
সবুজদেশ ডেস্কঃ
ভারতের সদ্য পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএবি) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি)বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দিঘায় সাংবাদিক সম্মেলন করে রবি ও সোমবার ‘নো এনআরসি’ আন্দোলনের কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন তিনি। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এ রাজ্যে এনআরসি হবে না। কাউকে কেউ তাড়াতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল-সিএবি, ২০১৯-এ সম্মতি দেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। পার্লামেন্টের দুই কক্ষের অনুমোদনের পর বৃহস্পতিবার রাতে ওই বিলে সম্মতি দিলে তা আইনে পরিণত হয়। ইতোমধ্যে গেজেট আকারে আইনটি কার্যকর করা হয়েছে।
পরদিনই দিঘায় সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, রবিবার ১৫ ডিসেম্বর রাজ্য জুড়ে ব্লকে ব্লকে ‘নো এনআরসি’ আন্দোলন হবে। সব জেলায় মিছিল করবেন দলের কর্মীরা। পর ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় বি আর অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে জমায়েত করবে তৃণমূল।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বলেন, ‘গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ করুন। আমি নিজেও সেই সব আন্দোলনে যোগ দেব। গায়ের জোরে সিএবি পাশ করেছে। কিন্তু বাংলায় এনআরসি করতে দেব না। প্রত্যেক রাজ্যের আলাদা আবেগ আছে, আলাদ বিষয় আছে।’
চলতি বছরের ৩১ আগস্ট অনলাইন ও এনআরসি সেবাকেন্দ্রে প্রকাশিত হয় আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি)। এ থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে বাহরাগোড়ায় এক জনসভায় দেওয়া ভাষণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘আজ আমি আপনাদের বলতে চাই যে ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগেই এনআরসি সারা দেশে প্রয়োগ করা হবে এবং প্রত্যেকে অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত করে এই দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
জবাবে রাজ্যে এনআরসি করতে দেবেন না হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘বিজেপি বাংলার পাপ, দেশের অভিশাপ। আসামে ডিটেনশন ক্যাম্প করছে রাজ্য সরকার। সেখানে তাদের দলের সরকার ছিল বলে করতে পেরেছে। এখানে হতে দেব না।’
বিজেপি সরকার বলছে, নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তেরি করা হবে। ফলে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের প্রমাণ করতে হবে যে তারা ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা, প্রতিবেশি তিন দেশ থেকে সেখানে যাওয়া শরণার্থী নয়। তবে আইনে বর্ণিত অন্য ধর্মাবলম্বী শরণার্থীরা ৫ বছর সেখানে থাকার প্রমাণ দিয়েই নাগরিকত্ব পাবেন।