মোঃ হাবিব ওসমান,(নিজস্য প্রতিনিধি) ঃ ”প্রতিটি গ্রাম হবে শহর” এই স্লোগানকে সামনে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা ইউনিয়নের গাজীর বাজারে ”আলোর ফেরিওয়ালা” কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার সকালে ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উদ্যোগে উপজেলার গাজীর বাজারে প্রধান অতিথি হিসেবে আলোর ফেরিওয়ালা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রানী সাহা, ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিরি জেনারেল ম্যানেজার আলতাফ হোসেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কালীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আব্দুর রব, ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন, কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শিবলী নোমানী, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা সাগর বিশ^াস প্রমূখ।


আলোর ফেরিওয়ালা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এই লক্ষ্য নিয়ে সরকার নির্বাচনী যে ইশতেহার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছে এটা তারই একটা অংশ। অর্থাৎ কোনো লোক দেখানো কাজ এ সরকার করেন না। এজন্যই দেশের সাধারণ জনগণ তাদের উপর আস্থা রেখেছে এবং ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে বিজয়ী করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে দেশের প্রতিটি কোণে পৌঁছে দেয়া হবে বিদ্যুতের আলো। যেমন কথা তেমন কাজ। দেশে বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। নির্মাণ করা হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সম্প্রতি সরকারের পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড নিয়েছে একটি অভিনব উদ্যোগ।
ভ্যান গাড়িতে করে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা যাচ্ছে প্রতিটা এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে। তাদের ভ্যান গাড়িতে থাকছে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করার যাবতীয় সরঞ্জাম। প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামবাসীরা যারা সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতো তারাও এখন এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সেই সংযোগ স্থাপনকারী গাড়িতে থাকছে বৈদ্যুতিক মিটার, তার ও প্রয়োজনীয় যাবতীয় সরঞ্জামাদি। সঙ্গে আছেন দুজন লাইনম্যান ও একজন ওয়ারিং পরিদর্শক।
এখন থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরবেন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন। এলাকার মানুষ যাতে দ্রুত সময়ের ভিতর বিদ্যুৎ সংযোগ পায় এজন্যই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও পুরোনো গ্রাহকদের কোনো সমস্যা থাকলে তারা তা ঠিক করার সুযোগ পাচ্ছে। এই অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছানো পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এই কার্যক্রমের নাম দেয়া হয়েছে ”আলোর ফেরিওয়ালা” পল্লী বিদ্যুৎ দুয়ার মিটারিং কার্যক্রম। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এক তথ্য মতে জানা যায় যে নির্বাচনের জন্য তিনদিন এই কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। নির্বাচনের পর এ কার্যক্রম পুনরায় আবার চালু করা হয়েছে। গ্রামবাসীরা যারা বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে আগ্রহী তারা সদস্য ফি বাবদ ভ্যাটসহ ১১৫ টাকা আর জামানত হিসেবে ৪০০ টাকা (বাণিজ্যিক হলে ৮০০) জমা দিতে হবে। আলোর ফেরিওয়ালাদের কাছে টাকা জমা নেওয়ার রসিদ বই থাকছে, তাঁরা সেখানে বসেই টাকা জমা করছেন। এরপর ওয়্যারিং পরিদর্শক ওয়্যারিং যাচাই করে ঠিক আছে জানালেই সংযোগ দেওয়া হবে। গোটা প্রক্রিয়ায় মাত্র পাঁচ–ছয় মিনিট সময় লাগছে।
বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য গ্রাহককে শহরে আসতে হচ্ছে না, আবেদনের পাঁচ মিনিটেই সংযোগ পাচ্ছেন গ্রাহকরা। রূপকল্প – ২১ ও রূপকল্প -৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দ্রুত প্রন্তিক জনগণের জীবনমান উন্নত হয়েছে।
দেশের প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামে বাড়ানো হচ্ছে নাগরিক সুযোগ সুবিধা। দেশের উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন দেশবাসী। এ কার্যক্রমকে স্বাগত জানান এ এলাকার সাধারন মানুষ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here