ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাইকপাড়া ফুটবল টুর্নামেন্ট: বসুন্দিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন কালীগঞ্জ

Reporter Name

ঝিনাইদহঃ

মাঠের চারপাশ কানায় কানায় পূর্ণ। কোন স্থান যেন শূণ্য নেই। তাই উপায় না পেয়ে দর্শকরা রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে। কারণ আজ পাইকপাড়া আনন্দবাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ছিল।

৮ দলীয় এ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় প্রতিদ্বন্দিতা করে কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমী বনাম বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশ, যশোর।

ঘড়ির কাঁটায় তখন ৩টা বেজে ৪০ মিনিট। রেফারী রবিউল ইসলামের বাঁশির মাধ্যমে খেলা শুরু হয়। খেলা শুরুর প্রথম থেকেই বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশ বেশ চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। কিন্তু কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমীর রক্ষণভাগ সেই চাপ নস্যাৎ করে দেয়। এরপর ১৪ মিনিটের মাথায় বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশের ১০নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় আওরঙ্গকে ডি বক্সের একটু বাইরে অবৈধভাবে বাঁধা দেয় কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমীর রক্ষণভাগের খেলোয়াড় রিমন। রেফারী বাঁশি বাজিয়ে জানালেন এটা ফাইল। বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশের ৭ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় খোকা বাবুর স্পট কিক সামনে দাঁড়ানো মানব প্রাচীরকে কিছু বুঝতে না দিয়েই জালে জড়ায়। এরই সুবাদে এগিয়ে যায় বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশ, যশোর। গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে কালীগঞ্জ। এর কিছুক্ষণ পরই কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমী বসুন্দিয়ার ডি বক্সের সামনে একটি ফ্রি কিক আদায় করে। কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশের অধিনায়ক কায়েসের শট নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নেয় বসুন্দিয়া একাদশের গোলরক্ষক বাবু।

একদিকে বসুন্দিয়াও গোল ব্যবধান বাড়াতে পারে না। অন্যদিকে কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশ গোল শোদ করতে পারে না। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের মধ্য দিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতি থেকে ফিরে বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশের রক্ষণভাগকে বেশ চাপে রাখে কালীগঞ্জ। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারে না। অন্যদিকে বিরতি থেকে ফিরে বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশ যেন কিছুটা খেলার ছন্দ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমী একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। বেশ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর খেলার ৬৪ মিনিটে কালীগঞ্জের ৯নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় পলাশের বাড়ানো বল বসুন্দিয়ার গোলরক্ষক হাত লাগিয়ে সরিয়ে দেয়। সেই বলে পা ছুঁয়ে দেন কালীগঞ্জের ৫নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় নিজাম। গোলরক্ষক বাবু লাফ দিলেও শূন্যে ভেসে বল বসুন্দিয়ার জাল ভেদ করে। খেলায় সমতায় ফেরে কালীগঞ্জ। এরপর যেন কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশ আরো বেশি ছন্দ পেতে শুরু করে। একের পর এক আক্রমণে বসুন্দিয়ার আক্রমণ ভাগ দুর্বল করে তারা। শেষ সময়ে কালীগঞ্জের বদলি খেলোয়াড় আকাশ একটি সুযোগ হাতছাড়া করে।

খেলার নির্ধারিত সময় শেষ হয়। এরপর ট্রাইব্রেকারে ভাগ্য নিশ্চিত হবে দুই দলের। ৫টি করে ট্রাইব্রেকারের মধ্যে কালীগঞ্জ প্রথম দুটি শট গোল করতে ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে বসুন্দিয়া দুটি শটই গোল করে। কিন্তু তৃতীয় শট বসুন্দিয়ার বাইরে যায়। এরপর কালীগঞ্জ আবার গোল করে। পরবর্তী শট বসুন্দিয়া গোল করলেও শেষের শটটি ঠেকিয়ে দেয় কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশের গোলরক্ষক কিতাবুল। নির্ধারিত ৫টি ট্রাইব্রেকারে উভয় দল ৩টি করে গোল করে।

এরপর ডেথ ট্রাইব্রেকারে একটি একটি করে শট দিতে শুরু করে দুই দল। ৮ম শটে বসুন্দিয়ার বল ঠেকিয়ে দেয় কালীগঞ্জের গোলরক্ষক। এরপর কালীগঞ্জের পক্ষে শেষ শটে রনি গোল করলে জয়লাভ করলে চ্যাম্পিয়ন হয় কালীগঞ্জ।

খেলা পরিচালনা করেন রবিউল ইসলাম, মারুফ ও পিকুল। ধারাভাষ্যকার হিসেবে ছিলেন খোরশেদ আলম ও রবিউল ইসলাম।  

সবুজদেশ/সোহাগ/এসএএস      

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:৫২:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯
৪৪১ Time View

পাইকপাড়া ফুটবল টুর্নামেন্ট: বসুন্দিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন কালীগঞ্জ

আপডেট সময় : ০৬:৫২:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯

ঝিনাইদহঃ

মাঠের চারপাশ কানায় কানায় পূর্ণ। কোন স্থান যেন শূণ্য নেই। তাই উপায় না পেয়ে দর্শকরা রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে। কারণ আজ পাইকপাড়া আনন্দবাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ছিল।

৮ দলীয় এ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় প্রতিদ্বন্দিতা করে কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমী বনাম বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশ, যশোর।

ঘড়ির কাঁটায় তখন ৩টা বেজে ৪০ মিনিট। রেফারী রবিউল ইসলামের বাঁশির মাধ্যমে খেলা শুরু হয়। খেলা শুরুর প্রথম থেকেই বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশ বেশ চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। কিন্তু কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমীর রক্ষণভাগ সেই চাপ নস্যাৎ করে দেয়। এরপর ১৪ মিনিটের মাথায় বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশের ১০নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় আওরঙ্গকে ডি বক্সের একটু বাইরে অবৈধভাবে বাঁধা দেয় কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমীর রক্ষণভাগের খেলোয়াড় রিমন। রেফারী বাঁশি বাজিয়ে জানালেন এটা ফাইল। বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশের ৭ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় খোকা বাবুর স্পট কিক সামনে দাঁড়ানো মানব প্রাচীরকে কিছু বুঝতে না দিয়েই জালে জড়ায়। এরই সুবাদে এগিয়ে যায় বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশ, যশোর। গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে কালীগঞ্জ। এর কিছুক্ষণ পরই কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমী বসুন্দিয়ার ডি বক্সের সামনে একটি ফ্রি কিক আদায় করে। কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশের অধিনায়ক কায়েসের শট নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নেয় বসুন্দিয়া একাদশের গোলরক্ষক বাবু।

একদিকে বসুন্দিয়াও গোল ব্যবধান বাড়াতে পারে না। অন্যদিকে কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশ গোল শোদ করতে পারে না। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের মধ্য দিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতি থেকে ফিরে বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশের রক্ষণভাগকে বেশ চাপে রাখে কালীগঞ্জ। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারে না। অন্যদিকে বিরতি থেকে ফিরে বসুন্দিয়া ফুটবল একাদশ যেন কিছুটা খেলার ছন্দ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু কালীগঞ্জ ফুটবল একাডেমী একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। বেশ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর খেলার ৬৪ মিনিটে কালীগঞ্জের ৯নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় পলাশের বাড়ানো বল বসুন্দিয়ার গোলরক্ষক হাত লাগিয়ে সরিয়ে দেয়। সেই বলে পা ছুঁয়ে দেন কালীগঞ্জের ৫নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় নিজাম। গোলরক্ষক বাবু লাফ দিলেও শূন্যে ভেসে বল বসুন্দিয়ার জাল ভেদ করে। খেলায় সমতায় ফেরে কালীগঞ্জ। এরপর যেন কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশ আরো বেশি ছন্দ পেতে শুরু করে। একের পর এক আক্রমণে বসুন্দিয়ার আক্রমণ ভাগ দুর্বল করে তারা। শেষ সময়ে কালীগঞ্জের বদলি খেলোয়াড় আকাশ একটি সুযোগ হাতছাড়া করে।

খেলার নির্ধারিত সময় শেষ হয়। এরপর ট্রাইব্রেকারে ভাগ্য নিশ্চিত হবে দুই দলের। ৫টি করে ট্রাইব্রেকারের মধ্যে কালীগঞ্জ প্রথম দুটি শট গোল করতে ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে বসুন্দিয়া দুটি শটই গোল করে। কিন্তু তৃতীয় শট বসুন্দিয়ার বাইরে যায়। এরপর কালীগঞ্জ আবার গোল করে। পরবর্তী শট বসুন্দিয়া গোল করলেও শেষের শটটি ঠেকিয়ে দেয় কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশের গোলরক্ষক কিতাবুল। নির্ধারিত ৫টি ট্রাইব্রেকারে উভয় দল ৩টি করে গোল করে।

এরপর ডেথ ট্রাইব্রেকারে একটি একটি করে শট দিতে শুরু করে দুই দল। ৮ম শটে বসুন্দিয়ার বল ঠেকিয়ে দেয় কালীগঞ্জের গোলরক্ষক। এরপর কালীগঞ্জের পক্ষে শেষ শটে রনি গোল করলে জয়লাভ করলে চ্যাম্পিয়ন হয় কালীগঞ্জ।

খেলা পরিচালনা করেন রবিউল ইসলাম, মারুফ ও পিকুল। ধারাভাষ্যকার হিসেবে ছিলেন খোরশেদ আলম ও রবিউল ইসলাম।  

সবুজদেশ/সোহাগ/এসএএস